সংক্ষিপ্ত
- বিশ্বে করোনা আক্রান্ত দেশ হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল
- বিশ্বের কবরস্থান হিসেবে ব্রাজিল আখ্যায়িত করা হচ্ছে
- অথচ দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই প্রেসিডেন্টের
- ফলে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্রমেই বাড়ছে ক্ষোভ
করোনাভাইরাসে জর্জরিত বিশ্বে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ব্রাজিল। দিনে দিনে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কেবল বাড়ছেই না অস্বভাবিক হারে ঘটছে সেই বৃদ্ধি। আমেরিকার দৈনিক মৃত্যু মিছিলকে এখন ছাপিয়ে চলে যাচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশটি। বিশ্বের কবরস্থান হিসেবে ব্রাজিল আখ্যায়িত করছে দুনিয়ার একাধিক মিডিয়া হাউস। অথচ তা নিয়ে কোনোও মাথা ব্যথা নেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর। ফলে করোনা মোকাবেলায় ব্রাজিল সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ সেখানকার স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
ব্রাজিলে দ্রুত সংক্রমণ বাড়লেও একেবারেই লকডাউনের পক্ষপাতী নন প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবকিছু স্বাভাবিক রাখার পক্ষপাতী বলসোনারো। আর প্রেসিডেন্টের এই মনোভাবকে ঘিরেই এই কার্যত দুভাগে বিভক্ত লাতিন আমেরিকার এই দেশ।
করোনা মোকাবিলা নিয়ে ব্রাজিল সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য রিড ডি জেনিরোর বিখ্যাত কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে বৃহস্পতিবার প্রতীকী কবর খুঁড়লেন। যার মাধ্যমে তারা স্মরণ করছেন করোনা মহামারীতে প্রাণ হারান মানুষদের। পাশাপাশ করোনা মোকাবেলায় সরকারের ‘অক্ষমতা’র কথা ও মৃত্যুর ভয়াবহতাও এভাবে তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা।
মহামারীর বিশ্বে এবার সুখবর শোনাল মডার্না, জুলাইতে হতে চলেছে ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পরীক্ষা
আক্রান্তের সংখ্যা দিল্লিতে ছাড়াল ৩৪ হাজারের গণ্ডি, আনলক একে ফের তালা পড়ল জামা মসজিদের গেটে
এই কর্মকাণ্ডের আয়োজক আন্তোনিও কার্লোস কস্তা বলেন,‘আমাদের প্রেসিডেন্ট এখনো বুঝতে পারেননি যে এটি ব্রাজিলের ইতিহাসে অন্যতম একটি নাটকীয় সংকট, করোনা ভাইরাসে মারা যাওয়া পরিবারগুলোতে আজ শোক স্তব্ধ। মানুষের বেকারত্ব ও ক্ষুধা বাড়ছে।’
বিশ্বে মোট আক্রান্তের দিক থেকে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষের। একটি গবেষণা বলছে, আগস্টের শুরু পর্যন্ত সেখানে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। খু শীগ্রই ব্রাজিল মৃত্যু মিছিলে আমেরিকাকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাও পাওলোর সেমিটেরিরও ডি ভিলা ফরমোসা সমাধিক্ষেত্রের যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে সারি সারি কবর খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে যে কারো আতঙ্কে বুক কেঁপে ওঠার কথা। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, দেশটিতে বছরে যে পরিমাণ মানুষ মারা যান তার চেয়ে শতকরা ৫০ ভাগ বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন করোনা ভাইরাসে। এই অবস্থায় ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই)সতর্ক করেছে, যদি ব্রাজিল লকডাউন কঠোর না করে তাহলে আগস্ট নাগাদ সেখানে মারা যেতে পারেন সোয়া এক লাখ মানুষ। আইএইচএমই-এর ড. ক্রিস্টোফর মারে বলেছেন, ব্রাজিলকে অবশ্যই চীনের উহান মডেল, ইতালি, স্পেন ও নিউ ইয়র্কের মডেল অনুসরণ কতে হবে। মহামারি নিয়ন্ত্রণ এবং সংক্রমণ কমাতে তাদেরকে এটা করতেই হবে। দেশটিতে ইতিমধ্যে চিকিৎসক, কফিন ও কবরস্থানের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।