সংক্ষিপ্ত

১৮৬৫ সালের ২৮ জানুয়ারি পঞ্জাবের একটি ছোট্ট গ্রামের জৈন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মুন্সী রাধাকৃষ্ণণ আজাদ ছিলেন একজন শিক্ষক এবং তাঁর মাতা গুলাব দেবী ছিলেন ধার্মিক প্রকৃতির। পিতা ছিলেন পণ্ডিত মানুষ। 
 

লালা লাজপত রায় (Lala Lajpat Rai) জনপ্রিয় ছিলেন ‘পঞ্জাব কেশরী’ (Punjab Keshri) নামে। তিনি ছিলেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (Punjab National Bank) প্রতিষ্ঠাতা। স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর অনুপ্রেরণায় আর্য সমাজে তিনি যোগ দেন। ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হন। ইংরেজি ও হিন্দিতে লিখেছিলেন বেশ কয়েকটি বই। মায়ের স্মৃতিতে  প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হাসপাতাল।সাংবাদিক লালা লাজপত রায় নিয়মিত লিখতেন ‘দ্য ট্রিবিউন’ (The Tribune) পত্রিকায়। ১৭ নভেম্বর পুলিশের লাঠিচার্জে গভীর ভাবে আহত হয়ে মারা যান লালাজী। - অনিরুদ্ধ সরকার

(১)লালা লাজপত রায় ছিলেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (Punjab National Bank)  ও লক্ষী বিমা কোম্পানির প্রধান স্থপতি। লালা লাজপত রায়ের নির্দেশনায় দয়ানন্দ অ্যাংলো বৈদিক বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। 

(২)লালা লাজপত রায় ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন এবং রাওলাট আইনের বিরোধিতা শুরু করেন। ব্রিটিশরা রাওলাট আইন তৈরী করেছিল যাতে যারা প্রতিবাদের মাধ্যমে তাদের আঘাত করার হুমকি দেবে সে সব ভারতীয়কে জেলে পুরতে পারে। এই নতুন আইনের বিরোধিতা করার সাহস দেখানোর জন্য লালা লাজপত রায়কে  (Lala Lajpat Rai) ‘পঞ্জাব কেশরী’ (Punjab Keshri) আখ্যা দেওয়া হয়।\

আরও পড়ুন- Lord Mountbatten: কোন কেলেঙ্কারি লুকিয়ে মাউন্টব্যাটেনের ডায়েরিতে, গোপন রাখতে খসছে ৬ কোটি

(৩) ১৮৬৫ সালের ২৮ জানুয়ারি পঞ্জাবের একটি ছোট্ট গ্রামের জৈন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মুন্সী রাধাকৃষ্ণণ আজাদ (Radhakrishnan Azad) ছিলেন একজন শিক্ষক এবং তাঁর মাতা গুলাব দেবী ছিলেন ধার্মিক প্রকৃতির। পিতা ছিলেন পণ্ডিত মানুষ। পুত্রের প্রথম শিক্ষালাভ হয় পিতার কাছ থেকেই।

(৪) ১৮৭৭ সালে তিনি রাধা দেবী-র সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের তিন সন্তান ছিল- দুই ছেলে এবং একটি মেয়ে।

(৫)১৮৮০ সালে, তিনি লাহোরের সরকারি কলেজে আইন নিয়ে পড়তে যান। এই সময়ে তিনি কয়েকজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে পরিচিত হন। লাহোরে থাকার সময়ই, তিনি আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীকে (Swami Dayananda Saraswati) দেখেন এবং তাঁর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে আর্য সমাজে যোগ দেন।

(৬) ১৮৯২ সালে, তিনি লাহোর হাইকোর্টে আইন প্র্যাকটিস করতে যান। এই সময়ে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন এবং ‘দ্য ট্রিবিউন’ (The Tribune) পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন।

(৭)১৯০৭ সালের মে মাসে, পঞ্জাবের রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে বার্মার মান্দালয়ে নির্বাসন দেওয়া হয়।

(৮)লালা লাজপত রায় উচ্চতর বিদ্যার্জনের জন্য ১৯০৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং বিদ্যার্জন শেষ করে দেশে ফিরে আসেন। 

(৯)তিনি একদিকে যেমন ছিলেন বিপ্লবী ও নেতা তেমনই তিনি ছিলেন একজন সুপরিচিত লেখক। তিনি ইংরেজি ভাষায় বেশ কয়েকটি বই লেখেন- History of the Arya Samaj, England's Debt to India, The Problems Of National Education In India, Swaraj and Social Change, The United States of America, A Hindu's impressions and a study। তিনি হিন্দি ভাষায়  শিবাজী ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনী রচনা করেন ।

(১০) পঞ্জাবের লালা লাজপত রায় (Lala Lajpat Rai) স্বদেশী আন্দোলনের স্থপতিদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি ছাড়াও মহারাষ্ট্রের বাল গঙ্গাধর তিলক (Bal Gangadhar Tilak) ও বাংলার বিপিন চন্দ্র পাল (Bipin Chandra Pal) ছিলেন প্রথম সারির নেতা। এই তিন নেতা 'লাল-বাল-পাল' নামে জনপ্রিয় ছিলেন। 

(১১) ১৯২০ সালে অনুষ্ঠিত কলকাতায় কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন, লালা লাজপত রায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হন।

(১২) ১৯২৭ সালে লালাজীর মা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি তাঁর মায়ের স্মৃতিতে 'গুলাব দেবী চেস্ট হাসপাতাল' প্রতিষ্ঠা করেন। কথিত আছে যে, যেখানে তাঁর মা মারা গিয়েছিলেন হাসপাতালটিও ঠিক সেখানেই স্থাপন করেন লালাজী। যা বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত।

(১৩) ১৯২৮ সালের ৩০ অক্টোবর তিনি সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত বিরোধ প্রদর্শনে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে পুলিশ মিছিলের ওপর লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠি চার্জে গভীর ভাবে আহত হন লালাজী। 

(১৪) সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ সুপার জেমস এ স্কট লাঠিচার্জ করার নির্দেশ দেন। স্কট নিজেও লাঠিচার্জ করেন। লালা লাজপত রায়কে (Lala Lajpat Rai) স্কট প্রথমে ধরেন কিন্তু তিনি তাঁকে গ্রেফতার না করে লাঠিপেটা করতে শুরু করেন। পুলিশ রিপোর্টে দাবি করা হয়ে, স্কট লালা লাজপত রায়কে ধরার পর লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। আর তাতে মারাত্মকভাবে আহত হন লালাজী। 

(১৫) গুরুতরভাবে আহত লালাজীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লাজপত রায় (Lala Lajpat Rai) চিকিৎসায় আর সাড়া দেন নি।১৯২৮ এর ১৭ নভেম্বর হাসপাতালেই  মারা যান 'পঞ্জাব কেশরী'।

আরও পড়ুন- RSS: আগামী ২ বছরে বাংলায় জাঁকিয়ে বসছে আরএসএস, লোকসভার আগেই রয়েছে বিরাট পরিকল্পনা

আরও পড়ুন- Rashtrapati Bhavan: গভীর রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে হানা প্রেমিক যুগলের, চলছে ধারাবাহিক জেরা

 

YouTube video player