ইমরান খানের লাহোরের বাসভবনের পাঁচিল ভেঙে ঢুকল পুলিশ, গ্রেফতার প্রায় ২০ জন পিটিআই কর্মী

শনিবার ফের উত্তাল লাহোর। একদিকে ইসলামাবাদের পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের কনভয়। অন্যদিকে তাঁর লাহোরের বাড়ির পাঁচিল ভেঙে ঢুকে পড়ে পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারাও। জানা যাচ্ছে শনিবার তোষাখানা মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে ইসলামাবাদ যাচ্ছিলেন ইমরান খান। পথে আচমকাই ইমারানের কনভয়ের একটি গাড়ি উলটে যায়। অন্যদিকে লাহোরের বাড়ি থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বেরোনোর পরই বাড়ির পাঁচিল ভেঙে ঢুকে পড়ে পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ২০ জন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) কর্মীকে। জানা যাচ্ছে ইমরানের বাড়ির চত্বরে দলীয় কর্মীদের শিবির তৈরি হয়েছিল। মূলত সেই শিবির উচ্ছেদের উদ্দেশ্যেই পুলিশের এই পদক্ষেপ। ইমরানের বাড়ির গেট ভেঙে ঢোকার আগে পুলিশ ঘোষণা করে,'১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এই আবহে আপনারা জমায়েত করবেন না।' এর পরই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ইমরানের বাড়ির দরজা।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিনি জানিয়েছেন,'জামান পার্কে আমার স্ত্রী বুশরা বিবি একা রয়েছেন। সে সময় পুলিশ ঢুকে পড়েছে। ঠিক কোন আইনে তাঁরা এসব করছে?' প্রসঙ্গত, বুধবার পাঞ্জাব রেঞ্জার্সের একটি একটি ইমরান খানের জামান পার্কের বাসভবনে পৌঁছয়। আদালতের নির্দেশ অনুসারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের উদ্দেশে তাঁর বাসভবনে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু সেখানেও পিটিআই কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ বেসগ পেতে হয় পুলিশকে। সমবেত ভিড়কে ঠেকাতে গোলাবর্ষণও করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য গতকালই ইমরান খা গ্রেফতার ইস্যুতে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল পিটিআই কর্মী সমর্থকরা। ঘটনায় আহত হয় প্রায় ৩৩ জন পুলিশ কর্মী। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয় একাধিক পিটিআই কর্মীকে। রাতভর ইমরান খানের বাসভবনের সামনে চলে পুলিশ বনাম পিটিআই সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধ। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস গুলি ছোড়ে পুলিশ। পালটা ঢিল ছুড়তে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা।

অন্যদিকে মঙ্গলবারই ইমরান খানের গ্রেফতারির পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়। খানের আইনজীবী মঙ্গলবার আবেদনটি দায়ের করেন এবং একই দিনে শুনানির জন্য একটি বেঞ্চের সামনে বিষয়টি ঠিক করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেন। আইএইচসি রেজিস্ট্রার অফিস অবশ্য আপত্তি তুলেছে যে পিটিশনে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর বায়োমেট্রিক যাচাইকরণ নেই। আইএইচসি প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক আপিল এই আপত্তিকে মান্যতা দেন।

এরই মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন ইসলামাবাদ পুলিশের 'আসল উদ্দেশ্য' তাঁকে গ্রেফতার করা নয়। বরং তাঁকে অপহরণ ও হত্যা করা। খানের এই অভিযোগের পরই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পিটিআই সমর্থকরা। লাহোরে তার জামান পার্কের বাসভবন রাতারাতি অবরোধ করেন তাঁরা। পুলিশ- পিটিআই সমর্থকদের খণ্ডযুদ্ধে কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় জামান পার্ক চত্ত্বর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ খান তার সমর্থকদের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানোর পর ইসলামাবাদ, পেশোয়ার, করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডি সহ পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।