সংক্ষিপ্ত

ভারতে হামলার জন্য নতুন জঙ্গি-ভাইরাস তৈরি করছে পাকিস্তান

কাবুল গুরুদ্বারে হামলার পর এমন দাবিই করা হয়েছিল

তবে এদিন তাদের বিরুদ্ধে বড় সাফল্য এল

আইএসকেপি নেতা তথা হামলার মূল চক্রি গ্রেফতার হল

 

শনিবার আফগান সুরক্ষা বাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে, গত ২৫ মার্চ কাবুল-এর গুরুদ্বারে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল, ইসলামিক স্টেট  খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি)-এর তথাকথিত আমির মাওলায়ি আবদুল্লা ওরফে আসলাম ফারুকি-কে। পাক নাগরিক মাওলায়ি আবদুল্লা-র মাধ্যমেই আইএসকেপি-র মাধ্যমে পাকিস্তান নতুন করে ভারতের উপর সন্ত্রাসবাদের ভাইরাস ছড়াতে চাইছে বলে দাবি ভারতীয় সেনাবাহিনীর। কাজেই বলাই বাহুল্য, ফারুকি-র গ্রেফতারি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একসময় লস্কর-ই-তৈবা ও পরে তেহরিক-ই-তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিল এই ফারুকি। গত বছর এপ্রিল মাসে মাওলয়ি জিয়া-উল-হক ওরফে আবু ওমর খোরসানি-র জায়গায় ফারুকি-কে আইএসকেপি-র প্রধান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। মামোজাই উপজাতির মানুষ ফারুকির বাড়ি পাক-আফগান সীমান্তের এবং ওরাকজাই এজেন্সি অঞ্চলে। কাবুল ও দিল্লির সন্ত্রাসবিরোধী বিভাগের কর্তাদের মতে, আফগানিস্তানের হাক্কানি নেটওয়ার্ক এবং লস্কর-ই-তৈবার নির্দেশেই মাওলায়ি ফারুকী কাবুলের শোর বাজারের ওই গুরুদ্বারে হামলা চালিয়েছিল।

আরও পড়ুন - করোনা আতঙ্কের মধ্যেই রক্তাক্ত গুরুদ্বার, বন্দুকবাজের হামলায় মৃত অন্তত ১১

ওই হামলায় শিখ সম্প্রদায়ের ২১ জন নিরীহ নারী-পুরুষ'এর মৃত্যু হয়। হামলার কাজে লাগানো হয়েছিল ভারতের কেরল রাজ্যের কাশারগড়ের বাসিন্দা মহসিন তিকারিপুর-সহ তিনজন উর্দু-পাঞ্জাবি ভাষী জঙ্গিকে। হামলার সময় মহসিন-এর মৃত্য়ু হয়েছিল। পরে কেরলে তাঁর মা-এর কাছে ছেলের মৃত্যুসংবাদ পাঠায় আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী। মৃত্য়ু হয় অপর দুই জঙ্গি হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিন ও আরেক ভারতীয় জঙ্গি তিহান সিং-এর।

আরও পড়ুন - কাবুল হামলায় এবার ভারতীয় যোগ, আত্মঘাতী আইএস জঙ্গি আসলে কেরলের বাসিন্দা

তবে ওই দিন আইএসকেপি-র হামলার মূল লক্ষ্য কাবুল-এর ভারতীয় দূতাবাস, এমনটাই দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের। তারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে তালিবানদের সঙ্গে শান্তি-চুক্তি করছে মার্কিনিরা। এই অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় এলাকার স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে মার্কিন সেনারা আফগান মাটি ছাড়লে সেই দেশের পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা নিক ভারত। ঘটনাক্রম সেই দিকেই এগোচ্ছে। আর পাকিস্তান এবং তালিবান দুইপক্ষই চায় আফগানিস্তানের নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ থেকে ভারতকে দূরে রাখতে। সেই কারণেই শুধু কাবুল নয়, জালালাবাদ, হেরাত এবং কান্দাহারে-এও ভারতীয় দূতাবাস-এ হামলা হওয়ার হুমকি রয়েছে। ভারত অবশ্য সুরক্ষার স্বার্থে আপাতত ওই দূতাবাসগুলি থেকে কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন - বিস্ফোরণে কাঁপছে মঞ্চ, চলছে গুলি, তারমধ্যেই শপথ নিলেন আফগান রাষ্ট্রপতি, দেখুন ভিডিও

আফগান নিরাপত্তা বাহিনী মনে করছে ফারুকি-কে চাপ দিলে তার গোষ্ঠীর অন্যান্য নেতাদেরও খোঁজ পাওয়া যাবে। নাঙ্গরহর, নূরস্তান, কুনার, কাবুল এবং কান্দাহার এলাকা জুড়ে আইএসকেপি সদস্যদের জাল বিছিয়ে রয়েছে বলে তাদের অনুমমান। তবে নিরীহ শিখদের উপর হামলার নির্দেশ আসলে কে দিয়েছিল সেটা বের করাটাই সবার আগে দরকারি বলে মনে করা হচ্ছে। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার পিছনে পাকিস্তানের কী ভূমিকা ছিল তাও জানার জন্য মাওলায়ি ফারুকি-কে জেরা করবে আফগান জাতীয় সুরক্ষা দপ্তর।