সংক্ষিপ্ত

পুরুষ কর্মীরা এগিয়ে এসে ওই মা-কে নিজের ৪০ দিনের শিশু সহ কম-জায়গার সিটে পেছনের দিকে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন। নিরুপায় মহিলা উঠে যেতে না চাইলে তাঁকে হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয় ইন্ডিগো বিমানের পুরুষ-কর্মীদের তরফে।

বিমানে নবজাতককে নিয়ে যেতে হলে, বিশেষ বিশেষ বিমানের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম থাকে, সেই বিবিধ নিয়মাবলি পড়ে মাস তিনেক আগে ইন্ডিগো বিমান সংস্থাকেই শিশু নিয়ে যাত্রা করার জন্য ‘নিরাপদ’ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ভারতের বিখ্যাত মহিলা-সাংবাদিক। তাঁর সন্তানের বয়স তখন মাত্র ৪০ দিন। সেসময়ে শিশু নিয়ে যাত্রা করার জন্য ইন্ডিগো বিমান সংস্থা তাঁকে পেছনের সিট বেছে নিতে বলেছিল এই কারণ দেখিয়ে যে, ‘সামনের সিটে আওয়াজ খুব বেশি হয় এবং হাওয়ার চাপ খুব বেশি থাকে, যা একজন নবজাতকের পক্ষে অনুকূল নয়।’ তখন তিনি অন্যান্য সংস্থার ওয়েবসাইট ঘেঁটে জানতে পারেন যে, এগুলো একজন শিশুসহ মা-কে সামনে বসতে না দেওয়ার অজুহাত মাত্র। কিন্তু, সামনের সিটে যেহেতু বসার জায়গা বেশি থাকে, তাই শিশুকে নিয়ে তাঁর ওখানেই বসা জরুরি ছিল, ফলে তিনি গ্রাহক পরিষেবার কাছে অভিযোগ জানান এবং তখন ইন্ডিগো সংস্থা তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি শুভেচ্ছা-বার্তা লেখা কার্ড এবং ফুলের তোড়া পাঠায়। কিন্তু, ফের মার্চ মাসে ওই একই সংস্থার দ্বারা আবার হেনস্থার স্বীকার হলেন ওই মহিলা।

দ্বিতীয় ঘটনাটির আগেও তিনি যথেষ্ট ‘নিরাপদ’ বোধ করেই গোয়া যাওয়ার জন্য ইন্ডিগো বিমানের সামনের সিটের টিকিট কেটেছিলেন, বেশি টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই বিমান ছাড়ার আগেই বাধল গণ্ডগোল। শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময়েই ছুটে এলেন বিমানের পুরুষ-কর্মীরা। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে, শিশু-সন্তানকে নিয়ে কিছুতেই সামনের সিটে বসতে পারবেন না ওই সাংবাদিক। এর যুক্তি হিসেবে তাঁরা বলেন যে, সামনের সিটে শিশুর জন্য অক্সিজেন মাস্ক থাকে না, তাই এটা ‘বিপজ্জনক’। বিপদের মুখে পড়ে ওই কর্মীদের নিজের আগের যাত্রার টিকিট দেখাতে যান ওই মহিলা, কিন্তু, তাঁর অভিযোগ, কর্তব্যরত কর্মীরা তাঁর কোনও টিকিট তো দেখতেই চাননি, তার ওপর তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন যে, তিনি শিশুকে নিয়ে পেছনের সিটে গিয়ে না বসলে তাঁরা বিমান চালুই করবেন না।

সামনের সিটে বসার জন্য বাড়তি টাকা দেওয়া সত্ত্বেও, পেছনের সিটে ছোট জায়গার মধ্যে শিশুকে নিয়ে গিয়ে বসতে বাধ্য হন ওই সাংবাদিক। অন্যান্য যাত্রীদের অসুবিধা এড়াতে কোনও কর্মীর সঙ্গে আর তর্ক বাড়াননি তিনি। এবারেও ইন্ডিগো বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে এই চূড়ান্ত হেনস্থার ঘটনার পর বিমানবন্দরে তাঁকে ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য একটি ফুলের তোড়া দেওয়া হয়। কিন্তু, তিনি নিজের প্রশ্নে অটল থাকেন যে, কেন শিশু নিয়ে সামনের সিটে বসা যাবে না, সেটা অজুহাত ছাড়া সত্যিকারের যুক্তি দেখিয়ে বলতে পারছে না ইন্ডিগো? এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য যদি কোনও বাচ্চা-হীন শান্ত স্পেশাল সিট থেকে থাকে, সেটার জন্যেও কেন বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে আলাদা করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে না? কারণ, সন্তান নিয়ে যেকোনও অভিভাবকই বিমানে যাতায়াত করতে পারেন এবং তাঁদের বড় জায়গাসম্পন্ন সিটের প্রয়োজন হতেই পারে। তাঁর এই প্রশ্নের জবাবে ইন্ডিগো সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘আমরা সমস্যাটি বিবেচনা করেছি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা এড়াতে একটি সুসংজ্ঞায়িত শিশু নীতি তৈরি করার জন্য কাজ করছি। ইন্ডিগো তার মূল্যবান গ্রাহকদের চাহিদা সম্পর্কে সচেতন এবং সকলকে একটি সৌজন্যমূলক এবং ঝামেলামুক্ত যাত্রা দেওয়ার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন-
‘ধর্ম’গুরু, নাকি ‘কাম’গুরু? খালিস্তানপন্থী বিবাহিত নেতা অমৃতপাল সিং-এর অশ্লীল ভিডিয়ো চ্যাটে যৌন আবেদনের কোনও সীমা নেই
গীতায় হাত দিয়ে কী বলতে পারেন কুন্তল ঘোষ? তাপস মণ্ডলের সম্পর্কে উসকে দিলেন মৌসুমি কয়ালের নাম
লক্ষ্মীবারেও সহায় হল না অনুব্রত মণ্ডলের জামিন-ভাগ্য, দিল্লি হাইকোর্টে ফের পিছিয়ে গেল শুনানির দিন