সংক্ষিপ্ত
- মহারাষ্ট্রে গণপিটুনিতে মৃত্যু ২ সাধুর
- কিডনি চোর সন্দেহে মারধর উন্মত্ত জনতার
- গ্রামবাসীদের মারে ৩ জনের মৃত্যু
- পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ
দেশের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে করোনা সংক্রমণের ঘটনা মহারাষ্ট্রে। এর মধ্যেই মহারাষ্ট্র সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে পালঘরের একটি ঘটনা। গত শুক্রবার গড়চিঞ্চোলী গ্রামে ৩ জনকে পিটিয়ে মারে বিক্ষুব্ধ জনতা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এদের মধ্যে ১০১ জনকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: অবেশেষে মিলল গ্রিন সিগন্যাল, বাড়ি ফিরছেন আটকে পড়া ১ লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত শুক্রবার গভীর রাতে গড়চিঞ্চোলী গ্রাম দিয়ে একটি গাড়ি যাওয়ার সময় সেটিকে নিয়ে গুজব রটে। মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ে গাড়িতে রয়েছে ছেলেধরার দল। এঁরা ছেলেধরা এবং শিশুদের শরীরে কিডনি সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গ পাচার করে। এরপরেই গাড়িতে থাকা ৩ জনের উপর শুরু হয় গণপিটুনি। ২ সাধু ও গাড়ির চালককে বেধড়ক মারধর করে গ্রামবাসীরা। এঁদের মধ্যে একজন ছিলেন সত্তোরোর্ধ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাদেরকেও আক্রমণ করে ক্ষিপ্ত জনতা। পাথর-লাঠি-বাঁশ সব নিয়ে শুরু হয়ে আক্রমণ। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও।
আরও পড়ুন: মোদীর পর এবার ইমরানের দিকে সাহায্যের হাত, পাকিস্তানকে ৮.৪ মিলিয়ন ডলার দিলেন ট্রাম্প
ওই তিন ব্যক্তি সুরাটে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। স্থানীয় কাসা পুলিশ থানায় ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং এর পেছনে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় ২০০ জন লোক মিলে ঘিরে ধরেছিল তিনজনকে। জানা গিয়েছে, মৃত তিন ব্যক্তির নাম সুশীলগিরি মহারাজ, নীলেশ তেলগড়ে এবং চিকনে মহারাজ। উন্মত্ত জনতার একাধিক ভাঙচুরের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ঘোষণা করেছেন, এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। নৃশংস এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কোনো দোষী ব্যক্তি ছাড়া পাবেনা।
এদিকে রাজ্যের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মাঝে এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যসরকারকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধী বিজেপি শিবির। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ট্যুইট করে বলেন – "ছবি দেখে যা বোঝা যায়, এই গণপিটুনির ঘটনা অমানবিক এবং নৃশংস। যখন দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন তা আরও উদ্বেগের। আমি রাজ্য সরকারের কাছে এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।"
মূলত তফশিলী জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত পালঘরের গড়চিঞ্চোলী গ্রামের জনসংখ্যা খুবই কম। এই গ্রামে ২০১১-র জনগণনা অনুসারে বসবাস করে ২৪৮টি পরিবার। জনসংখ্যা ১২০৮ জন। যাঁদের মধ্যে ৫৭২ জন পুরুষ, ৬৩৬ জন মহিলা। মোট জনসংখ্যার ৯৯.১৭ শতাংশ তফশিলি জাতি ভুক্ত এবং ০.৮ শতাংশ তফসিলি উপজাতি ভুক্ত। শিক্ষিতের হার মাত্র ৩০.৪২%।