সংক্ষিপ্ত
- ঠিক যেন সিনেমার মতো
- পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সুভাষ
- তার স্ত্রী-ও জনরোষ মারা নিহত হন
- একবছরের শিশুকন্য়াকে দত্তক নেয় পুলিশ
এ যেন সিনেমার মতো। খুন করে জেলে গিয়েছে অপরাধী। প্য়ারোলে বাড়ি ফিরে এসে মেয়ের জন্মদিনের অছিলায় পাড়ার বাচ্চাদের নেমন্তন্ন করে সে। তারপর নিজের বাড়িতে ওই ২৩জন শিশুকে পণবন্দি করে। শেষে পুলিশের সঙ্গে গুলিযুদ্ধ হয়। গুলিতে মারা যায় অপরাধী। মুক্তি পায় ২৩ জন শিশু পরের দিন স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়ে মারা যান অপরাধীর স্ত্রী। এদিকে মা-বাবা দুজনেই মারা যাওয়ায় অনাথ হয়ে পড়ে অপরাধীর ১ বছরের শিশুকন্য়া। তারপর, এক পুলিশ অফিসার এসে ওই মেয়েকে দত্তক নিয়ে নিজের মেয়ের মতো মানুষ করতে শুরু করেন। ওই মেয়েকে একদিন পুলিশ অফিসার তৈরি করার সঙ্কল্প নেন।
গত সপ্তাহের ঘটনা। জেল থেকে প্য়ারোলে বেরিয়ে গিয়ে ২৩ জন শিশুকে পণবন্দি করেছিল খুনের অপরাধী সুভাষ বাথাম। উত্তরপ্রদেশের কাসারিয়া গ্রামের ওই ঘটনায় গোটা দেশ শিহরিত হয়। সাধারণত, কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী মুক্তিপণ আদায়ের জন্য় এধরনের পণবন্দি করে থাকে। কিন্তু প্য়ারোলে মুক্ত এক অপরাধী যে এমন কাজ করতে পারে, তা কার্যত কল্পনার অতীত ছিল। মেয়ের জন্মদিনের অছিলায় পাড়ার বাচ্চাদের ডেকে আনে সুভাষ। তারপর আচমকাই তাদের পণবন্দি করে পুলিশের সঙ্গে দরকষাকষি চালাতে থাকে। পুলিশকে সে হুমকি দেয়, বেশি কিছু করলে পুরো বাড়ি সে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেবে। চলতে থাকে দরকষাকষি। শেষে এনএসজি এসে অপারেশন চালিয়ে মুক্ত করে ওই বাচ্চাগুলোকে। পুলিশের সঙ্গে গুলিযুদ্ধে নিহত হয় সুভাষ। এর একদিন পর স্থানীয়দের পাথরের ঘায়ে মারা যান সুভাষের স্ত্রী। অনাথ হয়ে পড়ে তাঁদের এক বছরের শিশুকন্য়া গৌরী।
যাদের হাতে নিহত হয়েছিল সুভাষ, সেই পুলিশই এবার তার মেয়ের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এল। কানপুর রেঞ্জের আইজি মোহিত আগরওয়াল জানান, সুভাষের এক বছরের মেয়ে গৌরীর দেখভালের দায়িত্ব নেবে পুলিশ। জানা গিয়েছে, আইজি সমস্ত নিয়ম মেনেই গৌরীকে দত্তক নিয়েছেন। তাঁর কথায়, "গৌরীর পড়াশোনার খরচ আমরাই চালাব। আমি চাই ও বড় হয়ে একজন আইপিএস অফিসার হোক। ওকে কোনও ভাল বোর্ডিং স্কুলে রেখে পড়াবো। আমি ওকে একেবারে আমার নিজের তত্ত্বাবধানে রাখব।"
একবছরের গৌরী এখন ফারুকাবাদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিলা কনস্টেবলরা ওর দেখাশোনা করছে। সে এখনও জানে না সে তার নতুন পরিবার পেতে চলেছে।