সংক্ষিপ্ত

Kerala Woman Extreme Fasting: জল খেয়েই ডায়েটিং প্ল্যান, তরুণীর সঙ্গে ঘটল ভয়ঙ্কর কাণ্ড

কোজিখোড়: ডায়েটের নামে শুধুমাত্র জল খেয়েই কাটছিলো দিন। টানা পাঁচ মাস খাবারের পরিবর্তে শুধু জল খেয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন এক তরুণী। চিকিৎসকদের পরামর্শ না নিয়ে ইচ্ছেমতো ডায়েটের নেশা কাড়ল কেরলের এক তরুণীর প্রাণ। ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের কান্নুরে (Kannur)। মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী পাঁচ মাস ধরে কেবল জল খেয়ে ডায়েট করার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন (Kerala News)। জানা গিয়েছে, গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করার ১২ দিন আগে তাঁর ওজন ছিল মাত্র ২৪ কেজি। শুধু তাই নয়, তাঁর পাকস্থলীতে এক ফোঁটা খাবারও পাওয়া যায়নি। দাঁড়িয়েও থাকার ক্ষমতাও হারিয়েছিলেন তিনি (Anorexia Nervosa)। মৃত তরুণীর নাম, শ্রীনন্দা। কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছিলো ওই তরুণী।

মৃত ওই তরুণীর চিকিৎসক নাগেশ মনোহর প্রভু জানান, পাঁচমাস ধরে জল খাওয়ার কারণে সে দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা (Anorexia Nervosa) হারিয়ে ফেলে। তাঁর রক্তচাপ এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে গিয়েছিল, পাশাপাশি ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়েছিল। এই অবস্থায় তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়, কিন্তু ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যুর কাছে হার মানেন ওই তরুণী (Death News)।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তরুণীর মধ্যে রোগা হওয়ার প্রবণতা এতটাই (Anorexia Nervosa) বৃদ্ধি পেয়েছিল যে তিনি ‘ইটিং ডিজ়অর্ডার’ এ ভুগছিলেন। সমাজ মাধ্যমের প্রভাবেই তিনি এ ধরনের আচরণ শুরু করেন, এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি বুঝতে পারেননি। খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে কেবল জল খেয়ে থাকার ফলে তিনি ‘অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা’ রোগে আক্রান্ত হন, যা পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যু ডেকে আনে (Diet)।

জানা গিয়েছো, 'অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা' হচ্ছে একটি মানসিক রোগ (Life Style)। যেখানে রোগী নিজেদের চেহারা এবং ওজন নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন থাকেন। তাঁরা খাবার দেখলেও খেতে পারেন না এবং নিজেদের শরীর মোটা হওয়ার ভয়ে সবসময় আতঙ্কিত থাকেন। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই রোগে আক্রান্তরা নিজেদের চেহারা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। খাবার খাওয়ার পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেন। এভাবে রোগীর মধ্যে উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। সময়মতো বিষয়টি নজরে না আসলে এই রোগের পরিণতি ভয়ঙ্কর বলেও জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।

শুধু তাই নয়, এই ধরনের রোগীদের শরীরে নানা ধরনের শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়। অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে স্ত্রী হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়, ফলে ঋতুস্রাব অনিয়মিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাদের লিভারে জটিলতা দেখা দিতে পারে। ত্বক কুঁচকে যায় এবং অকালেই বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়াও, চোখের দৃষ্টি দুর্বল হয়ে যায় ও হাড়ের দ্রুত ক্ষয় শুরু হয় (Health)।

চিকিৎসকদের মতে, এমন রোগীদের বাঁচাতে হলে প্রথমে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। হঠাৎ করে বেশি খাবার দেওয়া বিপদজনক হতে পারে, তাই ধীরে ধীরে তরল ডায়েট শুরু করা উচিত। এরপর শরীর বুঝে ধীরে ধীরে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া যেতে পারে। এভাবে সচেতনতা ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।