আফগানিস্তান দখলের আনন্দে যেন শিশু হয়ে গেল তালিবানরা। ভাইরাল ভিডিওয় তাদের দেখা গেল খেলনা গাড়ি, ঘোড়ায় চড়তে এবং অফিসের মধ্যেই নাচগান করতে।  

তালিবান - নামটা শুনলেই যেন শিড়দাড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। কঠোর অনুশাসন, এটা করা যাবে না, ওটা নিষিদ্ধ, সেটা করলে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত - সব মিলিয়ে এক দমবন্ধকর পরিস্থিতি, বিশেষ করে মহিলাদের দুরবস্থার কথা তো বলাই বাহুল্য। সেই তালিবানদের মধ্য়েও যে শিশু লুকিয়ে আছে, তার প্রমাণ মিলল ২০ বছর পর ফের আফগানিস্তানে তাদের শাসন কায়েম হওয়ার ঠিক পরই। যে হাতগুলো শুধুই বন্দুক ধরে, রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়, যে প্রাণগুলিতে কোনও দয়া মায়ার লেশ মাত্র পাওয়া যায় না, তারাই ক্ষমতা দখলের আনন্দে একেবারে শিশুসূলভ আনন্দে মেতে উঠল। বিনোদন পার্কে গিয়ে তাদের দেখা গেল খেলনা গাড়ি, খেলনা ঘোড়া চড়তে। দেখা গেল সরকারি অফিসের ভিতরেই প্রাণখুলে নেচে উঠতে।

গত রবিবারই রাজধানী শহর কাবুলের পতন ঘটেছে। তারপরদিনই তালিবান যোদ্ধাদের দেখা গেল শহরের এক বিনোদন পার্কে। রয়টার্সের কাবুলের প্রতিনিধি হামিদ শালিজি এদিন টুইটারে তালিবানদের সেই শিশুসূলভ আনন্দে মেতে ওঠার ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেই ভিডিওতে তালিবান যোদ্ধাদের দেখা যাচ্ছে বৈদ্যুতিক বাম্পার গাড়িতে চড়তে। অন্য এক ভিডিওয় তাদের দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট খেলনা ঘোড়ায় চড়তে। তখন তাদের দেখে কে বলবে, এরাই নির্দ্বিধায় নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করে, মহিলাদের উপর চাপিয়ে দেয় কঠোর থেকে কঠোরতম শাসন। তবে মজার বিষয় হল, এইসব জয়রাইডগুলি উফভোগ করার সময়ও তারা কিন্তু গোলাবারুদ ত্যাগ করেনি। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিনোদন পার্কেও বেশ কয়েকজন তালিবান সদস্য এসেছেন তাদের রাইফেল সঙ্গে করেই। 

Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…

আবার একটি ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে আফগান জাতীয় বাহিনীর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া এক সামরিক কপ্টারে করে হাওয়া খেতে বেরিয়েছে তালিবানরা।

Scroll to load tweet…

আবার একটি জিমে গিয়ে মনের আনন্দে কসরতও করতেস দেখা গিয়েছে তাদের।

Scroll to load tweet…

তবে কাবুল দখল করার আগেও তালিবানদের এরকম শিশুসুলভ আচরণ দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহেই আফগান জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রাক্তন প্রোগ্রাম ডিরেক্টর তথা মুখপাত্র কবির হাকমল একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। সেই ভিডিওতে এক প্রাদেশিক রাজধানী দখলের পর, সেই প্রাদেশিক রাজধানীর প্রশাসনিক ভবনের ভিতর রীতিমতো গান চালিয়ে আনন্দে কোমর গুলিয়ে নাচতে দেখা গিয়েছিল এক তালিবান যোদ্ধাকে। হাকমল একে শাসন করার নতুন ধরণ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, তালিবানদের কাছ থেকে শাসন ব্যবস্থায় এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। 

Scroll to load tweet…

তবে, বর্তমানে তালিবানরা ক্ষমতা দখলেয় বহু ভিডিওই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ভিডিওই কিন্তু উপরের ভিডিওগুলির মতো মজার বা হালকা মেজাজের নয়। যেমন, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন তালেবান যোদ্ধা কাবুলের রাস্তায় মাইক্রোফোন হাতে সাংবাদিকের ভূমিকা পালন করছে। শহরের মানুষদের তারা বলছে 'তালেবানি শাসনের' অধীনে তাঁরা কতটা খুশি তা সেই মাইক্রোফোনে জানাতে। আরও ভয়ের বিষয় হল যে, সেই সাংবাদিক তালিবানের এক সঙ্গীর হাতে রয়েছে একটি বন্দুকও। যদিও তার নল ওঁচানো নেই, মাটির দিকেই মুখ করা রয়েছে। 

আরও পড়ুন - বয়সের বাছ-বিচার নেই, ৩৬৫ জন মহিলাকে ডেট করাই লক্ষ্য এই যুবকের - বাকি আর ৩০টি

আরও পড়ুন - Viral Video - বিমানের চাকা ধরেই তালিবানভূমি ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা, মাঝ আকাশ থেকে পড়ে হল মৃত্যু, দেখুন

আরও পড়ুন - Afghanistan - তালিবানি ভয়ে দূতাবাসের ছাদ দিয়ে উড়ে পালালো মার্কিনীরা, কাবুল মনে করালো সাইগনকে

Scroll to load tweet…
Scroll to load tweet…

এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে উত্তরের শহর মাজার-ই-শরিফে, মার্কিন মিত্র তথা আফগান বাহিনীর জেনারেল তথা আফগান ওয়ারলর্ড জেনারেল আবদুল রশিদ দোস্তুম-এর বাড়িতে লুটপাটের ভিডিও। ভিডিও ক্লিপে সশস্ত্র তালিবান সদস্যদের দেখা যাচ্ছে, দস্তুমের বাড়িতে জাঁকিয়ে বসে একটি তাকের ভিতর থেকে একটি সোনার পানীয় সেট বের করে আনতে। আরেকটি ভিডিওতে জেনারেল দোস্তুমের বাড়ির ভিতরে তালিবানদের খাওয়া -দাওয়া করতেও দেখা গিয়েছে। ভাইরাল হয়েছে বন্দুক হাতে তাদের আফগান প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ এবং দেশের সংসদ ভবনে ঢুকে পড়ার ছবি-ভিডিও-ও।

YouTube video player