সংক্ষিপ্ত
মা হীরাবেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে পূর্বনির্ধারিত সবকর্মসূচি বাতিল করেন তিনি। স্থগিত রেখেছেন এই রাজ্যসফর। সকাল বেলাই গুজরাট পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হীরাবেনের নিথর দেহ কাঁধে তুলে নেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার ভোররাতে প্রয়াত হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০। মায়ের মৃত্যুর খবর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তারপর দিল্লি থেকে সোজা উড়ে যান আহমেদাবাদে। প্রথমে পৌছে যান মায়ের বাসভবনে। সেখানেই হীরাবেনকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাটিতে মাথা ঠেকিয়েই মাকে শেষ বিদায় দানান তিনি।
মা হীরাবেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে পূর্বনির্ধারিত সবকর্মসূচি বাতিল করেন তিনি। স্থগিত রেখেছেন এই রাজ্যসফর। সকাল বেলাই গুজরাট পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হীরাবেনের নিথর দেহ কাঁধে তুলে নেন প্রধানমন্ত্রী। শেষযাত্রায় প্রতিটি ক্ষণেই ছিল তাঁর উপস্থিতি। শববাহী গাড়িতেও ছিলেন তিনি। গান্ধীনগরের হীরেবেনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মোদী। হীরাবেনের শেষকৃত্য তিনি সম্পন্ন করেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পরিবারের বাকি সদস্যরা। তবে এদিন নরেন্দ্র মোদীর দৃষ্টি ছিল স্থির। মাকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী মাথা নিচু করেই অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
মঙ্গলবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে হীরাবেনকে গুজরাটের একটি নামি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার ভোররাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হন হীরাবেন। হীরাবেনের মৃত্যুতে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে শোক প্রকাশ করেছেন। মোদীর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
হীরাবেন গত ১৮ জুন ১০০ বছর পূর্ণ করেন। তাঁর জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী মোদী গান্ধী নগরে তাঁর বাসভবনে গিয়ে দেখা করেছিলেন। গান্ধীনগরে ছোট ছেলে পঙ্কজ মোদীর কাছেই থাকতেন হীরাবেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন মোদী। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়েও দেখা মায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মোদী। রায়সান গ্রামের ভোট কেন্দ্রে ভোটও দিয়েছিলেন হীরাবেন। পঙ্কজ মোদী তাঁকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ছাড়াও হীরাবেনের আরও পাঁচটি সন্তান রয়েছে। হীরাবেনের জন্ম পালানপুরে। দামোদারদাস মুলচাঁদ মোদীকে বিয়ে করার পরে হীরাবেনের ঠিকানা হয়েছিল ভাবনগর। হীরাবেনের এক সন্তান প্রহ্লাদ মোদী আগেই জানিয়েছিলেন হীরাবেনের যখন ১৫ কি ১৬ বছর বয়স তখনই তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না, সেই কারণে হীরাবেন পড়াশুা করার তেমন সুযোগ পাননি। তবে তিনি চাইতেন তাঁর সন্তানরা যাতে সুশিক্ষিত হয়। আর সেই কারণে সন্তানদের পড়াশুনার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। প্রহ্লাদ মোদী আরও জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। কিন্তু সন্তানের পড়াশুনার জন্য টাকা ধার নিতে নারাজ ছিলেন তাঁর মা। উপার্জনের জন্য সেই সময়ই হীরাবেন ভাবনগরের শিশু ও মহিলাদারে ঘরোয়া প্রতিকার দিয়ে চিকিৎসা করতেন। প্রহ্লাদ মোদী আরও জানিয়েছেন, হীরাবেন কখনই স্কুলে যাননি। কিন্তু স্থানীয় চিকিৎসকরা তাঁর মায়ে রীতিমত সম্মান করতেন।
প্রহ্লাদ মোদী আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দীর্ঘ সময় কাজ করতে পারেন। আর এই জন্য তিনি দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হন। এই দীর্ঘ সময় কাজ ও কঠোর পরিশ্রমের অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছেন তাঁর মায়ের কাছ থেকেই। হীরাবেন প্রথম থেকেই সন্তানদের আত্মনির্ভর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম করতেও অনুপ্রেরণা দিতেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ
'হীরাবা পরিবারের জন্য সংগ্রাম করেছেন'- বললেন অমিত শাহ, শোকপ্রকাশ রাষ্ট্রপতির
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফর স্থগিত, গান্ধীনগরে শেষকৃত্য সম্মন্ন হীরাবেনের
প্রধানমন্ত্রী মোদীর কলকাতা সফর স্থগিত, হীরাবেনের শেষযাত্রায় সামিল তিনি