২০০১ সালে সংসদ ভবন হামলার বছর। একই লাইনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী শ্রদ্ধা জানালেন নিহতদের প্রতি। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশে একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। 

২০০১ সালের সংসদ হামলার বর্ষপূর্তিতে প্রাণ হারানো নিরাপত্তা কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য নেতারা। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সংসদ হামলায় প্রাণ দেওয়া নিরাপত্তা কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে। ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলা চালায় পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। সেই ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ৬ নিরাপত্তারক্ষী ও সংসদের ২ নিরাপত্তারক্ষী প্রাণ হারান। সেই ঘটনার আজ ২৫ বছর।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর শ্রদ্ধাঃ

এদিন সকালেই সংসদে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ২০০১ সালের সংসদ ভবনে হামলায় নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি শহিদ স্মরণ নিরবতা পালন করেন। সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়েছে। দেখুন সেই ভিডিও।

Scroll to load tweet…

রাহুল গান্ধীর শ্রদ্ধা

রাহুল গান্ধীও এদিন সংসদে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাকি সংসদ সদস্যদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংসদ ভবন হামলায় নিহত শহিদদে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Scroll to load tweet…

বাকি নেতাদের শ্রদ্ধা

একটি পোস্টে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, "'গণতন্ত্রের মন্দির', ভারতীয় সংসদ ভবন, ২০০১ সালের ঠিক এই দিনেই একটি কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার সাক্ষী হয়েছিল, যা ছিল দেশের সার্বভৌমত্ব, মর্যাদা এবং জনগণের শক্তির উপর এক নৃশংস আক্রমণ। সংসদ ও দেশের মর্যাদা রক্ষায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় প্রাণ দেওয়া অমর বীরদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। জাতি চিরকাল তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। জয় হিন্দ!"

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করিও এই জঘন্য সন্ত্রাসী হামলার সময় ভারতীয় সংসদকে রক্ষা করে দেশের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

"সংসদ ভবনে সন্ত্রাসী হামলার সময় গণতন্ত্রের মন্দিরকে রক্ষা করার জন্য ১৩ ডিসেম্বর ২০০১-এ যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই সাহসীদের স্যালুট। দেশের সুরক্ষার জন্য তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল মনে রাখা হবে," গড়করি বলেন।

সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সও (CRPF) ২০০১ সালের সংসদ সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীতে ৮৮ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল কমলেশ কুমারীর সাহস ও আত্মত্যাগকে স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

"সাহসীদের প্রতি শ্রদ্ধা... ১৩ ডিসেম্বর ২০০১-এ, দিল্লিতে সংসদে সন্ত্রাসী হামলার সময়, ৮৮ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল কমলেশ কুমারী, #CRPF, প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে সন্ত্রাসীদের তাড়া করে এবং তার সহকর্মীদের কাছে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে ক্রমাগত তথ্য দিয়ে অদম্য সাহস ও অতুলনীয় বীরত্বের পরিচয় দেন," CRPF-এর এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে।

"তার সাহসী পদক্ষেপের কারণে, পাঁচজন সন্ত্রাসীই নিহত হয়। এই ঘটনায়, তিনি গুরুতর আহত হন এবং অবশেষে কর্তব্যের বেদিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। তার অদম্য সাহস এবং অসাধারণ বীরত্বের জন্য, তাকে মরণোত্তর অশোক চক্রে ভূষিত করা হয়। এই সাহসী 'বলিদান'-কে #CRPF-এর চিরন্তন স্যালুট," পোস্টে বলা হয়েছে।

১৩ ডিসেম্বর, ২০০১-এ, লস্কর-ই-তৈবা (LeT) এবং জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) জঙ্গি গোষ্ঠীর পাঁচজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নয়াদিল্লির সংসদ চত্বরে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে।

এই হামলায় নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন বেসামরিক নাগরিকসহ প্রায় ১৪ জন নিহত হন। সংসদ অধিবেশন মুলতবি হওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পরে এই সন্ত্রাসী হামলাটি ঘটে এবং তখন প্রায় ১০০ জন সদস্য ভবনের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার, লোকসভা ১৩ ডিসেম্বর, ২০০১-এর সন্ত্রাসী হামলার সময় সংসদকে রক্ষা করতে গিয়ে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী সংসদ নিরাপত্তা পরিষেবা, দিল্লি পুলিশ এবং সিআরপিএফ-এর সাহসী জওয়ানদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানায়। স্পিকার ওম বিড়লা সভায় শ্রদ্ধা নিবেদনের নেতৃত্ব দেন। সভা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবিচল থেকে দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তার দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।