সংক্ষিপ্ত
ত্রিপুরায় মা-সহ পরিবারের চার সদস্যকে খুন করল ১৫ বছরের এক কিশোর। ছেলেটি ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখতে ভালবাসত। নেশাগ্রস্ত ছিল বলেও অভিযোগ।
পরিবারের চার সদস্যকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার মাত্র ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে। শনিবার মধ্যরাতে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে কামালপুরের দুরাই শিববাড়ি এলাকায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে। ছেলেটি তাঁর মা, দাদু, বোন আর এক প্রতিবেশীকে হত্যা করেছে।
পুলিশের দাবি
পুলিশ জানিয়েছে নিহতে হয়েছে মূল অভিযুক্তের ৭০ বছর বয়সী দাদু বাদল দেবনাথ, ৪০ বছর বয়সী মা সুমিতা দেবনাথ, ১০ বছরের ছোট্ট বোন সুপর্ণা দেবনাথ আর প্রতিবেশী ৪৫ বছরের রেখা দেবনাথ। রেখা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। রুটিন খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বিকেলের দিতে দেবনাথদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। রেখা গিয়ে পড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁকেও হত্যা করে নাবালক ছেলেটি।
অভিযুক্ত সুপ্রিয় দেবনাথ
পুলিশ জানিয়েছেন মূল অভিযুক্ত সুপ্রিয় দেবনাথ, বয়স মাত্র ১৫। প্রাথমিক তদন্তে সে তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তবে সুপ্রিয় একাহাতে একগুলি খুন একসঙ্গে করল কী করে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের মধ্যে। সেই জন্য গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরিন্সিক দল।
অভিযুক্তের বাবার দাবি
অভিযুক্তের বাবা হারাধন দেবনাথ। পেশায় গাড়ির চালক। শনিবার রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। গোটা বাড়ি অন্ধকার। এই অবস্থায় প্রতিবেশীদের নিয়ে তিনি ঘরে ঢোকেন। তারপর একে একে মৃতদেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ উদ্ধার করে মৃতদেহ। তাঁর ছেলে যে সেই সময় নিখোঁজ ছিল তাও জানিয়েছেন তিনি।
তদন্তের শুরু
প্রথমেই নিখোঁজ সুপ্রিয়র খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কারণ পরিবারের সদস্যদের দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেও সুপ্রিয় নিখোঁজয় থাকায় প্রথম সন্দেহ গিয়ে পড়ে তার ওপর। রবিবার ভোরবেলা হালাহালি বাজার থেকেই ধরা পড়ে সুপ্রিয়। প্রাথমিক জেরায় সুপ্রিয় স্বীকার করে নিয়েছে সেই হত্যা করেছে তার পরিবারের সদস্যদের।
নেশাগ্রস্ত ও অপরাধমূলক সিরিয়াল দেখতে অভ্যস্ত সুপ্রিয়
সুপ্রিয় বাবা হারাধান দেবনাথ জানিয়েছে তার ছেলে বর্তমানে নেশাগ্রস্ত। বাড়িতে বসেই দিনরাত ড্রাগস নেয়। নিজের বন্ধুবান্ধবদের নেতার সামগ্রী সংগ্রহ করত। টাকার জন্য বাড়িতে অশান্তি করত। ছেলের কারণে তাঁদের পরিবারে নিত্যদিন অশান্তি চলত। তিনি আরও জানিয়েছেন টিভিতে দিনরাত অপরাধমূলক সিরিয়াল দেখতে। ছেলের পছন্দের তালিকায় ছিল ক্রাইম পেট্রোল। যতবার এই সিরিয়াল টেলিকাস্ট হত ততবারই দেখত। কিন্তু লকডাউনের আগে এমনটা ছিল না সুপ্রিয়। পড়াশুনার পাশাপাশি সংসারের কাজে সে তার মাকেও সাহায্য করত। লকডাউনই বদলে দিয়েছে সুপ্রিয়। তেমনই জানিয়েছেন তাঁর বাবা।
আরও পডুনঃ
কবে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে? বড় ইঙ্গিত দিলেন নির্মলা সীতারমণ
মন্দির নিয়ে বচসার মধ্যেই গুলি হিন্দুত্ববাদী দক্ষিণপন্থী নেতাকে, সুধীর সুরির মৃত্যুতে উত্তাল অমৃতসর