জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মেডিকেল কলেজে বিপুল সংখ্যক মুসলিম ছাত্র ভর্তির বিরুদ্ধে বিজেপি এবং হিন্দু সংগঠনগুলি প্রতিবাদ জানিয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ছাত্রভর্তি মেধার ভিত্তিতেই হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (SMVDIME) চলতি বছরের মেডিকেল ছাত্র ভর্তিতে বিপুল সংখ্যক মুসলিম ছাত্র ভর্তি হওয়ায় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর বিরোধিতা করেছে। রিয়াসি জেলায় বিভিন্ন ডানপন্থী সংগঠন এই বিষয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পর, এখন বিজেপিও তার নীরবতা ভেঙে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সুনীল শর্মার নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল শনিবার লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গে দেখা করে। তারা মেডিকেল কলেজের ভর্তির নিয়ম পর্যালোচনা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়।
বিতর্কের প্রেক্ষাপট কী?
সম্প্রতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রথম এমবিবিএস (MBBS) ছাত্র ভর্তির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫০টি আসনের মধ্যে ৪২টি আসন মুসলিম ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এটাই বিতর্কের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন অভিযোগ করেছে যে বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে আসা ভক্তদের অনুদান এবং দানের টাকায় তৈরি এই প্রতিষ্ঠানে হিন্দুদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তারা এই প্রতিষ্ঠানটিকে 'সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান' (Minorority Institution) হিসেবে ঘোষণা করারও দাবি জানিয়েছে, যাতে সামাজিক ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া যায়।
বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য
এই বিষয়ে, উধমপুর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক আর.এস. পাঠানিয়া তার এক্স (X) প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে বলেছেন, "শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবীর ভক্তদের ভক্তি এবং অনুদান থেকে নির্মিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে মন্দিরের পবিত্রতা প্রতিফলিত করে সম্পূর্ণরূপে কাজ করতে হবে। এর জন্য শ্রাইন বোর্ড আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সংশোধন আনা এখন অপরিহার্য।"
বিক্ষোভ ও দাবি
যুবা রাজপুত সভা, রাষ্ট্রীয় বজরং দল এবং কল্কি আন্দোলনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখান।
রাষ্ট্রীয় বজরং দলের সভাপতি রাকেশ বজরঙ্গি এই বিষয়ে বলেন, "প্রথম ব্যাচের ৫০ জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র ৭ জন হিন্দু এবং একজন শিখ। বাকি ৪২ জন ছাত্র মুসলিম, যা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। হিন্দুদের দানে নির্মিত কলেজে, সেই সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্যই টাকা খরচ করা উচিত। তাই, বর্তমান ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করে হিন্দুদের জন্য পর্যাপ্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা সহ একটি নতুন ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।"
কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা
অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে ছাত্রভর্তি সম্পূর্ণরূপে মেধার (Merit) ভিত্তিতেই হয়েছে। তারা আরও ব্যাখ্যা করেছে যে SMVDIME প্রতিষ্ঠানটিকে এখনও সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া হয়নি, তাই ধর্মীয় ভিত্তিতে কোনো সংরক্ষণ কার্যকর করা সম্ভব নয়।
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, শ্রাইন বোর্ডের চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট গভর্নর যদি অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করেন, তাহলে তারা তাদের আন্দোলন আরও তীব্র করবে।


