সংক্ষিপ্ত

৫১২ কিলো পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ মাত্র ২ টাকা ৪৯ পয়সা। যা নিয়ে রীতিমত আক্ষেপ মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষির।

 

অবাক করা ঘটনা। পেঁয়াজের গোডাউন হিসেবে পরিচিত মহারাষ্ট্রেই কিনা এক কৃষক ৫১২ কিলোগ্রাম পেঁয়াজ বিক্রি করে মাত্র ২ টাকা ৪৯ পয়সা ঘরে তুলতে পেরেছেন। অথচ দেশ কেন বিদেশেও বর্তমানে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। কৃষক জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে যা হয়েছে তা শুধু তাঁর নয় গোটা মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজ চাষিদের অপমান।

মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের বরশি তহসিলের বাসিন্দা ৬৩ বছরের রাজেন্দ্র চ্যবন অন্যবারের মত এবারও পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। সোলাপুর মার্কেট ইয়ার্ডে অন্যবারের মত এবারও পেঁয়াজ বিক্রি করেন তিনি। তাঁকে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১ টাকা দেওয়া হয়েছিল। যার অর্থ তিনি ৫১২ কিলো পেঁয়াজ ৫১২ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর লাভের পরিমাণ মাত্র ২ টাকা ৪৯ পয়সা। যা রীতিমত অবাক করার মতই ঘটনা।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময় চ্যবন জানিয়েছেন সোলাপুরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর কাছে তিনি পাঁচ কুইন্টালেরও বেশি ওজনের ১০টি ব্যাগে পেঁয়াজ পাঠিয়েছিলেন বিক্রির জন্য। লোডিং , পরিবহণ , মজুরি ও অন্যান্য চার্জ কাটার পরে তিনি লাভ করতে পেরেছেন মাত্র ২ টাকা ৪৯ পয়সা। তিনি জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী প্রতিকুইন্টাল পেঁয়াজের জন্য তাঁকে ১০০ টাকা দিয়েছিলেন। ফসতের ওজন ৫১২ কিলো। তিনি জানিয়েছেন শ্রম, পরিবহণ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তাঁর ৫১২ টাকা ছেকে ৫০৯ টাকা ৫১ পয়সা কেটে নেওয়া হয়েছিল। তারপরই তিনি মুনাফার জন্য ২.৪৯ টাকা পেয়েছে। তিনি জানিয়েছেন এটি শুধু তাঁর নয় গোটা মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষিদের কাছে একটি বড় ধাক্কা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন চাষ করে যদি এই লাভ ঘরে তোলা যায় তাহলে পরবর্তী মরশুমে কীভাবে চাষ করবেন। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন তাঁর সংসার কীভাবে চলবে।

মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষিদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ তারা লাভের টাকা পাচ্ছে না। তাদের ভাল দাম দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপুরণও দেওয়া হয় না। চ্যবন আরও বলেছেন, তাঁর পেঁয়াজ উচ্চমাানের , কিন্তু ব্যবসায়ীর দাবি তাঁর পেঁয়াজ অত্যান্ত নিম্নমানের।

ব্যবসাযী জানিয়েছেন , চ্যবন মাত্র ১০টি ব্যাগে পেঁয়াজ নিয়ে এসেছিল। তাঁর পেঁয়াজের মান খুবই নিম্ন। আর সেই কারণেই তাঁকে কুইন্টাল প্রতি ১০০ টাকা রফা করেছিলেন। ব্যবসায়ী আরও জানিয়েছেন এই এলাকার কৃষকই তাঁর কাছে ৪০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করে ভাল টাকা লাভ করেছিলেন।

স্থানীয় এক কৃষক নেতা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাজারে যে পেঁয়াজ উঠছে তা খারিপ শস্য। তা মজুত করা যায় না। সেই জন্যই কৃষকরা ভাল দাম পাচ্ছে না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পেঁয়াজ আমদানি ও রফতানি নীতি ভারসাম্যহীন। ভারত সবথেকে বেশি পেঁয়াজ বিক্রি করত শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু বর্তমানে সেই দেশটি আর্থিক সংকটে ভুগছে। আর সেই কারণে থমকে পেঁয়াজ রফতানি। অবিলম্বে পেঁয়াজের রফতানি প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ

Rissia-Ukrain War: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একবছরে বদলে গেছে বিশ্বের রাজনৈতিক সমীকরণ ও সম্পর্ক

Onion crisis: পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে চোখে জল, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের কারণ হতে পারে পেঁয়াজ

Goutam Adani Net Wealth: হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের ১ মাস, আদানিদের ১২ লক্ষ কোটি টাকা উধাও