সংক্ষিপ্ত
- লাদাখ নিয়ে উত্তপ্ত চীন-ভারত সম্পর্ক
- বৈঠকের পাশাপাশি চলছে সামরিক প্রস্তুতিও
- এর মধ্যেই চিনকে আর্থিক দিক থেকে আঘাতের চেষ্টা
- ত্রিফলা দিয়ে বেজিংয়ে বিঁধতে চাইছে দিল্লি
লাদাখ নিয়ে উত্তপ্ত চিন-ভারত সম্পর্ক। কূটনৈতিক ও সামরিক বৈঠক চললেও যুদ্ধ প্রস্তুতি জারি রেখেছে দুই প্রতিবেশী দেশই। এর পাশাপাশি দুই দেশ নানা কায়দায় চাইছে একে অপরকে শিক্ষা দিতে। তার অংশ হিসাবেই চিনের সাথে পণ্য ও পরিষেবা নিষিদ্ধ করেছে ভারত। বাতিল করা হয়েছে একের পর এক বরাত। পাশাপাশি চলছে আমদানিতে কড়াকড়ি। আপাতত এই ত্রিকোণ কৌশলেই বিদ্ধ করতে বেজিংকে বার্তা দিতে চাইছে নয়াদিল্লি।
গত সোমবারই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক টিক সক সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে এদেশে। লাদাখ সীমান্ত সমস্যার আবহে যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের পারদকে আরও চড়িয়েছে। তার মধ্যেই বিতর্ক আরও উস্কে চিনা সোশ্যাল মিডিয়া উইবো ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যাতে স্পষ্ট ইজ্ঞিত, সর্বোতভাবেই এবার চিনকে প্রত্যাখান করে এগোতে চাইছে ভারত।
আরও পড়ুন: ভারতের উপর চাপ তৈরি করতে নয়া কৌশল, এবার পাকিস্তানের সীমান্তকে ব্যবহার করছে চিন
সীমান্ত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আবহে চিনকে দেওয়া একের পর এক বরাত বাতিল করেছে ভারতীয় রেল সহ একাধিক সংস্থা। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী হুঙ্কার দিয়েছেন , ভারতের কোনও সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দরপত্রই দিতে পারবে না চিনা সংস্থা। এমনকি এ দেশের কোনও সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেও নয়। নতুন প্রকল্পে শামিল হতে দেওয়ার তো প্রশ্নই নেই, প্রয়োজনে খতিয়ে দেখা হবে পুরনো বরাতও।
জাতির উদ্দেশ ভাষণে আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সুর শোনা যাচ্ছে তার ক্যাবিনেটের মন্ত্রীদের গলাতেও। তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আবার জোড় দিচ্ছেন উদ্ভাবনী কাজের অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) তৈরির। চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পরে যা তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর দাবি, বিদেশি অ্যাপের উপরে নির্ভরতা বন্ধ হওয়া জরুরি। বরং ওই সমস্ত অ্যাপ সরে যাওয়ার সুযোগে ফাঁকা হওয়া বাজার ধরতে এ দেশের স্টার্ট-আপগুলিকে এগিয়ে আসতে বলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত, আমেরিকাতেও উঠল একই দাবি
ইতিমধ্যে ভারতীয় রেল ও টেলিকম দফতর চিনা সংস্থার সঙ্গে বরাত বাতিল করেছে। চিনের বিরুদ্ধে মোদী সরকারের এই আক্রমণাত্মক আর্থিক নীতিতে দেশীয় শিল্পমহলের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। তবে আশঙ্কার চোরা স্রোতও বইতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, শুধু দেশীয় সংস্থাকে দিয়ে হাইওয়ে তৈরি করাতে গিয়ে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ এবং গুণমানের সঙ্গে আপোস করতে হবে না তো, বরাত পাবে না তো শুধু গুটিকয় সংস্থা। পাশাপাশি এদেশে বহু বড় সংস্থাতেই চিনা সংস্থার বিপুল লগ্নি রয়েছে। চিন প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটলে, হিতে বিপরীত হবে নাতো সেই প্রশ্নও উঠছে।
বিভিন্ন ভারী যন্ত্র, গাড়ি ও বৈদ্যুতিন পণ্যের যন্ত্রাংশ, বস্ত্র শিল্প ও ওষুধের কাঁচামাল ঘিরেও এই আশঙ্কার মেঘ দেখা যাচ্ছে। কারণ, চিন চড়া শুল্ক চাপালে দেশীয় শিল্পরেই সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।