করোনা সংকটের মাঝেই লেকের জল হল গোলাপি, ৫০ হাজার বছর আগে উল্কার আঘাতে তৈরি হয়েছিল হ্রদ

রাতারাতি বদলে গেল লেকের জলের রং। যা শুধু স্থানীয়দের নয়, অবাক করে দিয়েছে বিশেষজ্ঞ আর বিজ্ঞানীদের। করোনা সংকটের মাঝেই মহারাষ্ট্রের শোরগোল পড়েগেছে লোনার লেকের জল নিয়ে। লেকের  জলের রং এখন আর সাদা নয়। হয়েছে ঘন গোলাপি । কোথাও কোথাও আবার লাল। কিন্তু কেন? প্রশ্ন উত্তর খুঁজতে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা। সংগ্রহ করা হয়েছে লেকের জল আর প্রবালের। 

লোনের লেকের জন্ম কী করে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। গবেষণা অনুযায়ী আজ খেরে ৫০ হাজার বছর আগে একটি উল্কাখণ্ড এসে পড়ে পৃথিবীতে। তার সেই উল্কাখণ্ডের আঘাতেই তৈরি হয়েছিল এই লেক। তবে লেক তৈরির প্রচলিত প্রবাদও আছে। মুম্বই থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে মহারাষ্ট্রের বুলধনা জেলার এই লেকটি জিও হেরিটেজের তকমা পেয়েছে। প্রতিবছরই প্রচুর দর্শনার্থী আসেন এখানে। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণের কারণে এমন অদ্ভুদ দৃশ্য দর্শনের থেকে অনেক প্রকৃতী প্রেমী বঞ্চিত হলেন। 

গত দুই তিন ধরেই লুনার লেকের জলের রঙের পরিবর্তন দেখা গেছে। ১.২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে লেকের জল সম্পূর্ণ গোলাপি হয়েগেছে। তবে এই ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার ঘটছে। কিন্তু তার বিস্তার এতটা ছিল না। লোনার হ্রদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য গজানন কারাত জানিয়েছেন, এই লেকের জলের স্যালাইন ওয়াটারের পরিমান ১০.৫ পিএইচ। লেকের গায়ে প্রচুর শৈবাল বা শ্যাওলা জাতীয় জিনিস রয়েছে। জলের লবনাক্ততা বেশি। তাই রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জলের রং পরিবর্তন হয়।

ভারতে এই ধরনের লেক বিরল। গজানান কারাত জানিয়েছেন ভারতে এই ধরনের একটি মাত্র লেক রয়েছে। এই লেকের জলের বৈশিষ্য ভিন্ন। লেকের জলেপ পৃষ্ঠ থেকে মাত্র পর্যন্তই অক্সিজেন পাওয়া যায়। তারপর আর জেলে দ্রভীভূত অক্সিজেন নেই। তাই লবনাক্ততা বৃদ্ধির কারণেই জলের রঙ পরিবর্তন হয়। তিনি জানিয়েছেন ইরানে এই জাতীয় একটি লেক রয়েছে।  

ওরঙ্গাবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক জানিয়েছেন লোনার লেকের জল পরিবর্তন কোনও মানুষের হস্তক্ষেপে হয়নি। জলে ছত্রাক থাকায় সবুজ বর্ণের দেখায়। লোনার ক্রেটারে একটি জৈবিক পরিবর্তন হওয়ায় রঙ বদল হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, লকডাউনের কারণে মানুষের আসা যাওয়া প্রায় ছিলই না। তাই রঙের এই বিপুল পালাবাদল। তিনি আরও জানিয়েছেন আরও পরীক্ষার পরই বিষদে বলা যাবে কেন রাতারাতি বদলে গেল লোনার হ্রদের জলের রঙ।