সংক্ষিপ্ত

দিল্লিতে কেজরিওয়ালকে জিতিয়ে এনেছেন প্রশান্ত কিশোর।

তাঁর একটি পরামর্শেই নাকি দারুণ কাজ হয়েছে।

এবার তাঁর সামনে বাংলা ও তামিলের চ্যালেঞ্জ।

পিকের ওষুধে কি কাজ দেবে এই দুই রাজ্যে?

 

মঙ্গলবার একটা কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর-এর সামনে আরও দুটি কাজ বাকি, যা এদিন আম আদমি পার্টি-কে দিল্লি নির্বাচনে দারুণ জয় এনে দেওয়ার থেকে বেশি কঠিন বলে মনে করছেন নির্বাচনী বিশ্লেষকরা -  পরের বছর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং ডিএমকে-র এমকে স্টালিন-কে জিতিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু দিল্লির জয়, যার জন্য নিজের দল থেকেও বিতারিত হতে হয়েছে তাঁকে, সেখানে কীভাবে কেজরিওয়ালকে সাফল্য এনে দিলেন তিনি?

আপ দলের একটি সূত্র বলছে, মাত্র একটি পরামর্শই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী-কে দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কেজরিওয়াল-এর রাজনৈতিক উত্থান ঘটেছিল প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও নেতাদের বিরোধীতা করে। পিকে তাঁকে পরামর্শ দেন, সেই দ্বন্দ্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে নিজেকে 'উন্নয়নের মানুষ' হিসাবে তুলে ধরা। আর তা অর্জনে কেজরিওয়াল-কে তিনি সিসিটিভি থেকে শুরু করে বিনামূল্যে মহিলাদের বাসভ্রমণের সুবিধার মতো দেওয়া আপ-এর প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণের দিকে মনোনিবেশ করতে বলেন।

সেই সঙ্গে এই নির্বাচনী কৌশলবিদ আপ-কে পরামর্শ দেন, একটানা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করা বন্ধ করতে। কারণ, লোকসভায় যাঁরা বিজেপি ভোট দিয়েছেন তাঁদের অনেকেই বিধানসভা নির্বাচনে আপ-কে ভোট দেবেন বলে অনুমান করেছিলেন পিকে। তাই মোদী বিরোধিতা করতে গিয়ে তাঁদের ভোট হারানো অর্থহীন। নির্বাচনের দিন ঘোষণারও আগে তৈরি করা হয়েছিল কেজরিওয়ালের রিপোর্ট কার্ড। দিন ঘোষণার পরই প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের ২৫,০০০ বাড়িতে তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রতি কেন্দ্রের ১৫,০০০ জন করে প্রভাবশালী ভোটারদের পাঠানো হয়েছিল ব্যক্তিগত চিঠি।

এতে করে নির্বাচনের প্রচারের শুরুতে বিজেপি বেশ কিছুটা থতমত খেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেজরিওযালদের জন্য প্রশান্ত কিশোর থাকলে বিজেপিরও রয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি। সেটা জেনেই সুপার ওভারে খেলা গড়ানোর জন্য তৈরি ছিলেন পিকে। কার্যক্ষেত্রেও তাই হয়। অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদী তাদের বিশাল সাংসদ বাহিনী পুরো মন্ত্রিসভা বেশ কয়েকটটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ঝাঁপিয়েছিলেন দিল্লিতে।

মেরুকরণের রাজনীতি শুরু হতেই কেজরিওয়ালের করণীয় তালিকায় যুক্ত হয়েছিল হনুমান চল্লিশা জপ করা। কেজরিওয়াল-কে বিজেপি 'সন্ত্রাসবাদী' তকমা দেওয়ার পরই হয়েছিল প্রতিবাদ মিছিল, বাবার হয়ে প্রথমবার মুখ খোলানো হয় কেজরিওয়ালের মেয়েকে দিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে অযোধ্যার রাম মন্দিরের জন্য ট্রাস্ট তৈরির ঘোষণা করার দিনই পরিকল্পনামাফিক সব সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন কেজরিওয়াল। লক্ষ্য ছিল, রামমন্দির ট্রাস্টের খবরের পাশে আপ প্রধানের জন্য জায়গা ছিনিয়ে নেওয়া।

দিল্লিতে, পিকে-র ওষুধ ভালোই কাজে দিয়েছে। কিন্তু বাংলা ও তামিলনাড়ু-তে উন্নয়নই শেষ কথা নয়। সেই সঙ্গে কাজ করবে অনেকগুলি ফ্যাক্টর। প্রশান্ত কিশোরের মাথা থেকে কী পরামর্শ বের হয় মমতা ও স্টালিনের জন্য সেটাই এবার দেখার।