Saarc News: সার্ক বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন গোষ্ঠী গড়তে চাইছে চিন! সঙ্গী বাংলাদেশ-পাকিস্তান। বিশদে জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন…
Saarc News: ভারতকে প্যাঁচে ফেলতে চিনের নতুন কৌশল! সঙ্গী ইসলামাবাদ আর বাংলাদেশ। জানা গিয়েছে, সার্কের পরিবর্তে এবার দক্ষিণ এসিয়ায় একটি নতুন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে চিন ও পাকিস্তান। দলে বাংলাদেশকে টানারও চেষ্টা করছে এই দুই দেশ। এই বিষয়ে পাক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, যে, বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার ভারত-বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান নিয়ে তৈরি 'সার্ক' বর্তমানে প্রায় অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নিস্ক্রিয় এই গোষ্ঠীর পরিবর্তে লাল চিন চাইছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে নতুন একটি গোষ্ঠী তৈরি করতে।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি চিনের কুনমিঙে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। যেখানে উপস্থিত ছিল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চিন। মনে করা হচ্ছে ওই বৈঠক থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, কুনমিঙের এই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান সার্কভুক্ত দেশগুলিকেও এই নতুন গোষ্ঠীতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে এই ধরনের কোনও বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি আরও জানান, বেজিংয়ে কোনও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি। বেজিং আর ইসলামাবাদের মধ্যে নতুন জোট নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি। এই বিষয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ''আমরা কোনও জোট তৈরি করছি না।'' সম্প্রতি চীনের কুনমিং-এ অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক থেকে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেখানে চিন, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান অংশগ্রহণ করে বলে খবর। এই বৈঠকটি মে মাসে অনুষ্ঠিত অনুরূপ চিন-পাকিস্তান-আফগানিস্তান ত্রিপক্ষীয় বৈঠকেরই ধারাবাহিকতা। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) সম্প্রসারণ এবং তালিবান-শাসিত ইসলামিক আমিরাত-এর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা।
অন্যদিকে, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (SAARC)-এর প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তানের যোগদান একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঢাকায় সার্ক সনদ গ্রহণের মাধ্যমে এই সংস্থাটি গঠিত হয়েছিল। এর প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা ছিল সাত। পরবর্তীতে, ২০০৭ সালে আফগানিস্তান এই গোষ্ঠীতে যোগ দেয়, যা সার্কের ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক পরিসরকে আরও বিস্তৃত করে।
২০১৪ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের পর থেকে সার্কভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতাদের আর কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি। তবে, ২০২০ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। তিনি কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিতে সার্ক দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে প্রথম ভার্চুয়াল সম্মেলন করেন। এই তহবিলে ভারত তার পক্ষ থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
এর আগে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে বছর উরি-তে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ১৭ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পর ভারত এই সম্মেলন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদত ছিল বলে ভারত অভিযোগ করে।
ভারতের পথ অনুসরণ করে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভুটানও সম্মেলন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। তারা সন্ত্রাসবাদ এবং আঞ্চলিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানায়। এর ফলে, ইসলামাবাদ সম্মেলন বাতিল হয়ে যায় এবং তারপর থেকে আর কোনও নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। এই ঘটনা সার্কের কার্যকারিতা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ফলে এখনও পর্যন্ত নিস্ক্রিয়ই হয়ে রয়েছে সার্ক।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


