সংক্ষিপ্ত
Operation Sindoor Reliance Trademark: ‘অপারেশন সিঁদুর’-যে নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোটি কোটি ভারতবাসীর আবেগ। কারণ, পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত হেনেছে ভারত এই অপারেশনটির মাধ্যমেই।
Operation Sindoor Reliance Trademark: ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ট্রেডমার্ক চেয়ে বুধবার, একটি আবেদন করেছিল মুকেশ অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডস্ট্রিজ় লিমিটেড। আর তারপর থেকেই তা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
বৃহস্পতিবার, প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে রিলায়্যান্স জানিয়ে দিল যে, ওই আবেদন তারা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
কী বলছে সংস্থা?
রিলায়্যান্সের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের একটি ইউনিট হল জিও স্টুডিওজ়। সেই সংস্থার একজন অধস্তন কর্মীর অসাবধানতায় এই আবেদন হটাৎ করেই দাখিল হয়ে গেছিল। কিন্তু তারপর তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।”
রিলায়্যান্স সেইসঙ্গে এও জানিয়েছে যে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটি গোটা ভারতবর্ষের জন্য গৌরবের। যা আসলে ভারতের বীরত্বের সঙ্গে জুড়ে গেছে। তাই সেই অপারেশনের ট্রেডমার্ক নেওয়ার মতো কোনও অভিপ্রায় তাদের নেই। প্রেস বিবৃতিতে তারা লিখেছে, সমগ্র রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রি সরকার তথা ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গেই রয়েছে। পহেলগাঁও হামলার ঠিক ১৫ দিনের মাথায়, পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত হেনেছে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী।
আর অভিযানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটির ট্রেডমার্ক চেয়ে মোট চারটি আবেদন জমা পড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রকে। এদিকে মঙ্গলবার, গভীর রাতে পাকিস্তানের ঠিক বাছাই করা ৯টি জায়গায় বিমানহানা চালিয়ে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

আর কেন্দ্রীয় শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ট্রেডমার্ক পাওয়ার জন্য প্রথম আবেদন জানায় মুকেশ অম্বানীর সংস্থা রিল্যায়েন্স। কিন্তুস এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তার বিরুদ্ধে মতামতের ঝড় ওঠে। আর তারপরই তা প্রত্যাহার করে নিল তারা।
তবে রিলায়্যান্সের পাঠানো আবেদনের একঘণ্টার মধ্যেই বুধবার সকাল ১১.২৫ মিনিটে সেই একই ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন করেন মুম্বইয়ের অধিবাসী মুকেশ চেত্রম আগরওয়াল। তারপর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ট্রেডমার্কের জন্য আবেদন জানান ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন কমল সিংহ নিজে।
এরপর সন্ধ্যা ৬.২৭ মিনিটে ট্রেডমার্কের দরবার করেন দিল্লী নিবাসী অলোক কোঠারি। কিন্তু প্রত্যেক আবেদনকারীরই উদ্দেশ্য প্রায় আলাদা। কেউ বলছেন মনোরঞ্জন, কেউ বলছেন সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ় নির্মাণ, শিক্ষা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং প্রকাশনার জন্য ট্রেডমার্কের আবেদন করছেন।
তবে রিলায়্যান্স আবেদন প্রত্যাহার করার পর, বাকি তিনজন কী করেন, সেটাই দেখার।
সেনা অভিযান একটি স্পেশ্যাল অপারেশনের নাম কি কোনও বাণিজ্যিক ট্রেডমার্ক হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে?
ট্রেডমার্ক সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে, সেই অনুযায়ী এই ধরনের অভিযানের নামকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সাধারণত বৌদ্ধিক কোনও সম্পত্তি হিসেবে দাবি করে না। সেক্ষেত্রে আইনত কোনও বাধা নেই। সরকার আপত্তি না জানালে ট্রেডমার্ক পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা থাকার কোনও কথা নয়।
তবে সরকার আপত্তি করলে, সেক্ষেত্রে জটিলতাও তৈরি হতে পারে ট্রেডমার্ক পাওয়ার জন্য। গত ১৯৯৯ সালের ট্রেডমার্ক আইন অনুযায়ী, কোনও নাম বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হলে, তা যদি বিভ্রান্তিকর এবং মানুষের ভাবাবেগের পরিপন্থী হয়, তাহলে স্বত্ব নাও দেওয়া হতে পারে।
অনেকক্ষেত্রে আবার ট্রেডমার্ক দেওয়ার পরে প্রত্যাহার করারও নজির রয়েছে এই দেশে।
ট্রেডমার্ক পাওয়ার নিয়মটা ঠিক কী?
কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি প্রথমে আবেদন করলেই যে ট্রেডমার্ক পাবেন, তা নাও হতে পারে। কারণ, প্রথমে ট্রেডমার্কের জন্য নাম নথিভুক্ত করাতে হয়। তারপর তা একটি জার্নালে প্রকাশ করতে হয়। কেউ যদি আপত্তি তোলেন, তালে তা খতিয়ে দেখে শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রক। তারপর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেই ট্রেডমার্ক দেওয়া হয়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।