চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, আরশাদের শরীরে প্রায় ১০০টিরও বেশি মারধরের দাগ রয়েছে। রক্ত জমাট বেঁধে নীল হয়ে গিয়েছিল তাঁর সারা পিঠ।

পোষ্য কুকুরকে খাবার দিতে দেরি হয়ে গিয়েছিল ২১ বছরের যুবকের। সেই ‘অপরাধে’ সেই কুকুরেরই বেল্ট আর লাঠি দিয়ে বেধড়ক মার খেতে হল তাকে। মারধর করলেন তাঁরই এক তুতো ভাই। নির্মম মারধরের আঘাতে শেষমেশ মৃত্যু হল তাঁর। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কেরল রাজ্যের পালাক্কাড় জেলায়। ভাইকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগে যুবকের ওই দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম আরশাদ। কেরলের পালাক্কাড় জেলার অন্তর্গত মুলায়ঙ্কভু এলাকার পেরুমব্রথোডিতে থাকতেন তাঁর বাবা, আবদুল সালাম এবং মা আইশা। তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছিলেন তাঁর দাদা হাকিম, যাঁর বয়স ২৭ বছর। ঘটনার পরেই মুলায়ঙ্কভু এলাকার পালাপপুঝা থেকে হাকিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরশাদ এবং হাকিম পালাক্কাড় জেলার মাননেনগোদে এলাকার আথানিতে একটি ভাড়া বাড়িতে একসঙ্গে থাকতেন। দুজনে মিলে একটি বেসরকারি মোবাইল টেলিকম কোম্পানিতে মোবাইল কেবলের কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার হাকিমের পোষ্য কুকুরকে খাবার না দেওয়ার কারণেই আরশাদকে তিনি অমানবিকভাবে মারধর করেন বলে অভিযোগ। বেধড়ক মারধরের পর ভয়ঙ্কর জখম অবস্থায় আরশাদকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান হাকিম নিজেই। তাঁর সঙ্গে তাঁর বন্ধুরাও ছিলেন বলে জানা গেছে।


পুলিশ জানিয়েছে, নিজের ভাইকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন হাকিম। চিকিৎসকদের কাছে তিনি জানিয়েছিলেন যে, বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গেছে আরশাদ। যদিও চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে দেখেন যে, আরশাদের শরীরে প্রায় ১০০টিরও বেশি মারধরের দাগ রয়েছে। রক্ত জমাট বেঁধে নীল হয়ে গিয়েছিল তাঁর সারা পিঠ। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন যে, প্রচণ্ড মারধরের ফলেই এই দুর্দশা হয়েছে যুবকের। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল থেকে খবর পাঠানো হয় স্থানীয় কোপ্পাম থানায়। চিকিৎসা চলতে চলতেই মৃত্যু হয় আরশাদের। মেডিকেল রিপোর্ট বলছে, দেহের অন্তর্বর্তী রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে আরশাদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃতের শরীরে যে আঘাতের চিহ্নগুলি পাওয়া গেছে, সেগুলি হাত দিয়ে মেরে সম্ভব নয়, কোনও বেল্ট জাতীয় জিনিস এবং তাঁর সঙ্গে কাঠের শক্ত কিছু দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করার ফলে এই ক্ষতি হয়েছে।


Scroll to load tweet…


শুক্রবারই অভিযুক্ত হাকিমকে নিজেদের হেফাজতে বন্দি করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করার পর শনিবার রাতে তাঁকে অফিশিয়ালি গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে, হাকিম আথানির বাড়িতে প্রায়শই বিনা কারণে নিজের ছোট তুতো-ভাইকে মারধর করত। বৃহস্পতিবার কুকুরকে খাবার দেওয়া নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা হয়, হাকিম বেল্ট আর লাঠি দিয়ে আরশাদকে প্রচণ্ড মারতে থাকে। মারের চোটে আরশাদ মাটিতে পড়ে গেলে হাকিম তাঁর পিঠে লাথি মেরে নিজের ভাইয়ের পাঁজর ভেঙে দেয়।

আরও পড়ুন-
বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র, এসটিএফের জালে ২০ বছরের মনিরুদ্দিন
প্রতিবেশীর ঝামেলার জেরে খুন করে বস্তাবন্দি করে ফেলা হল মাতৃহারা ছোট্ট শিশুকে, বালুরঘাটের ঘটনায় এলাকাজুড়ে অশান্তির আগুন
‘পুলিশি চালানের মাধ্যমে কোষাগারে রাজস্ব তুলছে রাজ্য সরকার’, টুইটারে সোচ্চার শুভেন্দু অধিকারী