সংক্ষিপ্ত
নরেন্দ্র মোদীকে তৈরি তথ্যচিত্র দেখান যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে। বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দিল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়।
জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পড়ুয়াদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওপর বিবিসির তৈরি বিতর্কত তথ্যচিত্র India: The Modi Question (ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন)এর প্রদর্শন বাতিল করতে নির্দেশ দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানের জন্য আগে থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে । সেইকারণ এই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। মঙ্গলবার রাত ৯টা বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে বিবিসির তৈরি বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনের কথা ছিল। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে এই ধরনের একটি অননুমদিত কার্যকলাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের শান্তি ও সম্প্রীতি ব্যহত করতে পারেষ সংশ্লিষ্ট ছাত্র ও ব্যক্তিদের দৃঢ়ভাবে প্রস্তাবিত কর্মসূচি বাতিল করা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
যদিও আদেই কেন্দ্রীয় সরকার বিবিসির এই তথ্যচিত্রের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্সেসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। টুইটার ও ইউটিউেবর লিঙ্কগুলিকে ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক এই তথ্যচিত্রকে বিভ্রান্তিকর, প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয়বস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি এই তথ্যচিত্রে ঔপনিবেশিক মতাদর্শ প্রতিফলিত করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। যদিও বিবিসির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে যথেষ্ট গবেষণা করেই এই তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এডিটোরিয়াল বিষয়বস্তুর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেই আসল তথ্য তুলে ধরার হয়েছে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এই তথ্যচিত্র নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস সরকারি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সমালোচনায় সরব হলেও কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মত বিরোধী দলগুলি সেন্সরশিপের জন্য মোদী সরকারের সমালোচনা করলেও দেশের প্রায় ৩০২ জন বিদগ্ধ মানুষ বিবিসির তথ্যচিত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছে চিঠি লিখেছেন। সেখানে দাবি করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রের মাধ্যেমে দেশের নেতার ভাবমূর্তি খুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। চিঠিতে সই করেছেন রাজস্থান হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অনিল দেও সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব এল সি গয়াল, প্রাক্তন বিদেশ সচিব শশাঙ্ক। এছাড়াও প্রাক্তন RAW প্রধান সঞ্জীব ত্রিপাঠি এবং প্রাক্তন NIA ডিরেক্টর যোগেশ চন্দর মোদি বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন৷
বিবিসির তৈরি করা তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার বিষয় নিয়ে ভারতীয় নেতা নরেন্দ্র মোদী অবগত ছিলেন। বিবিসি দাবি করেছে, এই সিরিজটি তৈরির সময় তাদের কর্মীরা বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছেছিল। বিস্তৃতি তথ্য সংগ্রহ করেছিল। ঘটনার সাক্ষীতদের সঙ্গে কথা বলেছিল। পাশাপাশি তথ্যচিত্র তৈরির সময় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল। বিবিসি আরও দাবি করেছেন তথ্যচিত্রে বিভিন্ন মন্তব্য আর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই তথ্যচিত্রে বিজেপির নেতাকর্মীদেরও বয়ান রয়েছে। বিবিসির মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, এই বিষয়ে ভারত সরকারের কাছেও একাধিক বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।