সংক্ষিপ্ত
আমেরিকার চাপানো নতুন নিষেধাজ্ঞায় প্রবল ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়া। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যে সমঝোতা শুরু করেছিল পিয়ং ইয়াং- তা আর বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যেতে রাজি নয় তারা। যদিও ২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকায় এই সমঝোতার মৃত্যু হয়েছে বলেই মত আন্তর্জাতিক মহলের।
ফের কোরিয়ান পেনিনসুলায় পরমাণু উত্তাপ (North Korea)। উত্তর কোরিয়া যে আর হাতে হাত ধরে ঠুঠো জগন্নাথ হতে নারাজ তার ইঙ্গিত মিলল বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল। কারণ আমেরিকার নিষেধাজ্ঞাকে আর সহ্য করতে রাজি নয় পিয়ং ইয়াং (North Korea Nuclear ICBM Test)। সেই কারণে নাকি ফের পরমাণু অস্ত্র ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল বা নিউক্লিয়ার আইসিবিএম পরীক্ষার পথে উত্তর কোরিয়া (North Korea May Restart Nuclear ICBM Test, Report From KCNA)। সরকারি সংবাদসংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি বা কেসিএনএ এর খবরে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। গত সপ্তাহেই আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন নতুন করে উত্তর কোরিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনকী, যাতে উত্তর কোরিয়ার উপরে আরও কিছু অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় তার জন্যও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে (UN Security Council) তারা দরবার করবে বলেও জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন (Joe Biden, President USA)। আর এতেই ক্ষিপ্ত এখন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং আন (Kim Jung Un, President, North Korea)।
উত্তর কোরিয়ার সংবাদসংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট কিম জং আন শাসকদল ওয়ার্কিং পার্টির পলিটব্যুরোর একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে হাজির সকল সদস্য আমেরিকার সঙ্গে সমঝোতার পথে দেশ কতটা লাভবান হয়েছে সেই বিষয়টিকে নতুন করে মূল্যায়ণের পক্ষে মত দেন। বৈঠকে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তীব্র রোষও ব্যক্ত করা হয়। এই পলিটব্যুরোই প্রেসিডেন্ট কিম জং আন-এর নেতৃত্বে উত্তর কোরিয়ার মিলিটারি পলিসি-কে তৈরি করে (Noth Korea Military Policy)। সুতরাং এই বৈঠকে হওয়া আলোচনা অতি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কেসিএনএ-আরও জানিয়েছে যে, বৈঠকে উপস্থিত সকল সদস্যই উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের সম্প্রসারণ এবং নতুন করে পরীক্ষা-নিরিক্ষার চালুর পক্ষেই মত দিয়েছে। কত দ্রুত এই পরমাণু পরীক্ষা চালু করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। কেসিএনএ-এর রিপোর্টে আপাতত প্রমাদ গুনছে আন্তর্জাতিক মহল (Nuclear ICBM Test)। একে চিন-তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। তার সঙ্গে জুড়েছে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা। সেখানে উত্তর কোরিয়ার পদক্ষেপ নতুন করে আরও আন্তর্জাতিক সমস্যা তৈরি করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে আমেরিকার নতুন করে নিষেধাজ্ঞাকে যে ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না তা বুঝিয়ে দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। এর ফল সে সুদূরপ্রসারি হবে তার ইঙ্গিতও দিয়েছিল পিয়ং ইয়াং। ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতার সূত্রে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া চেয়েছিল আমেরিকার আর্থিক অনুদান এবং সে দেশে ব্যবসা করার জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করা রয়েছে তা তুলে নিক ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। উল্টে ২০১৯ সালে আমেরিকা যখন পিয়ং ইয়াং-কে তাদের পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে তাদের বিশেষজ্ঞদের সামনে খুলে দিতে বলে, যাতে উত্তর কোরিয়া সত্যি সত্যি পরমাণু পরীক্ষা-নিরিক্ষা বন্ধ করেছে কি না তা খতিয়ে দেখা যায়। এতে ক্ষিপ্ত হন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং আন। আমেরিকার প্রস্তাবে সরাসরি না করে দিয়েছিল পিয়ং ইয়াং। এরপর থেকে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সমঝোতা চুক্তি। এরমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের পর জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েই উত্তর কোরিয়াকে হুঁশিয়ারি দেন। ফলে সমঝোতা চুক্তির যেটুকু অস্তিত্ব ছিল তার সবটাই শেষ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন--
USS Nevada: চিনের জন্য কড়া মার্কিনি দাওয়াই, গুয়ামে এল ইউএসএস নেভাডা
Kim Jong Un: নতুন বছরে অঙ্গীকার কিমের, অর্থনীতির ওপর সবথেকে বেশি জোর দেবে উত্তর কোরিয়া
Laughing Ban: ১০ দিনের জন্য 'হাসতে মানা', উত্তর কোরিয়ায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি