সংক্ষিপ্ত
২০৩০ সালেই মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাতে চায় নাসা (NASA)। আর এই মঙ্গল অভিযানে (Mars Mission) ভ্রমণের সময় অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে কানাডার (Canada) বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার।
ভারতের মঙ্গলযান, মঙ্গলগ্রহের (The Mars) কক্ষপথে পৌঁছতে সময় নিয়েছিল ২৯৮ দিন। নাসার (NASA) মহাকাশযান মঙ্গলে পৌঁছতে সময় নিয়েছিল ৭ মাস মতো। আর লাল গ্রহে মানুষ পাঠাতে প্রায় ৫০০ দিন লাগবে, বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ চর্চা কেন্দ্রটি। তবে, এই সময়টা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে কানাডার (Canada) ইঞ্জিনিয়ারদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার। তাদের দাবি, তাঁরা একটি লেজার-ভিত্তিক সিস্টেম তৈরি করেছেন, যা পৃথিবী থেকে মঙ্গলে পৌঁছনোর সময় মাত্র ৪৫ দিনে নামিয়ে আনতে পারে।
কানাডার মন্ট্রিলের ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির (McGill University in Montreal) ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, তারা একটি তাপীয় লেজার প্রপালশন সিস্টেম (Thermal Laser Propulsion System) তৈরি করেছেন, যাতে হাইড্রোজেন জ্বালানীকে গরম করতে ব্যবহার করা হয় একটি লেজার। পৃথিবী থেকে নিক্ষেপ করা বড়মাপের লেজার মহাকাশযানের ফটোভোলটাইক অ্যারেতে শক্তি সরবরাহ করবে। যা থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন হবে এবং তাই দিয়েই চলবে মহাকাশ যানটি। পৃথিবীর কাছাকাছি থাকাকালীন মহাকাশযানটি অত্যন্ত দ্রুত গতি লাভ করবে। পরের একমাসের জন্য মঙ্গল গ্রহের দিকে দৌড়াবে। তারপর মঙ্গলে অবতরণের জন্য, মহাকাশযান থেকে ল্যান্ডার অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং পরবর্তী উৎক্ষেপণের জন্য বাকি অংশটি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে।
আরও পড়ুন - Life on Venus: শুক্র গ্রহে কি প্রাণ আছে, বিজ্ঞানীদের দাবি লুকিয়ে আছে মেঘের মধ্যে
আরও পড়ুন - Spacecraft Touches Sun First Time: সূর্যকে ছুঁল মানুষ, প্রথমবার 'করোনা'য় প্রবেশ
এর আগেও মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছানোর কথা ভাবা হয়েছিল। তবে, সেটা ছিল ফিশন-চালিত রকেটের (Fission-powered Rockets) মাধ্যমে, যাতে রেডিওলজিক্যাল ঝুঁকি ছিল। তবে, ডিরেক্ট এনার্জি প্রপালসন বা নির্দেশিত শক্তি চালনা পদ্ধতি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি থাকে না। কানাডার ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, এই সিস্টেমটি সৌরজগতের মধ্যে দ্রুত পরিবহনের পথ খুলে দিতে পারে। তবে, ডিরেক্ট এনার্জি প্রপালসনের ধারণা নতুন নয়। সম্প্রতি ব্রেকথ্রু স্টারশট (Breakthrough Starshot) প্রকল্পেও এই প্রয়ুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে লেজার ব্যবহার করে আপেক্ষিক গতিতে ক্ষুদ্রতম আলো-ভিত্তিক তদন্ত অভিযান পাঠানো হচ্ছে আমাদের নিকটতম স্টার সিস্টেম, প্রক্সিমা সেন্টৌরি-তে।
মহাকাশ অভিযানে এখন পৃথিবীর নজর মঙ্গল গ্রহে। এবার লাল গ্রহে মানুষ পাঠাতে চায় নাসা। তবে, তা করার জন্য আগে চাঁদে ফিরে যেতে চায় তারা। সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে (Washington DC) অনুষ্ঠিত 'হিউম্যানস টু মার্স সামিটে' (Humans to Mars Summit) নাসা তাদের চার-পর্যায়ের মঙ্গল অভিযান পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দশকে অভিযানের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা একাধিক চন্দ্র অভিযান করে সেখানে একটি বাসস্থান নির্মাণ করবে। চাঁদই হবে মানুষের মহাকাশ অভিযানের বেসক্যাম্প। সেখানে প্রকৃত ডিপ স্পেস ট্রান্সপোর্ট রোভারও (Deep Space Transport Rover) পাঠানো হবে, যা পরবর্তীতে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হবে। ২০২৭ সালে এক বছরের জন্য মঙ্গলে জীবনের একটি সিমুলেশন পরিচালিত হবে। ২০৩০ সালের পর শুরু হবে অভিযানের তৃতীয় এবং চতুর্থ পর্যায়।