সংক্ষিপ্ত

১৮০৫ সালে পুরীর জেলা শাসক চার্লস গ্রোম অভ্যন্তরীণ কক্ষে সংরক্ষিত একটি তালিকা তৈরি করেছিল। সেখানে রয়েছে ১৩৩৩ ধরনের গয়নার নাম নথিভুক্ত করা ছিল।

 

চার দশক, প্রায় ৪৬ বছর পরে খুলে গেল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যে মোড়া রত্নভাণ্ডার। যদিও ভিতরের কক্ষের কাজ এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আগেই কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিন্তু বাইরের প্রকোষ্ঠের কাজ শেষ হয়ছিল। সেখান থেকে কী কী পাওয়া গেল? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ মন্দির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুরীর জগন্নাথদেবের রত্নভাণ্ডার নিয়ে প্রাচীর একটি গেজেটেট পত্রিকায় যথেষ্ট তথ্য রয়েছে। সেখান থেকেই জানা যাচ্ছে কোন কোন কক্ষে কী কী রয়েছে।

রবিবার শুভসময় ১টা ২৮ মিনিটে ৮০০ বছরের পুরনো পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিল প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মন্দির সূত্রে আগেই জানা গিয়েছে, রত্নভাণ্ডারে দুটি কক্ষ রয়েছে। এই দুটি কক্ষের ভিতরে রয়েছে জগন্নাথদেব, সুভদ্রা ও বলভদ্রের অলঙ্কারসামগ্রী। এরমধ্যে বাইরের কক্ষে থাকা যাবতীয় অলঙ্কার সামগ্রী মন্দিরের একটি অস্থায়ী স্ট্রংরুমে রাখা হয়েছে। তবে কী কী পাওয়া গেছে সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানাতে চাননি রত্নভাণ্ডারের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। কিন্তু রত্নভাণ্ডারে কী কী থাকতে পারে তা রয়েছে ওড়িশা রিভিউ নামে প্রাচীন একটি গেজেট পত্রিকায়। সেখানেই রয়েছে রত্নভাণ্ডারের অলঙ্কার সামগ্রীর বিস্তারিত একটি তালিকায়। পাশাপাশি ওড়িশার একাধিক ম্যাগাজিন ও ১৯৭৮ সালের তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে সেখানে তিন দেবতার প্রচুর অলঙ্কার রয়েছে।

ওড়িশার একটি প্রাচীর ম্যাগাজিন অনুসারে রাজা অনঙ্গভীম দেব সর্বশক্তিমান দেবতার গয়না তৈরির জন্য ২.৫ লক্ষ মাধ সোনা দান করেছিলেন। ওড়িশা রিভিউ ম্যাগাজিন অনুযায়ী রত্নভাণ্ডারে ১৮০ ধরনের অলঙ্কার রয়েছে। যার মধ্যে ৭৪টি খাঁটি সোনার অলঙ্কার। কিছু কিছু জিনিসের ওজন ১.২ থেকে শুরু করে দেড় কেজি। ভিতরের কক্ষে নিয়মিত দেবতার ব্যবহৃত জিনিস রাখা হয়। যার মধ্যে সোনার পাশাপাশি হিরে, চূনী পান্নার মত মূল্যবান পাথরের অলঙ্কার রয়েছে। রত্নভাণ্ডার ১৮০টি রুপোর গয়না রয়েছে।

১৮০৫ সালে পুরীর জেলা শাসক চার্লস গ্রোম অভ্যন্তরীণ কক্ষে সংরক্ষিত একটি তালিকা তৈরি করেছিল। সেখানে রয়েছে ১৩৩৩ ধরনের গয়নার নাম নথিভুক্ত করা ছিল। গুজব রয়েছে এই কক্ষগুলিতে ১২৮টি স্বর্ণমুদ্রা, ১২৯৭টি রৌপ্য মুদ্রা ও ১০৬টি তামার মুদ্রা রয়েছে। ২৪টি প্রাচীন সোনার মুদ্রাও রয়েছে।

১৯৭৮ সালের একটি সাক্ষাৎকার থেকে জানতে পারা গিয়েছে ভিতরের কক্ষে ১২,৮৮৩ ভরি ওজনের ৪৫৪ ধরনের সোনার অলঙ্কার রয়েছে। ২২১৫৩ ভরি ওজনের ২৯৩ ধরনের রৌপ্য অলঙ্কার ছিল।

এর আগে ১৯৮৫ সালে একটি মেরামতির কাজে জন্য খোলা হয়েছিল রত্নভাণ্ডার। কিন্তু সেই সময় কোনও তালিকা তৈরি হয়নি। তবে মন্দিরের প্রাক্তন প্রশাসন রবীন্দ্র নারায়ণ মিশ্র , যিনি বর্তমান প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, তিনি জানিয়েছেন, সেই সময় কমপক্ষে ১৫টি কাঠের বাক্সে সোনা, রূপা, হীরা, নীলকান্তমণি , মুক্তো , রুবি ও অন্যান্য দুর্লভ জিনিস তিনি দেখেছিলেন।