সংক্ষিপ্ত
এক্সিট পোলের হিসেব নিকেশ তিন রাজ্যের ক্ষমতার পালাবদলের বিশ্লেষণ শুরু করেছে। জন কি বাতের বুথ ফেরত সমীক্ষায় উঠে এসেছে তিন রাজ্য অর্থাৎ ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ফলাফলের সম্ভাব্য ছবি।
উত্তর পূর্বের তিন রাজ্যের ভোটগ্রহণের পালা শেষ। এবার ফলের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি। ভোটগণনা দোসরা মার্চ। এক্সিট পোলের হিসেব নিকেশ তিন রাজ্যের ক্ষমতার পালাবদলের বিশ্লেষণ শুরু করেছে। জন কি বাতের বুথ ফেরত সমীক্ষায় উঠে এসেছে তিন রাজ্য অর্থাৎ ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের ফলাফলের সম্ভাব্য ছবি।
জন কি বাতের বুথ ফেরত সমীক্ষায় ত্রিপুরার ভাগ্য
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ত্রিপুরার ক্ষমতায় ছিল সিপিআই(এম)। ২০১৮ সালে বিজেপির হাতে ক্ষমতা হারাতে হয় বামেদের। গত নির্বাচনে বিজেপি ৬০এর মধ্যে ৩৬ টি আসন দখল করেছিল। ত্রিপুরা দখলের ম্যাজিক ফিগার ৩১। এবার কি হতে চলেছে। জন কি বাতের এক্সিট পোল বলছে পদ্ম শিবিরের পালে হাওয়া লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।
জন কি বাত এক্সিট পোল অনুসারে, ত্রিপুরায় ৬০ টি বিধানসভা আসন রয়েছে, যেখানে বিজেপি ২৯ থেকে ৪০টি আসন পেতে পারে। এই পোলে সিপিএম রয়েছে দুই নম্বরে, যার খাতায় ৯ থেকে ১৬টি আসন জয়ের কথা লেখা হয়েছে। তিপরা মোথা জিততে পারে ১০ থেকে ১৪টি আসন। অন্যান্যদের ভাগ্যে থাকতে পারে একটি আসন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সিপিআই(এম) মাত্র ১৬টি আসনে জয় পেয়েছিল। পুরনো আসনগুলি ধরে রাখতে মরিয়া বামেরা। পাশাপাশি বিরোধী শিবিরের আশা জোট করে আরও ১৩টি আসন তারা পেয়ে যাবে। ত্রিপুরা নির্বাচনে এবার বড় ফ্যাক্টর টিপরা মোথা। যাদের দাবি বৃহত্তর টিপরাল্যান্ড। দলের প্রধান প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাই তাদের মূলত ভোটব্যাঙ্ক। ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে এই দল।
টিপরা মোথার সঙ্গে প্রথমে জোট করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু পরবর্তীকালে গেরুয়া শিবির পিছিয়ে আসে। আপাতত একাই ভোট ময়দানে টিপরা মোথা। তবে এই দল নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর। সরকার গঠনের সময় বাম বা গেরুয়া যে শিবিরেই যাবে তাদের লাভ বেশি।
জন কি বাত এক্সিট পোলে মেঘালয়ের ফলাফল
জন কি বাত এক্সিট পোলের ফলাফল ভারতীয় জনতা পার্টিকে হতাশ করতে পারে। দলটি এবার মেঘালয়ে নিজেরাই সরকার গঠনের আশা করছিল এবং ৬০ টি আসনের জন্য প্রার্থী দিয়েছে। তবে, জন কি বাত-এর এক্সিট পোল ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে ভারতীয় জনতা পার্টি মাত্র ৩ থেকে ৭ আসন পেতে পারে। ভোট পাওয়ার হার ৯ থেকে ১৩% পর্যন্ত থাকতে পারে।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস-ইউডিপির মধ্যে কড়া টক্কর দেখা দিতে পারে বলে জানাচ্ছে জন কি বাতের এক্সিট পোল। বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে তৃণমূল ১৭ থেকে ২২% ভোট শেয়ার পেতে পারে। তাদের ঝুলিতে আসতে পারে ৯ থেকে ১৪টি আসন, ইউডিপির জন্য ১০ থেকে ১৪টি আসন (২০ থেকে ১৮ শতাংশ ভোট শেয়ার) এবং এনপিপির জন্য ১১ থেকে ১৬টি আসন (২১ থেকে ১৭% ভোট শেয়ার) অনুমান করা হয়েছে জন কি বাত এক্সিট পোলে। এই সমস্ত মূল্যায়ন করা হয়েছে ৫৯টি আসনের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে।
জন কি বাত এক্সিট পোলে নাগাল্যান্ডের ফল
বিজেপি পেতে পারে ৩৫ থেকে ৪৫টি আসন। এনপিএফ পেতে পারে ৬ থেকে ১০টি আসন। অন্যান্যদের ঝুলিতে আসতে পারে ৯ থেকে ১৫টি আসন।
উল্লেখ্য, এখানে কোনো বিরোধী নেই, সবাই মিলে সরকার গঠন করেছে ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন নাগা পিপলস ফ্রন্টে (এনপিএফ) একটি বিভক্তি ছিল। বিদ্রোহীরা ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (এনডিপিপি) গঠন করে। নেফিউ রিও, দলের সিনিয়র নেতা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষে। নির্বাচনের আগে এনপিএফ বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙেছে। বিজেপি ও এনডিপিপি একসঙ্গে নির্বাচনে লড়েছে। নেফিউ রিও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর, NPF-এর বেশিরভাগ বিধায়ক যারা ২৭টি আসন জিতেছিল তারা NDPP-তে যোগ দিয়েছিল। এতে এনডিপিপি বিধায়কের সংখ্যা ৪২ এ পৌঁছেছে। একই সময়ে, এনপিএফের মাত্র চারজন বিধায়ক অবশিষ্ট ছিলেন। পরে এনপিএফও ক্ষমতাসীন জোটকে সমর্থন দেয়। বর্তমানে রাজ্য বিধানসভার ৬০ জন বিধায়কই শাসক দলে রয়েছেন।