সংক্ষিপ্ত

প্রেম করে মুম্বই থেকে দিল্লিতে নিয়ে এসে প্রেমিককা খুন। দেহ ৩৫টি টুকরো করে রাতের বেলা জঙ্গলে ফেলত প্রেমিক। নৃশংস খুনের পর্দা ফাঁস করল দিল্লি পুলিশ।

 

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর্দাফাঁস করল দিল্লি পুলিশ। প্রেমিকাকে হত্যা করে দেহ ছিন্নভিন্ন করে গত ১৮ দিন ধরে জঙ্গলে ফেরছিল প্রেমিক। প্রমাণ লোপাটের জন্য এই নৃশংশপন্থা নিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে খুনি প্রেমিককে। তবে এই ঘটনার সূত্রপাত কিন্তু মুম্বইতে।

২৮ বছরের শ্রদ্ধা ওয়াকার মুম্বইয়ের বাসিন্দা। সেখানেই একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতেন। সেখানেই কাজ করতেন আমির পুনাওয়ালা। একই সংস্থার কাজের সময়ই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তারপর শ্রদ্ধা মুম্বইয়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আমিন পুনাওয়ালার সঙ্গে। কিন্তু তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি তাদের পরিবার। সেই সময়ই আমিন আর শ্রদ্ধা দুজনেই নিজের বাবা-মা আর পরিবার ছেড়ে চলে আসেন দিল্লি। আমিন আর শ্রদ্ধা লিভ-ইন পাটনার হিসেবে একই সঙ্গে থাকতে শুরু করেন দিল্লির মেহরাউলির একটি ফ্ল্যাটে।

পুলিশ জানিয়েছে আমিন আর শ্রদ্ধা একই সঙ্গে থাকতে শুরু করে। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কের ছন্দপতন হয় গত ১৮ মে। ওই দিন শ্রদ্ধা আর আমিনের মধ্যে তুলুম ঝগড়া হয়। সেই সময়ই শ্রদ্ধাকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আমিন। তারপর ফ্ল্যাটেই একটি ৩০০ লিটারের রেফ্রিজারেটার কিনে আসেন। নিহত শ্রদ্ধার দেহ টুকটো টুকরো করে কেটে ফেল আমিন। সেই দেহ রাখে ফ্রিজারে। পুলিশ জানিয়েছে শ্রদ্ধার দেহের ৩৫টি টুকরো করেছিল আমিন। সেই টুকরোগুলি ফ্রিজে যত্ন করে রেখে দেয় প্রমাণ লোপাটের জন্য। তারপর একা একাই শ্রদ্ধার দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে আমিন। দেহের টুকরো গুলি একে এন মেহরাউলির জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসে। টানা ১৮ দিন ধরে দেহগুলি ফেলেছিল বলেও পুলিশের দাবি। রোজ রাত ২টোর সময় গোটা মেহরাউলি যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখনই আমিন শ্রদ্ধা দেহের অংশগুলি লোপাট করার জন্য একে একে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসত।

যাইহোক শ্রদ্ধার ফোন মে মাস থেকেই বন্ধ ছিল। তাতেই সন্দেহ হয় তার ভাইয়ের। শ্রদ্ধার ভাই পরিবারের মধ্যে একজন যে দিদির সঙ্গে টানা সম্পর্ক রেখে গিয়েছিল। দিদির ফোন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকাতেই তার সন্দেহ হয়। কারণ যে জানতে দিদির লিভ - ইন পাটনার আমিন শ্রদ্ধাকে মারধর করত। শ্রদ্ধার ভাইই পরিবারের সদস্যদের সব কথা খুলে বলে। সবশুনে গত ৪ নভেম্বর শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদনওয়াকার মেয়েকে দেখতে বা খোঁজ খবর নিতে দিল্লিতে আসেন। কিন্তু মেহরাউলির যে ফ্ল্যাটের ঠিকানা তার কাছে ছিল সেখানে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। তারপরই তিনি দেরি না করে পুলিশের দ্বারস্থ হন। মেহরাউলি পুলিশে শ্রদ্ধার নিখোঁজ এমন ডায়েরি করেন।

তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে আমিন পুনাওয়ালার ওপর। শনিবার পুলিশ আমিনকে গ্রেফতার করেব। জেরার সময়ই আমিন জানিয়েছিল তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। তারপরই পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে।

আরও জেরার পর খুনের কথা স্বীকার করে নেয় আমিন পুনাওয়ালা। জানিয়েছে পুরো ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু দেহাংশা। যেগুলি ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য পাঠান হয়েছে। খুনের অস্ত্র হিসেবে যে ছুরি ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ছুরিটি কোনও একজন প্রশিক্ষিত শেফের বলেও পুলিশের অনুমান। আর সেই কারণে সেই শেফের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। পুলিশের অনুমান আমিন একা নয়- শ্রদ্ধাকে খুনের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িয়ে রয়েছে। তাই ঘটনার আরও তদন্তের প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ

হিমাচল প্রদেশে রেকর্ড ভোট, পাহাড়ি রাজ্যে গণনার কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে

DNA তত্ত্ব ফিরিয়ে আনতে মরিয়া RSS, ইন্দ্রেশ কুমার বললেন ৯৯ শতাংশ ভারতীয় হিন্দুস্তানি

রবীন্দ্র জাদেজার স্ত্রী রিভাবার বিধায়ক হওয়ার পথে কাঁটা ননদ, জামনগড় কেন্দ্রের প্রচারের আকর্ষণই পারিবারিক বিবাদ