সংক্ষিপ্ত
২৬ বছর বয়সী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট আনা সেবাস্তিয়ান পেরাইলের মর্মান্তিক মৃত্যু আবারও কর্মক্ষেত্রে চাপের মারাত্মক পরিণতিকে সবার সামনে তুলে ধরেছে।
মাত্র ২৬ বছর বয়সী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট আনা সেবাস্তিয়ান পেরাইলের মর্মান্তিক মৃত্যু আবারও কর্মক্ষেত্রে চাপের মারাত্মক পরিণতিকে সবার সামনে তুলে ধরেছে। আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইঅ্যান্ডওয়াই) ইন্ডিয়ার কর্মী আনা, তাঁর পরিবারের দাবি অনুসারে, অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে মারা যান। তাঁর আকস্মিক মৃত্যু অতিরিক্ত কাজের চাপের প্রভাব, বিশেষ করে তরুণ পেশাদারদের উপর আলোচনার সূত্রপাত করেছে।
গত ১৯ জুলাই, চরম ক্লান্তি ও অবসাদের অভিযোগ করে আনাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসার পরেও, ২০ জুলাই তিনি মারা যান। যা তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং বিস্তৃত পেশাদার সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র শোকের ছায়া ফেলে। মা অনিতা অগাস্টিন, ইওয়াই ইন্ডিয়ার প্রধান রাজীব মেমানির উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতে, তিনি আনার উপর যে তীব্র কাজের চাপ ছিল তা নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেন। সেই চিঠিটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে সংস্থাটিকে তাদের কর্মীদের উপর চাপের দাবির মানসিক ও শারীরিক চাপ উপেক্ষা করার অভিযোগ করা হয়।
অনিতা আরও অভিযোগ করেন যে, তাঁর মেয়ের শেষকৃত্যে সংস্থার কেউ যোগদান করেনি, যা তিনি অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে বর্ণনা করেছেন। জবাবে, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শোভা করন্দলজে জানিয়েছেন, আনা সেবাস্তিয়ানের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত করা হবে।
দুর্ভাগ্যবশত, আনা সেবাস্তিয়ানের ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। সমগ্র ভারতে, কাজের চাপ একটি ক্রমবর্ধমান সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে, যা বিভিন্ন শিল্পকে প্রভাবিত করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে কর্মীরা অসহনীয় কাজের চাপের কারণে তাদের জীবন শেষ করে দিয়েছেন অথবা খারাপ কোনও স্বাস্থ্যগত পরিণতি ভোগ করেছেন।
এ বছরের মে মাসে, মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনের একটি বেসরকারী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজার হিমাংশু তাঁর বোনকে কর্মক্ষেত্রে যে তীব্র চাপের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তা জানানোর পর আত্মহ্যার পথ বেছে নেন। বিষ খাওয়ার আগে শেষ ফোনে তিনি বলেছিলেন, “আমি আর নিতে পারছি না, আমি আর বাড়ি ফিরব না।”
অগাস্টে, উত্তরপ্রদেশের একজন পোস্টমাস্টার ফাঁসিতে ঝুঁকে আত্মহত্যা করেন। তিনি মাত্র ছয় মাস ধরে চাকরিতে ছিলেন কিন্তু তাঁকে যে পরিমাণ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে তিনি হতাশ বোধ করছিলেন বলে জানা গেছে।
গত বছর আগস্টে, তেলেঙ্গানার স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (এসবিআই) ৩৫ বছর বয়সী ম্যানেজার বানোথ সুরেশ কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁর পরিবার তার মৃত্যুর জন্য অতিরিক্ত কাজের চাপকে দায়ী করে।
তাই চাপ মোকাবেলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনিয়ন্ত্রিত চাপ মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ের উপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ডাঃ গোপীনাথ জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য চাপ কমাতে সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
আনা সেবাস্তিয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং তাঁর মতো অন্যান্য ঘটনাগুলি ভারতে কাজের চাপের ক্রমবর্ধমান সমস্যাটি মোকাবেলা করার জরুরি প্রয়োজনের দিকে ইঙ্গিত দেয়। এই মৃত্যুর তদন্ত চলার সাথে সাথে, এটা স্পষ্ট যে ভবিষ্যতে ট্র্যাজেডি রোধ করার জন্য বৃহত্তর সচেতনতা, পাশাপাশি কাজের সময় এবং কাজের চাপ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।