সংক্ষিপ্ত
গরুড়ের ক্ষমতা বর্ণনা করেছে স্বয়ং মহাভারত, সেই ক্ষমতা এবার বাস্তবিকভাবে কাজে লাগাতে চলেছে ভারতের দুর্ধর্ষ সেনাদল।
হিন্দু আর বৌদ্ধ পুরাণে উল্লিখিত গরুড়ের কথা মনে আছে? যে পাখি নিজের মাকে মুক্ত করে আনতে হানা দিয়েছিল খাস স্বর্গরাজ্যে। তারপর সমস্ত ক্ষমতাশালী দেবতারা তাঁর দাপটের কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন এবং অবশেষে তিনি নিজের মাকে মুক্ত করে এনে ক্ষান্ত হন। এই গরুড় পাখিই হয়তো বাস্তবের চিল। যার ক্ষমতা বর্ণনা করেছে স্বয়ং মহাভারত। সেই ক্ষমতা এবার বাস্তবিকভাবে কাজে লাগাতে চলেছে ভারতের দুর্ধর্ষ সেনাদল।
উত্তর ও পশ্চিম সীমান্ত বরাবর নজরদারি এবং ড্রোন-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসাবে, ভারতীয় সেনাবাহিনী তার মিরাট-ভিত্তিক রিমাউন্ট ভেটেরিনারি কর্পস সেন্টারে কালো চিল এবং কুকুরদের প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। উত্তরাখণ্ডের আউলি মিলিটারি স্টেশনে, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যৌথভাবে মহড়া 'যুধ অনুশীলন' করে চলেছে। যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী কালো চিল এবং কুকুরের জোড়া প্রদর্শন করেছে।
কালো চিলের পায়ে একটি নজরদারি ক্যামেরা এবং জিও-পজিশনিং সিস্টেম ট্র্যাকার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাখিটি যখন আকাশে উড়বে, তখন মাটিতে থাকা সেনাদের হাতে পৌঁছে যাবে রিয়েল-টাইম তথ্য। শুধু তথ্য দেওয়াই নয়, উড়ন্ত শত্রুদের ঘায়েল করতেও চিলের জুড়ি মেলা ভার। অনুশীলন চলাকালীন ওই এলাকায় একটি কোয়াডকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। চিলটি তৎক্ষণাৎ সেই কোয়াডকপ্টারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নিজের নখ দিয়ে এতবার সেটিকে আঘাত করে যে, শেষমেশ সেটি পড়ে যেতে বাধ্য হয়।
একজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, "প্রকল্পটি পরীক্ষাধীন এবং প্রথমবারের মতো কোনও মহড়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে।" তিনি আরও যোগ করেছেন যে, বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নজরদারি এবং বাধা দেওয়ার জন্য পাখিকে ব্যবহার করে থাকে। পরীক্ষাটি যদি সফল হিসেবে প্রমাণিত হয়, তাহলেভারতীয় ভূখণ্ডে লুকিয়ে ঢোকার চেষ্টা করা যেকোনও উড়ন্ত বস্তুর ওপর নজর রাখার জন্য এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কালো চিলগুলিকে সীমান্তে মোতায়েন করা হবে।
যুধ অভিযান ২০২২ অনুশীলনে, দুটি কালো চিলকে মোতায়েন করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি চিল এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তাদের আগামী সময়ে ময়দানে নামানো হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্র মারফৎ জানা গেছে, "কালো চিল বিপন্ন প্রজাতির অধীনে আসে না এবং এই জন্যই এদের বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি একটি শিকারী পাখি, যার কোনও উড়ন্ত বস্তুকে আক্রমণ করার সহজাত প্রবৃত্তি রয়েছে।"
যে কুকুরগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি জার্মান শেফার্ড জাতের এবং তাদেরকে এমনভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে, যে তারা সৈন্য বা হ্যান্ডলারকে উড়ন্ত বস্তু সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে। মানুষের চেয়ে কুকুরের শব্দ শোনার ক্ষমতা বেশি। কুকুরটি শব্দ শুনে ঘেউ ঘেউ করে এবং হ্যান্ডলারকে সতর্ক করে। কালো চিল এবং কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রকল্পটি ২০২০ সালে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে ড্রোনের ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনার পরে শুরু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন-
দিল্লির পুরভোটের প্রচারে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, তুলে ধরলেন বাংলার দুর্নীতির উদাহরণ
দেশের উপরাষ্ট্রপতির আসনে বসেই বাংলায় ফের ধনখড়, স্ত্রীকে নিয়ে সোজা উপস্থিত হলেন কালীঘাট মন্দিরে
শহর জুড়ে উত্তর-পশ্চিমী হাওয়ার দাপট, তবে তাপমাত্রার কাঁটা রইল ওপরের দিকেই