সংক্ষিপ্ত

বামপন্থী নেতা-কর্মীরা বিলাসবহুল জীবনযাপনের পরিবর্তে সাধারণ জীবনযাপন করবেন এটাই অলিখিত নিয়ম। এর বিচ্যুতি হলে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই নয়, বামপন্থী দলের মধ্যেও প্রশ্ন ওঠে।

কয়েক মাস আগেই বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন কলকাতার সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ। তাঁর গাড়ি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক হয়। এবার একইরকম ঘটনা দেখা গেল বাম শাসিত কেরালায়। মিনি কুপার-সহ একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি কেনা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন সিপিআইএম-এর শ্রমিক সংগঠন সিটু নেতা পি কে অনিলকুমার। তিনি যে গাড়িগুলি কিনেছেন, তার মধ্যে শুধু মিনি কুপারেরই দাম শুরু হচ্ছে ৪১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থেকে। অন্য একটি গাড়ির দামও কাছাকাছি। তৃতীয় গাড়িটিও বিলাসবহুল। অনিলকুমারের দাবি, তাঁর স্ত্রী ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে কর্মরত। তিনিই বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন। কিন্তু এই যুক্তিতে কান দিচ্ছে না দল। এশিয়ানেট নিউজ এই গাড়ি কেনার খবর প্রথমবার প্রকাশ্যে আনার পর সিপিআইএম-এর পক্ষ থেকে দলের অভ্যন্তরে তদন্ত করা হয়। এরপর অনিলকুমারের সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেরালা রাজ্য সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন জানিয়েছেন, 'পি কে অনিলকুমারকে আর আমাদের দলের সদস্য হিসেবে রাখা হবে কি না, সেটা ভেবে দেখা দরকার।'

অনিলকুমারের পাশাপাশি বিতর্কে জড়িয়েছেন কেরালার আরও এক সিপিআইএম নেতা তথা বিধায়ক পিভি শ্রীনিজিন। তিনি পড়ুয়াদের খেলার মাঠে যেতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। বিধায়কের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সিপিআইএম। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ছবি পোস্ট করেন অনিলকুমার। এরপরেই শুরু হয় বিতর্ক। সিপিআইএম দলের নিয়ম অনুযায়ী, ১০ হাজার টাকা বেশি দাম দিয়ে কিছু কিনতে হলে দলকে আগাম জানাতে হয়। কিন্তু অনিলকুমার সেসব কিছুই করেননি। সেই কারণেই ক্ষুব্ধ সিপিআইএম কর্মী-সমর্থকরা। অনিলকুমারের জীবনযাপন বিলাসবহুল। কোচির পানামাপল্লি নগরে তাঁর ৪,০০০ স্কোয়্যার ফুটের বাসভবন রয়েছে। তাঁর মিনি কুপার ছাড়াও একটি টয়োটা ক্রেস্টা লিমিটেড এডিশন এবং একটি টয়োটা ফরচুনার গাড়ি রয়েছে। 

কুন্নাথুনাডুর সিপিআইএম বিধায়ক শ্রীনিজিনেরও তীব্র সমালোচনা করেছে দলের রাজ্য কমিটি। এর্নাকুলাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে দল। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে শ্রীনিজিনকে বলা হয়েছে, তিনি শুধু বিধায়ক হিসেবে কাজ চালিয়ে যান। ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব পালন করতে হবে না তাঁকে।

আইএসএলএল-এর দল কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র পক্ষ থেকে কোচির পানামাপল্লি নগরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাকাডেমির মাঠে ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়। সেই সময় সিপিআইএম বিধায়ক ফুটবলপ্রেমীদের গেট বন্ধ করে দিতে বলেন। তিনি দাবি করেন, কয়েক মাস ধরে ওই মাঠ ব্যবহারের জন্য টাকা দেয়নি কেরালা ব্লাস্টার্স ম্যানেজমেন্ট। সেই কারণেই তাদের মাঠে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন কেরালা ব্লাস্টার্স সমর্থকরা। এরপরেই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল সিপিআইএম।

আরও পড়ুন-

মনোনয়ন পত্র জমা নিয়ে ফের উত্তপ্ত নানুর, সিপিআইএম কর্মীদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

নদিয়ায় বড় সাফল্য বামেদের, তেহট্টের সমবায় সমিতির নির্বাচনে ৪৯ আসন পেল সিপিআইএম

অঘোরে ঘুমিয়ে বাম, রাজ্য সম্মেলনে তাত্ত্বিক আলোচনার মাঝেই ঘুমিয়ে পড়লেন সিপিআইএম নেতারা