সংক্ষিপ্ত
আর্থিক সংকটের সঙ্গে এবার খাবারের সংকট পাকিস্তানে। এক মুঠো আটার জন্য জীবনের ঝুঁকি ঘুরছে সাধারণ মানুষ। চলছে মারামারি হুড়োহুড়ি।
পাকিস্তানে আর্থিক সংকট তুঙ্গে। খাবার সংকটও এতটাই বেড়েছে রাস্তাতেই খাবার বোঝাই ট্রাক থামিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সেগুলি নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তেমনই কতগুলি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা রীতিমত স্পষ্ট করে দিচ্ছে পাক নাগরিকদের করুণ অবস্থার কথা। আর্থিক সংকট আর মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করছে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। পাকিস্তান সরকারও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিশ্বের একাধিক সংস্থার কাছে সাহায্যের হাত পেতেছে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
সম্প্রতি পাকিস্তানের বেশ কিছু ভিডিো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাবার বোঝাই ট্রাক থামিয়ে দিয়েছে অভুক্ত জনতা। খাবার লুঠ করে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুটো রুটি তুলে দিতে তারা এই কাজ করছে। একজন নয়, শতশত মানুষ ট্রাক থামিয়ে আটা, ময়দার মত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী লুঠ করছে। খাবারের বস্তা ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিচ্ছে। দেখুন সেই ভিডিওঃ
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা গেছে খাবার জন্য চলন্ত ট্রাকের সামনে চলে এসেছিল একটি শিশু। কিন্তু জোরে দৌড়ানোর কারণে কোনও মতে শিশুটি প্রাণে রক্ষা পায়। যে নেটব্যবহারকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি পোস্ট করেছেন তিনি লিখেছেন, পাকিস্তানের বন্য দৃশ্য। একটি আটার জন্য রাস্তায় নেমে এসেছেন প্রচুর মানুষ। আর ট্রাকও এত জোর গতিতে যাচ্ছে যাতে যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আপনিও দেখুন ভিডিওটিঃ
শুধু পুরুষ বা শিশুরাই নয় মহিলারাও পথে নেমেছে খাবারের সন্ধানে। কারও কোলে রয়েছে শিশু। কেই আবার নিজেই গর্ভাবতী। পর্দাপ্রথা দুরে রেখে একমুঠো আটার জন্য রাস্তায় হাহাকার করছে পাকিস্তানের মহিলারা। প্রত্যেকের মুখেই উদ্বেগের ছাপ।
পাকিস্তানের খাদ্য দফতর জানিয়েছেন দেশে ময়দার তীব্র সংকট। ময়দা বা আটার মিলগুলি আর্থিক অনটকের কারণে প্রায় বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে। খাইবার , পাখতুনখোয়া, সিন্ধ, বেলুচিস্তান-সহ কয়েকটি এলাকায় রীতিমত বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। একাধিক জায়গায় খাবারের সন্ধানে মানুষ পদদলিত হয়ে মারা গেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাজারে ভিড় করে ভর্তুকির আটার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। দিনের অধিকাংশ সময়ই ভর্তুকির আটা সংগ্রহ করার জন্য খরচ করছে।
দেশের ক্রমবর্ধমান আর্থিক সংকটের মধ্যে গম ও আটার দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। জানুয়ারির রিপোর্ট অনুযায়ী করাচিতে এক কেজি গমের দাম ছিল ১৬০টাকা। সেখানে ইসলামাবাদ, পেশোয়ারে ১০ কেটি আটা বিক্রি হয়েছে ১৫০০ পাক- টাকায়।
শুধুমাত্র আটা বা ময়দা নয়, নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের দামও বেড়েছে হুহু করে। মাছ মাংস ,দুধ , তেল - সব কিছুরই দাম আকাশ ছোঁয়া। রোজা, ইফতারের মধ্যেই পাকিস্তানের খাবারের দেখা দেওয়ায় রীতিমত ক্ষোভ বাড়ছে সে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে।