বহুদিন বাদে ডুবোজাহাজ নিয়ে এমন খবর সামনে এসেছে যা স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে ফেলেছে মানুষকে। এই সময়ে মানুষের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে অ্যাডভেঞ্চারর শখ তৈরি হয়েছে। যার মওকা কিন্তু নিতে শুরু করেছ ধনকুবেরদের নিয়ন্ত্রিত সংস্থা।

পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। এখনও কোনও খোঁজ নেই পর্যটক সাবমেরিন টাইটানের। ১০০ বছর আগে আটলান্টিকে তলিয়ে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে মার্কিন মুলুকের সময় অনুযায়ী রবিবার ডুব দিয়েছিল টাইটান। কিন্তু, রবিবার রাতের পর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই ডুবোজাহাজটির। সাবমেরিনে মোট ৫ জন যাত্রী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত যা হিসাব পাওয়া যাচ্ছে তাতে ৭০ ঘণ্টার মতো অক্সিজেন সরবরাহের সুবিধা পাবে ডুবোজাহাজটিতে। এরমধ্যে মহাসাগরের গভীর থেকে উপরে ভেসে উঠতে না পারলে পরিণতি যে ভয়ঙ্কর হবে তা আশঙ্কা করাই যাচ্ছে।

নিখোঁজ সাবমেরিনের খোঁজে ইতিমধ্যেই একযোগে হাত মিলিয়ে কানাডা ও মার্কিন কোস্ট গার্ড। রবিবার যখন সাবমেরিনটি নিখোঁজ হয় তার আগে প্রায় পৌনে দুঘণ্টার সফর সম্পূর্ণ করে নিয়েছিল জলযানটি। ভারতীয় সময় সোমবার মাঝরাতেও আটলান্টিকের মাঝখানে গিয়ে তল্লাশি চালায় উপকূলরক্ষী বাহিনী। কিন্তু, কোনও চিহ্ন মেলেনি। যেন মনে হচ্ছে আশ্চর্যজনকভাবে সাবমেরিনটা উবে গিয়েছে।

Scroll to load tweet…

সাবমেরিনে যে সওয়ারিরা রয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম ব্রিটিশ বিলিওনিয়ার ও ব্যবসায়ী তথা আবিষ্কারক হ্যামিস হার্ডিং। ডুবোজাহাজটি আটলান্টিক সাগরের যেখানে ডুব দিয়েছিল সেটা নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জন উপকূলের ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ। সোমবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনও ডাকেন আমেরিকার উপকূল রক্ষী বাহিনীর রেয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের। সেখানে তিনি জানান, সাবমেরিনটিতে এখনও ৭০ ঘণ্টা থেকে ৯৬ ঘণ্টা থাকার মতো অক্সিজেন রয়েছে। যদিও, এই মুহূর্তে সময় গড়িয়েছে মঙ্গলবার দুপুরে। তার মানে এই সাংবাদিক বৈঠকের পর কেটে গিয়েছে আরও ২৪ ঘণ্টা। সুতরাং, টাইটান সাবমেরিনে অক্সিজেন সরবরাহের ঘণ্টা সংখ্যা কমে ৫০-এর নিচে নেমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

Scroll to load tweet…

টাইটান সাবমেরিনটির সাগর গভীরে যে পর্যটনের কাজে নিয়োজিত ছিল তা নিয়ন্ত্রণ করে ওসান গেট। তারা জানিয়েছে এই মুহূর্তে তারা শুধুমাত্র সাবমেরিনে থাকা ৫ জন এবং তাঁদের পরিবারের কথাই ভাবছে। অন্য কোনও বিষয়কে তারা গুরুত্ব দিতে রাজি নন। ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে আটলান্টিকে তলিয়ে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে মহাসাগরের গভীর অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ শুরু করেছিল ওসান গেট। এতে সাবমেরিন চালানোর পাইলট ছাড়াও, বায়োলজিস্ট এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা থাকেন। এর সঙ্গে এমন কিছু মানুষকে নেওয়া হত যারা অর্থের বিনিময়ে এই পর্যটনের মজা নিতে চাই তাদের। 

নিখোঁজ ডুবোজাহাজের সঙ্গে বিখ্যাত ব্রিটিশ বিলিওনিয়ার এবং ব্যবসায়ী হ্যামিশ হার্ডিং-এর কী যোগ, তা খোঁজ করতে গিয়ে জানা গিয়েছে তিনি এই অভিযানে একজন মিশন স্পেশালিস্ট হিসাবে কাজ করছিলেন। ব্যবসায়ী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্ডিং-এর অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হওয়ার কথা সকলেরই জানা। আর হার্ডিং-এর আগেও মহাসাগরের গভীরে প্রচুর অভিযান করেছেন। তিনি মহাসাগরের গভীর তলদেশ নিয়ে নিজে গবেষনাও করিছেলেন বলে জানা গিয়েছে। টাইটানিক-এর অবশইষ্ট ধ্বংসাবশেষ নিয়ে অন্য সব গবেষকদের মতো তাঁর নাকি কৌতুহল ছিল। মার্চ, ২০২১ সালে মহাসাগরের এতটা তল পর্যন্ত হার্ডিং এক অভিযান করেছিলেন যে তাঁকে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সম্মান দেয় এবং নতুন বিশ্ব রেকর্ডের অধিকারী বলেও চিহ্নিত করেছিল। ওসান গেট সম্প্রতি টাইটানিক-এর ধ্বংসাবশেষ নিয়ে একটি গবেষণাধর্মী রিপোর্ট সামনে আনে। তাতে ওসান গেট দাবি করেছিল যে আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে সমাধি নেওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ ক্রমশই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কারণ তাতে এমন এক ধরনের ব্যক্টেরিয়ার আক্রমণ ঘটেছে যে খুব শীর্ঘ্রই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ মহাসাগরের গভীরে ভ্যানিশ হয়ে যাবে। এরপর এই নিয়ে আটলান্টিকের গভীর টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ নিে গবেষণার কাজে আরও মাত্রা যোগ করতে উদ্যত হয়েছিল ওসান গেট।এই অভিযানের জন্য তৈরি করা হয় এক বিশেষ ধরনের ফাইবার সামবমেরিন। যা ওজনে হালকা এবং জলের প্রবল চাপ নিতে সমর্থ। কিন্তু, চাপ নিতে গিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল টাইটান ডুবোজাহাজ। তার খোঁজেই এখন লেগে রয়েছে সকলে।

আরও পড়ুন---
শুধু কি হিমশৈল নাকি টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পিছনে রযেছে অন্য কারণ, রহস্য বাড়ল নতুন গবেষণায়
Defence News: শত্রুর সাবমেরিন তছনছ করে দেবে, এমনই শক্তিশালী টর্পেডোর সফল পরীক্ষা- দেখুন ভিডিও
Pakistan - পাকিস্তানে ডুবোজাহাজ হানা, ভারতীয় নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাকিস্তানের