পহেলগাম জঙ্গি হামলার জবাবে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভূপাতিত করা একটি পাকিস্তানি ড্রোন প্রদর্শন করেছে ভারত। এই ত্রি-বাহিনী অভিযানে পাকিস্তান/পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জঙ্গি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করা হয়, ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ১০ মে ভূপাতিত করা তুরস্কের তৈরি একটি পাকিস্তানি সামরিক ড্রোন প্রদর্শন করেছে। ৯ মে, ভারতের পশ্চিম সীমান্তে একটি বড় উত্তেজনার মধ্যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৭ এবং ৮ মে রাতে ভারতীয় সামরিক পরিকাঠামোকে লক্ষ্য করে একাধিকবার আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং ড্রোন অনুপ্রবেশ ঘটায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায় যে ৩৬টি জায়গায় ৩০০ থেকে ৪০০টি ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছিল, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ভারতীয় বাহিনী কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে ভূপাতিত করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ড্রোনগুলো তুরস্কের তৈরি অ্যাসিসগার্ড সোঙ্গার মডেলের ছিল।
অপারেশন সিঁদুর: একটি ত্রি-বাহিনীর জবাব
পহেলগাম জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুর পর, ৭ মে, ২০২৫-এ শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিঁদুর’ একটি সুনির্দিষ্ট, পেশাদার এবং উদ্দেশ্যমূলক ত্রি-বাহিনীর প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে এবং পাকিস্তানের গভীরে জঙ্গি পরিকাঠামো ভেঙে ফেলার জন্য এই অভিযানটি একটি শাস্তিমূলক এবং লক্ষ্যযুক্ত প্রচারাভিযান হিসাবে পরিকল্পিত হয়েছিল। ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে (PoJK) লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে নয়টি প্রধান জঙ্গি লঞ্চপ্যাড সফলভাবে ধ্বংস করে। এই অভিযানে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়।
এই অভিযানটি স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে একযোগে পরিচালিত হয়, যা ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর মধ্যে একটি নিখুঁত সমন্বয়ের প্রদর্শন ছিল।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর ভূমিকা
পাকিস্তান জুড়ে জঙ্গি পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে নির্ভুল হামলা চালাতে ভারতীয় বিমানবাহিনী (IAF) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সরকারি বিবৃতি অনুসারে, এটি নুর খান বিমানঘাঁটি এবং রহিমইয়ার খান বিমানঘাঁটির মতো লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের বিমান হামলা চালায়, যার ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্যমান প্রমাণ সরকারি ব্রিফিংয়ে উপস্থাপন করা হয়।
সীমান্তের ওপার থেকে প্রতিশোধমূলক ড্রোন এবং ইউএভি হামলার সময় ভারতীয় আকাশসীমা রক্ষায় বিমানবাহিনীর শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়। দেশীয়ভাবে তৈরি আকাশ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম এবং পেচোরা ও ওএসএ-একে-এর মতো পুরনো প্ল্যাটফর্মগুলিকে একটি স্তরযুক্ত প্রতিরক্ষা গ্রিডে কার্যকরভাবে মোতায়েন করা হয়েছিল।
বিবৃতি অনুসারে, আইএএফ-এর ইন্টিগ্রেটেড এয়ার কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম আকাশপথে সম্পদের রিয়েল-টাইম সমন্বয় সক্ষম করে, যা ভারতীয় বাহিনীকে দক্ষতার সাথে আকাশপথে হুমকি মোকাবিলা করতে এবং পুরো সংঘর্ষ জুড়ে নেট-কেন্দ্রিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান
বিবৃতি অনুসারে, ভারতীয় সেনাবাহিনীও প্রতিরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক উভয় ভূমিকায় তার প্রস্তুতি এবং কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে। সেনাবাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলি বিমানবাহিনীর সাথে একযোগে কাজ করেছে, কাঁধে বহনযোগ্য ম্যানপ্যাডস এবং এলএলএডি বন্দুক থেকে শুরু করে দূরপাল্লার স্যাম-এর মতো বিভিন্ন সিস্টেম মোতায়েন করেছে।
এই ইউনিটগুলি পাকিস্তানের দ্বারা প্রেরিত ড্রোন এবং লোইটারিং মিউনিশনের ঢেউ মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
পহেলগাম হামলা: প্রেক্ষাপট ও তার পরের ঘটনা
২২ এপ্রিল পহেলগাম জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যার পরে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে। ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে (PoJK) জঙ্গি পরিকাঠামোর উপর নির্ভুল হামলা চালায় এবং পাকিস্তানি আগ্রাসন প্রতিহত করে তাদের বিমানঘাঁটিতেও আঘাত হানে।


