সংক্ষিপ্ত
সাকিনাকার ঘটনার উত্তাপ জুড়োতে না জুড়োতেই ফের ভয়াবহ ঘটনা মুম্বইয়ের ভিল পারলে এলাকায়। এবার শাশুরির উপর ঁৌন অত্যআচার করে তাকে হত্যার অভিযোগ উঠল তার জামাইয়ের বিরুদ্ধে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময়, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উদ্ধব টাকরে। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে এই রাজ্যে এই ধরণের জঘন্য অপরাধের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। মাত্র দিন কয়েক আগেই এক ৩২ বছর বয়সী মহিলাকে নির্মমভাবে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সামনে এসেছিল। সেই ঘটনার উত্তাপ জুড়োতে না জুড়োতেই জানা গেল আরও এক লজ্জাজনক ঘটনা। এই ক্ষেত্রে শাশুড়িকে হত্যা করা এবং তাঁর গোপনাঙ্গে বাঁশ ঢোকানোর অভিযোগ উঠেছে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। তবে, অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং তাকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের ভিল পারলে এলাকায়। অভিযুক্ত, ৪২ বছর বয়সী ইকবাল আব্বাস শেখ অবশ্য এক দাগী অপরাধী। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ২৮টিরও বেশি অপরাধের মামলা রয়েছে, যার মধ্যে আটটি ক্ষেত্রে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। একটা চেন ছিনতাইয়ের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে গত তিন বছর ধরে সে কারাগারে ছিল। ১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েই সে গিয়েছিল তার শ্বশুর বাড়ি, স্ত্রী লীনার সঙ্গে দেখা করতে।
"
গিয়ে অবশ্য দেখেছিল লীনা মুক্তির অপেক্ষায় বসে নেই। বরং, তিনি ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে তাঁর একটি ১১ মাসের ছেলেও আছে। উপরন্ত তিনি বর্তমানে দ্বিতীয়বার গর্ভবতীও হয়েছেন। এই দেখে রাগে জ্বলে উঠেছিল ইকবাল আব্বাস শেখ। লিনাকে তাঁর স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয় সে। ওইদিন চলে গেলেও, পরের দিনই ফের ইকবার গিয়েছিল লীনার সঙ্গে দেখা করতে। এরকমটা হবে, সন্দেহ করে লীনা ততক্ষণে অবশ্য তাঁর বাপের বাড়ি ছেড়ে দ্বিতীয় স্বামীর কাছে চলে গিয়েছিলেন।
এরপরই ইকবাল, তাঁর শাশুড়ি শামাল শ্যাম শিগাম-এর উপর চড়াও হয়েছিল। বারবার লীনা কোথা গিয়েছেল সেই সম্পর্কে প্রশ্ন করতে থাকে। কিন্তু, দাগী অপরাধী প্রাক্তন জামাইকে মেয়ের অবস্থানের বিষয়ে কিছু জানাতে অস্বীকার করেছিলেন শামাল শ্যাম শিগাম। এরপরই একটি টালি দিয়ে শাশুরির মাথায় আঘাত করেছিল ইকবাল। পুলিশ জানিয়েছে, টালির আঘাতের পর শামাল শ্যাম শিগামকে একটি ছুরি দিয়ে কোপানও হয়। সবশেষে অভিযুক্ত ইকবাল, তাঁর প্রাক্তন শাশুড়ির গোপনাঙ্গে একটি বাঁশ ঢুকিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, খুঁচিয়ে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও বের করে এনেছিল। জামাইয়ের সেই বিকৃত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন প্রাক্তন শাশুড়ি।
এরপরই পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। ছয় দিন আগে অর্থাৎ গত ৭ সেপ্টেম্বর, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে, তার বিরুদ্ধে হত্যার মামলার সঙ্গে সঙ্গে, ভিল পারলে থানার পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির অস্বাভাবিক অপরাধের ধারাও যোগ করেছিল। তবে খোঁজ মিলছিল না অভিযুক্ত ইকবাল শেখের। পরে পুনে শহর থেকে তাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ইকবাল আব্বাস শেখ পরিচয় বদলে নাসিক বা অন্ধ্রপ্রদেশে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছিল।
আরও পড়ুন - 'কাপড় ছুঁয়ো না' - তালিবান-বিরোধী প্রতিবাদে নেটদুনিয়ায় রঙ লাগালেন আফগান সুন্দরিরা, দেখুন
সাকিনাকা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রের আগাড়ি সরকার ইতিমধ্যেই বিরোধী দল বিজেপির চরম সমালোচনার মুখে রয়েছে। গত শুক্রবার, সাকিনাকায় এক ৩২ বছর বয়সী মহিলাকে, একটি দাঁড়িয়ে থাকা টেম্পোর ভিতরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত, এক ৪৫ বছরের ব্যক্তি। নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে একটি লোহার রড দিয়ে সে আঘাত করেছে বলেও জানা গিয়েছে। যার ফলে গুরুতর আহত হয়েছিলেন নির্যাতিতা, পরে তাঁর মৃত্যুও হয়।
শনিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন, ধর্ষণের ঘটনার বিচার হবে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে। নির্যাতিতা ন্যায়বিচার পাবেনই বলে আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তদন্তের কাজও দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই ঘটনার জের সামলাতে না সামলাতেই ফের এই নক্কারজনক ঘটনা, তার সরকারের উপর আরও চাপ বাড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।