সংক্ষিপ্ত
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ থেকে প্রেম ও বিয়ে।
কিন্তু তারপরই রুপকথার গল্পের শেষ ঘটল।
ক্য়ারাটে চ্যাম্পিয়ন বউ-এর মারে নাজেহাল স্বামী।
আপাতত পা ভেঙে হুইলচেয়ারে স্থান হয়েছে তাঁর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হয়েছিল দুজনের। কদিন কথা বলতে বলতেই প্রেম। তারপর সেখান থেকে তাদের গল্প গড়ায় বিয়ের পিড়িতেও। এতদূর পর্যন্ত নয়ডার বাসিন্দা দীপক সাহনির জীবন চলছিল রুপকথার মতো। কিন্তু, তারপরেই যেন তাঁর জীবনে ভূমিকম্প নেমে আসে। এখন তাঁর এমন অবস্থা, যে হেঁটে চলে বেরানোর উপায়ও নেই, হুইলচেয়ার নিয়ে চলতে হচ্ছে।
বিষয়টা খুলে বলা যাক। দীপকের স্ত্রী একজন জুডো-ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন। দীপকেরর অভিযোগ বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী'তে সামান্য ঝগরা হলেই তাঁকে স্ত্রীর জুডো-ক্যারাটের দক্ষতার স্বাদ চাখতে হয়। সোজা কথায় দীপককে জুডো-ক্যারাটের প্যাঁচে শায়েস্তা করেন তাঁর স্ত্রী। এর আগে একবার তাঁর মাথাও ফেটে গিয়েছিল। কিন্তু, গত শনিবার ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন স্ত্রীর অত্যাচার একেভারে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। স্ত্রীর ক্যারাটের প্যাঁচে ডান পায়ের হাড় ভেঙে যায় দীপকের।
এরপর তিনি হুইলচেয়ারে করে নয়ডার এক বাবা অশোক সাহনি-র সঙ্গে জেলা হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা করাতে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, হাসপাতালে দীপককে পরীক্ষা করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, দীপকের ডজান পায়ের হাড় ভেঙেছে এবং শরীরে সর্বত্র মারের আঘাতে রক্ত জমে কালশিটে পড়ে গিয়েছে।
দীপক জানিয়েছেন প্রায় দেড় বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হয়েছিল দীপক ও তাঁর স্ত্রী-র। চ্যাট থেকে প্রেম এবং অবশেষে বিবাহ বন্ধনে পৌঁছয় তাঁদের সম্পর্ক। বিয়ের পর আর পাঁচটা বাড়ির মতোই ছোটখাট ঝামেলা হত তাঁদের মধ্যে। তবে কিছুদিন পর থেকেই ঝগড়ার তেজ বাড়তে শুরু করে। ক্রমে দীপকের উপর আধিপত্য ফলাতে থাকেন তাঁর স্ত্রী। এরপরই শুরু হয় মারধর। ধীরে দীরে মারের মাত্রাও বেড়েছে। গত শনিবার রাতে, স্ত্রী তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। তাতেই তাঁর পা ভেঙে যায়। সারা রাত প্রচন্ড যন্ত্রনা নিয়েই কাটিয়ে দেন। রবিবার সকালে তিনি কোনওমতে হাসপাতালে আসেন।
হাসপাতালেই পুলিশ ডাকেন দীপক ও তাঁর বাবা। স্ত্রী-এর বিরুদ্ধে গার্হস্থ হিংসার অভিযোগ জানিয়েছেন দীপক সাহনি। তিনি জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সুযোগ পেলেই তাঁকে পেটান। কিন্তু, সমস্যা হল, সরকার গার্হস্থ হিংসার হাত থেকে মহিলাদের রক্ষার জন্য একটি আইন প্রণয়ন করেছে। পুরুষদের থেকে হাত থেকে মহিলাদের সুরক্ষার বিধান তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, স্ত্রীদের হাতে তাদের স্বামীরা নিগৃতিত হলে তাদের সুরক্ষার জন্য কোনও বিধান নেই।
তবে পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু করা হয়েছে। স্বামী ও স্ত্রীর দুই পরিবারকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুজনের মধ্যে কী নিয়ে ঝগরা-লড়াই হয়েছিল, আগে কতবার এই জাতীয় বিরোধ ঘটেছে তা জানার চেষ্টা করছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন তাঁরা দুজনকে সামনে বসিয়ে আলাপ আলোচনার মধ্য়ে বিষয়টির মিটমাট করার চেষ্টা করছেন।