সংক্ষিপ্ত
- করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে তছনছ গোটা দনিয়া
- পরিস্থিতি সামলাতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন
- এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের
- অথচ তারা কিছুই জানতেন না বলে দাবি এক দম্পতির
প্রথমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু। তারপর আসতে আসতে তা মহামারীর রূপ নিয়েছে। গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ২৭ লক্ষের গণ্ডি। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৯০ হাজার। মহামারীর দাপটে ছাড়খাড় বিশ্বের একাধিক উন্নত দেশ। পিছিয়ে নেই ব্রিটেনও। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৮ হাজারের বেশি। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছে ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্বের একাধিক দেশে চলছে লকডাউন। কিন্তু এসব কিছুই কানে পৌঁছয়নি এক ব্রিটিশ দম্পতির। করোনাভাইরাস নামে পৃথিবীতে কোনও বস্তু রয়েছে তা সম্পর্কে একেবারেই অবগত ছিলেন না তাঁরা।
করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। আক্রান্ত রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স চার্লসও। পরিস্থিতি সামলাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এসব থেকে একেবারে বেখবর ছিলেন ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা রায়ান ওসবার্ন ও তাঁর স্ত্রী এলিনা ম্যানিহেটি। ২০১৭ সালে চাকরি ছেড়ে বিশ্বভ্রমণের সিদ্ধান্ত মিয়েছিলেন এই দম্পতি। সম্প্রতি তারা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের একটি ডকে নিজেদের ছোট্ট নৌকাটি ভেড়ানোর চেষ্টা করেন, আর তখনই তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল একরাশ বিস্ময়। জানতে পারেন বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করা মহামারী করোনাভাইরাস সম্পর্কে। এর আগ পর্যন্ত ভাইরাসটি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি।
তৃতীয় বিশ্বের চেয়েও খারাপ পরিণতির পথে আমেরিকা, রেকর্ড গড়ে একদিনে মৃত্যু ৩ হাজার ছাড়াল
করোনাকে হারাতে সামাজিক দূরত্বের পাঠ শিখিয়েছে গ্রামীণ ভারত, পঞ্জায়েত দিবসে মোদীর মুখে নতুন স্তুতি
করোনা যুদ্ধ জিতে নজির গড়ে বাড়ি ফিরলেন ৯২ বছরের বৃদ্ধা, হেরে গেল ৪ মাসের ছোট্ট শিশু
রায়ান ওসবার্ন ও এলিনা ম্যানিহেটি দুজনেই ঘুরতে ভালবাসেন।তাই বাধা—ধরা জীবনে তাঁদের মন টেকে না। তাই ছোট নৌকা নিয়ে দুজনে বিশ্বভ্রমণে বেরোন। এই সময়ে এই দম্পতি তাদের পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেননি এবং পরিবারকে বলে দিয়েছিলেন ভ্রমণের সময় তারা কোনোও 'খারাপ সংবাদ' পেতে চান না।আর তাই এতগুলো দিন পেরিয়ে গেলেও করোনার প্রকোপ সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানতে পারেননি।
ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ দুজনে বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। তার পর থেকে দুজনে ছিলেন গোটা দুনিয়া থেকে আলাদা হয়ে। বিশ্বের কোনও খবরই তাঁরা রাখেননি। এদিকে এলিনার জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে উত্তর ইতালির লম্বার্ডি এলাকায়।করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলোর মধ্যে আবার লম্বার্ডি অন্যতম। নিজের ছোটবেলার কথা ভেবে তাই এখন মন খারাপ এলিনার। তিনি জানান, 'ফেব্রুয়ারিতে আমরা শুনেছিলাম চিনে একটি ভাইরাস রয়েছে, ওই ভাইরাসের প্রকোপ মাসখানেকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এবং এটি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে পৌঁছুবে না। তবে আমরা যখন ক্যারিবিয়ান উপকূলে পৌঁছেছিলাম তখনই বুঝতে পারলাম যে এটি এখন পুরো বিশ্বে সংক্রামিত হয়েছে।'
ক্যারিবায়ন বন্দরে এসে পৌঁছতেই রায়ানও এলিনা জানতে পারেন সারা বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে করোনাভাইরাস। তবে ২৫ দিনের সমুদ্র ভ্রমণে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে সামান্যতম যোগাযোগ না থাকায় এইদম্পতির মারণ ভাইরাসটির সসম্পর্কে কোনোও ধারণাই ছিল না।