সংক্ষিপ্ত
- কর্ণাটকের কমলালেবু বিক্রেতা পেলেন পদ্মশ্রী
- রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে জানলেন সম্মান লাভের কথা
- নিজের গ্রামে 'অক্ষর সান্তা' নামে পরিচিত তিনি
- সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে উন্মাদনা
এবছর ভারত সরকারের পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন হারেকালা হাজাব্বা। কর্ণাটকের ৬৮ বছরের প্রৌঢ় পেশায় একজন ফল বিক্রেতা। কমলালেবু বিক্রি করেই রুজি চলে তাঁর। কিন্তু সাধারণ এক ফল বিক্রেতাকে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান কেন দিতে চলেছে ভারত সরকার তা নিয়ে প্রশ্ন জাগতে পারে আপনাদের অনেকের মনেই। আর সেটা জানতে পারলে এই প্রৌঢ়কে কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছে করবে আপনারাও।
আরো পড়ুন: চিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল শতকের গণ্ডী, মোকাবিলায় বাড়ান হল চন্দ্র নববর্ষের ছুটি
দক্ষিণ কন্নড়ের এই ফল বিক্রেতা রোজগারের সামান্য টাকা জমিয়ে ২০০০ সালে একটি স্কুল স্থাপন করেন তাঁর নিজের গ্রাম নিউপাদাপুতে। পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ঋণ নিয়ে স্কুলের জন্য জমিও কেনেন হারেকালা হাজাব্বা। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এক সমজিদে দরিদ্র শিশুদের পড়িয়ে চলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বেবি পাউডার থেকে ক্যানসার, জনসন অ্যান্ড জনসনের কর্তাকে এবার তলব
ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস অফিসরা পরভীন কাসওয়ান সম্প্রতি হারেকালা হাজাব্বাকে নিয়ে একটি ট্যুইট করেন। তিনিই জানান, রেশনের দোকানে দাঁড়িয়ে থাকার সময় দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানে ভূষিত হওয়ার খবর জানতে পারেন হাজাব্বা। আইএফএস অফিসারের করা এই ট্যুইটে ক্রমেই বেড়ে চলেছে লাইকের সংখ্যা।
জীবনে নিজে কখনও প্রথাগত শিক্ষা পাননি হাজাব্বা, তাই নিজের গ্রামের শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালতে চান তিনি। তাঁর নিজের কথায়, "এক বিদেশি দম্পতি আমাকে কমলালেবুর দাম জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আমি টুলু ও বিয়ারি ছাড়া কোনও ভাষা জানতাম না। তাঁরা চলে গেলে আমার খুব খারাপ লাগে। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, অন্তত আমার গ্রামের বাচ্চাদের যেন এমন পরিস্থিতিতে না পড়তে হয়। আমি বুঝতে পারি, যোগাযোগ একজনের জীবনে কীভাবে প্রগতি আনতে পারে। এবং মানুষকে জুড়তেও পারে।''
কর্ণাটকের নিজের গ্রামে এখন 'অক্ষর সান্তা' নামে পরিচিত হারেকালা হাজাব্বা। সরকার তাঁর গ্রামে উচ্চশিক্ষার জন্য এবার একটি কলেজ তৈরি করে দেবে, সেই স্বপ্নই এখন দেখেন সকলের প্রিয় 'অক্ষয় সান্তা'।