সংক্ষিপ্ত

সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা শুনতে পারবেন না যদি তিনি মিডিয়ায় তাকে নিয়ে মন্তব্য করেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলেছে আদালত।

টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাতকার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যেখানে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন। গোটা ঘটনাটি শোনে সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি মোটেও ভালভাবে নেয়নি তারা। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমার ডিভিশন বেঞ্চের সামনে বিষয়টি শুনানির জন্য আসে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে একজন বর্তমান বিচারকের মুলতুবি বিচারিক বিষয়ে প্রেসকে সাক্ষাৎকার দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা শুনতে পারবেন না যদি তিনি মিডিয়ায় তাকে নিয়ে মন্তব্য করেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলেছে আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, "প্রশ্ন হল একজন বিচারক যিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বিবৃতি দেন, তাকে শুনানিতে অংশ নিতে দেওয়া উচিত কিনা।" প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় ইঙ্গিত করেছেন, যদি বিচারপতি বিচারাধীন বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি মামলা শোনার অধিকার হারিয়েছেন।

সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে অভিযোগ উঠেছিল, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুলে নিয়োগের দুর্নীতির মামলা শোনার সময় সেই মামলা নিয়ে টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। যা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, বিচারপতিরা কোনও ভাবেই তাঁদের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন না। উনি যদি সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি ওই মামলা শোনার অধিকার হারিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে নতুন কোনও বিচারপতিকে দায়িত্ব দিতে হবে।

বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত জানায়নি। শুনানিও পিছিয়ে দেয়নি। তারা পশ্চিমবঙ্গে স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির গোটা বিষয়টি বুঝতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ-কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রথমে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের কমিটি স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করেছিল। পরে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী গৌরব আগরওয়ালকে ‘আদালতবন্ধু’ হিসাবে নিয়োগ করেছে। বাগ-কমিটির ১০ খণ্ডের বিশাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তার সারাংশ তৈরি করতে বলা হয়েছে আগরওয়ালকে।

এ দিকে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, কলকাতা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ব্যক্তিগত ভাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে জেনে নেবেন, তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কি না। তার পরে তা সুপ্রিম কোর্টে জানাবেন। এ বিষয়ে শুক্রবার শুনানি হওয়ার কথা। তবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কলকাতা হাই কোর্টে স্কুলে নিয়োগের দুর্নীতির মামলার শুনানি থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে, তিনি এই মামলায় যে সব রায় দিয়েছেন, তার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন উঠে গেল।