Indian Navy displays maritime power : অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় নৌবাহিনী তাদের সামর্থ্য এবং কৌশলগত দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছে, যা দেশের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি শত্রুদেশগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা।

Indian Navy displays maritime power: এপ্রিল ২২ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগাঁও এলাকায় সংঘটিত জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হওয়া অপারেশন সিঁদুর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই অপারেশনের মাধ্যমে ভারত তার নৌ শক্তি পুনরায় বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছে। 

এটি কেবল জঙ্গিদের উপর হামলাই নয়, বরং শত্রুদেশগুলোর জন্য ভারতের পক্ষ থেকে একটি সতর্কবার্তা। পাকিস্তানকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ভারতের সঙ্গে বিরোধে জড়ালে কী হতে পারে। একইভাবে, চিনকেও অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারতের সামরিক শক্তি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠি বলেছেন, “ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ, সাবমেরিন এবং বিমানবাহিনীর বিমানগুলি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত এবং পাকিস্তানের যেকোনো পদক্ষেপের উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম।”

জঙ্গি ঘাঁটিতে যৌথ হামলা

ভারতীয় নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটিতে যৌথ হামলা চালিয়েছে। জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর নয়টি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। এই হামলায় ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পাহলগাঁও-এর জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারত এই অপারেশন সিঁদুর চালিয়েছে। জঙ্গিরাই ছিল এই হামলার লক্ষ্যবস্তু।

ভারতীয় নৌবাহিনী তার শক্তি প্রদর্শন করেছে

নৌবাহিনীর মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান, আকাশ থেকে সতর্কতা জারি করা হেলিকপ্টার এবং ক্যারিয়ার ব্যাটেল গ্রুপের মতো আধুনিক সরঞ্জাম সমুদ্রপৃষ্ঠে ক্রমাগত নজরদারি চালিয়ে পশ্চিম উপকূলে পাকিস্তানের আকাশসীমাকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে শত্রুদেশ সাময়িকভাবে কার্যকরী ক্ষমতা হারিয়েছে।

এছাড়াও, ব্রহ্মোসের মতো অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ মিসাইলের সক্ষমতা ভারতীয় নৌবাহিনীকে আরও সুরক্ষিত এবং শক্তিশালী করে তুলেছে। শত্রুপক্ষের ড্রোন হামলা এবং গোলাবর্ষণ ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে প্রতিহত করেছে।

কৌশলগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জঙ্গি হামলাকে যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করে ভারতের হামলা

ভারত সরকার এখন প্রতিটি জঙ্গি হামলাকে যুদ্ধকর্ম হিসেবে বিবেচনা করার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। এটি নৌবাহিনীকে আরও সতর্ক এবং বিস্তৃত প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ করে তুলেছে। এরই অংশ হিসেবে অপারেশন সিঁদুর চালানো হয়েছে। আগামী দিনগুলিতেও অপারেশন সিঁদুর অব্যাহত থাকবে বলে ভারত সরকার স্পষ্ট করেছে।

এই অপারেশন চার দিন ধরে চলে। মে ১০ তারিখে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি মেনে নেয় বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে। ভারতের শক্তি প্রদর্শন, কৌশলগত স্পষ্টতা এবং আধুনিক প্রযুক্তি পাকিস্তানকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। 

সামগ্রিকভাবে অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠির মতে, "অপারেশন সিঁদুর" নৌবাহিনীর সাহস এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, যা দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা দেখিয়েছে। পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এই অপারেশন বিশ্বের কাছে ভারতের শক্তি এবং দৃঢ়তার স্পষ্ট উদাহরণ।