সংক্ষিপ্ত
ত্রিপুরায় তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের উপর খুনের অভিযোগ এনে তাঁকে গেরেফতার করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। মহিলা থানায় দুষ্কৃতিদের প্রবেশ নিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। অন্যদিকে ত্রিপুরা থেকে পালানো মাফিয়াদের বাংলায় ঠাঁই দিয়েছেন বাংলার শাসক দল বলে বঙ্গ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব।
রবিবার থেকেই উত্তপ্ত হয়ে আছে ত্রিপুরা (Tripura) রাজ্য। সেরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই রাজ্যের রূপ নিতে শুরু করেছে অন্য চেহারা। রবিবার সকালে হঠাৎই তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের হোটেলে হানা দেয় ত্রিপুরা রাজ্য পুলিশ। তৃণমূল (TMC) সূত্রের দাবি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় পুলিশ স্টেশনেও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু কী বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তা জানান হয়নি পুলিশের তরফ থেকে। যদিও পরে তাঁকে পরে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের ধারা সহ একাধিক ধারায় মামলা ও করা হয় ত্রিপুরা পুলিশের তরফে। পুলিশ সূত্রের দাবি, তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh) ত্রিপুরায় অশান্তি এবং হিংসা- বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আর সেই কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পর থেকে তৃণমূল- বিজেপির অন্তর্কলহ চরম সীমায় উঠেছে। এবার পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকে এক হাত নিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব (Tripura CM Biplab Deb)।
বিপ্লব দেবের (Biplab Deb) কথায়, 'ত্রিপুরা থেকে তিন জন ড্রাগ মাফিয়া (Drug Mafias) পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের তরফ থেকে সেই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে (পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ) যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু, বাংলার পুলিশ আধিকারিকেরা কোনও সহযোগিতা করেনি। আমাদের রাজ্যের পুলিশ যথাযথ উপায়ে অপরাধীদের দমন করেছে। সেই কারণেই ড্রাগ মাফিয়ারা এখন এই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলায় আশ্রয় নিয়েছে। সেখানকার শাসক দলের নেতারা তাদের আশ্রয় দিয়েছেন।\
আরও পড়ুন- Saayoni Ghosh : গ্রেফতার সায়নী ঘোষ, হেলমেট পরে তাণ্ডব 'বিজেপি'-র, উত্তাল ত্রিপুরা
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি (Saayoni Ghosh Arrest) নিয়ে রীতিমত উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। গণতন্ত্রিক অধিকারের দাবিতে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। ইতিমধ্যে রবিবার ত্রিপুরা (Tripura) থেকেই বিজেপির উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এদিন তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, 'যে গণতন্ত্র ত্রিপুরা আমাদের শেখাচ্ছে আমরা এই রাজ্য থেকে বাংলায় ফায়ার গিয়ে আমাদের নেত্রীকে বলবো সেই একই গণতান্ত্রিক অধিকার পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিকে ফিরিয়ে দিতে।'
এখানেই শেষ নয়, বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদের জানাতে আগরতলার মহিলা থানায় গিয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এবং অন্যান্য দলীয় কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ তাঁরা থানায় উপস্থিত থাকা কালীন তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়। এমন কি কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টির অভিযোগ ও তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মহিলা থানায় মুখে কাপড় বেঁধে দুষ্কৃতিরা প্রবেশের চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। এরপরেই ত্রিপুরা পুলিশের (Tripura Police) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন তৃণমূলের নেতারা।
আরও পড়ুন- Abhinandan Varthaman: অভিনন্দন বর্তমানকে 'বীরচক্র' দিয়ে সম্মানিত করলেন রাষ্ট্রপতি, দেখুন
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা দেবাংশু ঘোষ (Debangshu Ghosh) একটি টুইটে সরাসরি বিঁধেছেন ত্রিপুরার বিজেপি (BJP) নেতৃত্বকে। দেবাংশু (Debangshu Ghosh) টুইটে লেখেন, 'বিজেপির গুন্ডারা থানায় ঢুকে তৃণমূলের সাংসদ, নেতা, নেত্রীদের মারধর করছেন। প্রধান কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে, এমন কি সেখানে উপস্থিত বয়স্ক নেতাদের মারধর করা হয়েছে। ত্রিপুরা জ্বলছে।' একইসঙ্গে গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে নিজের ক্রোধ প্রকাশ করেছেন দেবাংশু, তাঁর মতে ত্রিপুরার (Tripura) এই কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের জাতীয় গণমাধ্যম (National Media) নীরবতা পালন করছে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে এবার টুইটারে সরব হয়েছেন রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। সোশ্যাল মিডিয়ায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে (Biplab Kumar Deb) একহাত নিলেন তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)। টুইটারে রাজ লেখেন, 'খুনের চেষ্টার অভিযোগে যুব তৃণমূলের সভাপতি সায়নী ঘোষের এই গ্রেপ্তারি ইঙ্গিত দিচ্ছে কাপুরুষ মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন আর ত্রিপুরাতেও খেলা হবে।'