Pakistan losing Control in Balochistan: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি জানিয়েছেন, বালুচিস্তান প্রদেশ রাতের দিকে নাকি আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে থাকছে না।

Pakistan losing Control in Balochistan: বালুচিস্তানের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ কর্তারা নিরাপত্তাবাহিনী ছাড়া বাইরেই যেতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। 

ঠিক কী বলেছেন তিনি?

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি জানিয়েছেন, বালুচিস্তান প্রদেশ রাতের দিকে নাকি আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে থাকছে না। মানে কোনও নিয়ন্ত্রণই আর নেই। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, উচ্চপদস্থ কর্তারা নিরাপত্তাবাহিনী ছাড়া বাইরেই যেতে পারছেন না। 

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বালুচ যোদ্ধারা
আসলে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বালুচ যোদ্ধারা বহু বছর ধরে এই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন দেশের দাবিতে তারা লড়াই করছে। বর্তমানে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বালুচ যোদ্ধারা এই সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বলেই মত অনেকের। গত ১৯৪৮ সালেম তাদের অনেকটা অঞ্চল পাকিস্তানের সঙ্গে জোরপূর্বক জুড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করে তারা স্বাধীনতা এবং সেই অঞ্চল পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। যেমন কয়লা, তামা, সোনা এবং প্রাকৃতিক গ্যাস। তবে, এই সম্পদের সুবিধা স্থানীয় জনগণ একেবারেই পাচ্ছে না।

বালুচ যোদ্ধাদের দখলে পাকিস্তান সরকারি ভবন

গত দুইদিন আগে বালুচিস্তান সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের উপর বালুচ যোদ্ধারা তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে। এর ফলে, পাকিস্তান রীতিমতো অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এই হামলায় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। এদিকে বালুচিস্তান প্রদেশের কালাত জেলার ম্যাঙ্গোচর শহরে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন এবং সামরিক ভবন বালুচ বিদ্রোহীরা দখল করে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান মুনিরের ভুল ধারণা

পাকিস্তানে ৯টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে ভারতের হামলার পর, পাকিস্তান বিপর্যস্ত! সেইসঙ্গে, আবার এখন অভ্যন্তরীণ সমস্যাও মোকাবেলা করতে হচ্ছে। ইসলামাবাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে বালুচিস্তান বেরিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে। এই বিষয়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি বলেছেন, ''পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ থেকে বালুচিস্তান অনেকটাই বেরিয়ে গেছে। মন্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয় ধরে গেছে। নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়া তারা রাত্রের দিকে আর বাইরে যেতে পারবেন না। সেনাপ্রধান আসিম মুনির ভুল করে মনে করছেন যে, বালুচিস্তানে মাত্র কয়েকজন বিদ্রোহী আছে।"

গত ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আব্বাসি। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, "বালুচিস্তানের অশান্তির জন্য ১,৫০০ জন দায়ী" বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আসিম মুনির বলেছেন। আসিম মুনির যাই বলুন না কেন, এটা তাঁর মতামত। আমি যা দেখেছি শুধু তাই বলছি।"

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসির সেই সাক্ষাৎকারটি ৫ মে সামনে এসেছিল। আর ঠিক ৬ মে, বালুচিস্তানের বোলান এবং কেচে বালুচ লিবারেশন আর্মি (BLA) দুটি আলাদা আলাদা হামলা চালিয়ে ১৪ জন পাকিস্তানি সেনাকে ঘায়েল করেছে।

বালুচ যোদ্ধাদের হাতে জাতীয় মহাসড়ক:

সশস্ত্র বালুচ বিদ্রোহীরা এই মুহূর্তে প্রধান মহাসড়ক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। তারা ইচ্ছামতো চেকপোস্ট তৈরি করেছে। এছাড়াও তারা ঘন্টার পর ঘন্টা শহরগুলিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখছে বলে জানা গেছে।

বালুচিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। "দশ প্রজন্মের সন্ত্রাসবাদীরাও বালুচিস্তান এবং পাকিস্তানের ক্ষতি করতে পারবে না" বলে তিনি সম্প্রতি একটি মন্তব্য করেছেন।

তবে গত মার্চ মাসে, ৩৮০ জন যাত্রী সহ জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে BLA অপহরণ করেছিল। সেই সময়, হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছিল, যাদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক এবং পাকিস্তানি সেনা উভয়ই ছিল। এরপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন গ্রিন বোলান শুরু করে। তাতে ৬৪ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বালুচ বিদ্রোহী বলে ইসলামাবাদ জানায়।

দুই দিক দিয়েই পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়ছে:
Balochistan Liberation Front (BLF) and Baloch Republican Army (BRA) এই দুটি বিদ্রোহী গ্রুপ বর্তমানে সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। একদিকে ভারতের চাপ, অন্যদিকে বালুচিস্তানের চাপে পাকিস্তান সরকার রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তান থেকেও পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়ছে।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।