সংক্ষিপ্ত
শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনে এই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন বিকাশ ওয়াকার। ১৮ বছর বয়স্কদের জন্য উপযুক্ত কাউন্সেলিং-এর দাবি জানিয়েছেন মৃতার বাবা। অভিযোগ মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধে।
শ্রদ্ধা ওয়াকারকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য আফতাব পুনেওয়ালাকে ফাঁসিকাঠে ঝোলান উচিত। প্রথমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তেমনই দাবি করলেন মৃত শ্রদ্ধা ওয়াকারের বাবা বিকাশ ওয়াকার। মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি। সময়মত যদি মহারাষ্ট্রের পুলিশ ব্যবস্থা নিত তাহলে তাঁর মেয়ে অকালে মারা যেত না। এখনও পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর বিকাশ ওয়াকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। পাশাপাশি বর্তমান সমাজব্যবস্থা ও বেশ কয়েকটি মোবাইলফোন অ্যাপলিকেশন নিয়েও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায় এজাতীয় মোবাইলফোন অ্যাপলিকেশনেগুলির জন্য বর্তমানে তরুণ তরুণীরা একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
আফতাবের জন্য ফাঁসির সাজা
বিকাশ ওয়াকারের অভিযোগ তাঁর মেয়ে শ্রদ্ধাকে তাঁর লিভইন সঙ্গী আফতাব পুনেওয়ালা প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তারপর তাঁর দেহ ৩৫টি টুকরো করে এখটি ৩০০ মিলিলিটারের ফ্রিজে রেখে দিয়েছে। গত মে মাসে তাঁর মেয়ে শ্রদ্ধা ওয়াকারকে হত্যা করা হয়েছে। শ্রদ্ধার বয়স ছিল মাত্র ২৭ বছর। শ্রদ্ধাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য আফতাবের বিরুদ্ধে যাথাযোগ্য তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আর বলেছেন আফতাবের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির প্রয়োজন। প্রয়োজনে আফতাবকে ফাঁসি দেওয়া হোক। পাশাপাশি আফতাবের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন আফতাবে পরিবারের কোনও সদস্য যদি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তাদেরও উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
শ্রদ্ধা ওয়াকারের বাবা তাঁর মেয়ের অকাল মৃত্যুর জন্য মহারাষ্ট্র পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। বলেছেন মহারাষ্ট্র পুলিশ যদি সঠিক সময় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তাহলে তাহলে শ্রদ্ধা ওয়াকারকে অকালে প্রাণ দিতে হত না। শ্রদ্ধার অভিযোগের তদন্তে দেরী করার জন্য ভাসাই ও নালাসোপারার পাশাপাশি পালঘর জেলায় অবস্থিত তুলিঞ্জ পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালেই তুলিঞ্জ পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল শ্রদ্ধা ওয়াকার। সেখানে বলা হয়েছিল আফতাব পুনেওয়ালা তাঁকে হেনস্থা করছে। প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। তাঁকে ব্ল্যাক মেলও করা হয়েছে। তুলিঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও অভিযোগ বিকাশের। আর তাতেই বিকাশের সাহস বেড়ে যায়। শ্রদ্ধার বাবার আঅভিযোগ বিকাশ তাঁর মেয়েকে একাধিকবার হেনস্থা করেছে। সেই সময় যদি মহারাষ্ট্র পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিত তাহলে শ্রদ্ধাকে খুন করা এতটা সাহজ হত না।
১৮ বছর বয়স
১৮ বছর- যারা সদ্যো যৌবনে পা দিয়েছে তাদের কাউন্সেলিং আর নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তিনি জানিয়েছেন, 'আমার মেয়ে যখন বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল তখন বলেছেন আমি প্রাপ্ত বয়স্ক। আমার নিজের ইচ্ছে মত চলতে পারি। তারপর আর আমি কিছুই বলতে পারিনি।' তিনি আরও জানিয়েছেন বাড়ি ছাড়ার আগে তিনি মেয়েকে আফতাবের সঙ্গে না থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন ' আফতার আমাদের সম্প্রদায়ের নয়। তারসঙ্গে না থাকাই শ্রেয়। ' কিন্তু শ্রদ্ধা সেকথা কানে তোলেনি।
মোবাইল ডেডিং অ্যাপ
মোবাইল ডেটিং অ্যাপলিকেশন নিয়েও বিকাশ ওয়াকারের অভিযোগ রয়েছে। বলেছেন, এজাতীয় অ্যাপলিকেশনগুলি সঠিক নয়। এগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তবে বিকাশ ওয়াকার দিল্লি পুলিশ ও ভাসাই পুলিশের তদন্তে খুশি। তিনি জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত তদন্ত সঠিক পথে চলছে। তিনি বলেছেন তাঁর মেয়েকে বাঁচানো যায়নি। কিন্তু তার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তা সঠিক নয়।
আরও পড়ুনঃ
শ্রদ্ধার রক্তের দাগ ধুতেই কি ৩০০ টাকার অতিরিক্ত জল কিনেছিল আফতাব? জলের বিল নিয়ে তদন্ত দিল্লি পুলিশের
বাংলাদেশের 'আফতাব' আবু বক্কর, শ্রদ্ধার মত সেও তার প্রেমিকাকে খুন করে টুকরো করেছিল দেহ