সংক্ষিপ্ত
ঘূর্ণিঝড় তাউতের থাবায় ডুবেছে বার্জ পি ৩০৫
কিন্তু সাইক্লোনের সতর্কতা তারা অনেক আগেই পেয়েছিল
লাইফ র্যাফ্ট-এও 'ছিল ফুটো
বিস্ফোরক দাবি ডুবে যাওয়া জাহাজেরচিফ ইঞ্জিনিয়ারের
ঘূর্ণিঝড় তাউতের থাবায় পি ৩০৫ (P 305) বার্জ-এর ডুবে যাওয়ার ঘটনায়, বুধবার রাতে আরও ১১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌসেনার জওয়ানরা। ফলে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৭। এখনও বার্জটির আরও ৪৭ জন সদস্য নিখোঁজ। কিন্তু, কেন ডুবে গেল জাহাজটি? ডুবে যাওয়া বার্জটির, জীবিত সদস্যরা জানাচ্ছেন এই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটত না যদি ক্যাপ্টেন ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দিতেন আর 'লাইফ র্যাফ্ট'গুলিতে যদি ফুঁটো না থাকত।
ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা এখনও পর্যন্ত ১৮৮ জনকে। তাঁদেরই একজন বার্জের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রহমান শেখ। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে তাঁকে উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে, ক্যাপ্টেন এবং তাঁদের সংস্থার গণনা ভুল ছিল। চিফ ইঞ্জিনিয়ার রহমান শেখের দাবি ঘূর্ণিঝড়টি আসার এক সপ্তাহ আগেই তাঁরা সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন। আশেপাশের থাকা বেশ কয়েকটি জাহাজ সমুদ্র ছেড়ে নিকটবর্তী বন্দরগুলিতে চলে গিয়েছিল। রহমান শেখ, ক্যাপ্টেন বলবিন্দর সিংকেও বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু, সেই কথায় পাত্তা না দিয়ে ক্যাপ্টেন জানিয়েছিলেন, ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের বেশি জোরে বাতাস বইবার সম্ভাবনা নেই। আর ঘূর্ণিঝড়টা এক-দুই ঘন্টার মধ্যে মুম্বই পার করে চলে যাবে।
বাস্তবে অবশ্য তা ঘটেনি। রহমান শেখের দাবি, অন্তত ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়েছিল তাদের জাহাজটি। বাতাসের ধাক্কায় পাঁচটি নোঙ্গর ভেঙে গিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের সামনে তারা দাঁড়াতেই পারেনি। বাতাসের ধাক্কায় বার্জটি গিয়ে একটি তেলের রিগ-এ ধাক্কা মারে। সংঘর্ষে বার্জের গায়ে বড় গর্ত হয়ে যায়। তা দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। জাহাজের সদস্যরা ঠিক করেছিলেন, বন্দরের দিকে তাঁরা লাইফ ব়্যাফ্টগুলি নামাবেন। কিন্তু, এই ক্ষেত্রেও সমস্যা ছিল। মাত্র দুটি লাইফ ব়্যাফ্ট ছাড়া বাকি ১৪টিই ছিল ফুটো। জাহাজটির অন্য প্রান্তে, স্টারবোর্ডের দিকে আরও ১৬টি লাইফ র্যাফ্ট থাকলেও, সেগুলি নিতে যাওয়ার মতো সাহস হয়নি কারোর। কারণ সেই সময় ওই দিকে তীব্র বেগে বাতাস বইছিল। বিশাল বিশাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে বার্জের গায়ে।
আরও পড়ুন - 'আমফান হয়ে উঠতেই পারে', এবার ঘূর্ণিঝড় যশ-কে নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিল IMD
আরও পড়ুন - চিনে ফের রহস্যময় ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক - কোথাও ভূমিকম্প নই, তাও কাঁপছে গগনচুম্বী বহুতল, দেখুন
আরও পড়ুন - সাংবাদিকের গলা টিপে ধরলেন স্বাস্থ্যকর্তা, দুর্নীতি ফাঁস করতেই গ্রেফতার - উত্তাল ঢাকা
এরপর, যাদের গায়ে লাইফ জ্যাকেট ছিল, তারা দলবদ্ধভাবে জলে লাফ দিয়েছিল। ফ্লোটিং রিং ধরে তারা জলে ভাসছিল। তাদের সামনেই সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ বার্জটি ডুবে যায়। রহমান শেখের হাঁটুতে চোট লেগেছে। তাঁর মতো আহতদের মুম্বইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। রহমান শেখের মতে, এই ঘটনায় বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে দীর্ঘক্ষণ জলে থাকার কারণে এবং আতঙ্ক ও শকে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাছে নৌসেনা। তাদের মধ্যে রয়েছেন স্বয়ং ক্যাপ্টেন বলবিন্দর সিং-ও। তবে নিখোঁজদের আর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম বলে জানিয়েছেন নৌসেনার এক কর্মকর্তা।