সংক্ষিপ্ত

  • বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সংখ্যা ক্রমশই উর্ধ্বমুখী
  • নানা কারণে এই সব সম্পর্ক হয়ে থাকে
  • এর জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ছে বিবাহের সম্পর্ক
  • এমন এক পরিস্থিতিতে এক গৃহবধূ যা বললেন তা ভেবে দেখার আছে

লাভ-সেক্... অ্যান্ড ধোকা। এটা এখন আপ্তবাক্যে পরিণত হয়েছে। আমাদের সমাজজীবনে যতই কসমোপলিটন কালচারের প্রভাব বাড়ছে ঠিক তেমনি বেড়ে চলেছে এই প্রবণতা। সমাজের এই ঝোঁকে সমানভাবে প্রভাবিত বিবাহিত জীবনও। প্রায়শই সামনে আসে একের পর এক কাহিনি। যা সমাজের অন্ধকার দিককে তুলে ধরে। 

আরও পড়ুন- ভেঙেছে সম্পর্ক, তরুণীর আপত্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিল যুবক

কীভাবে বিবাহিত জীবনেও ঢুকছে ধোকা আর একাধিক সম্পর্কের রসায়ন তার উদাহরণ ভুরিভুরি। তবে, এমন এক জটিল সম্পর্কে জড়িয়েও অনেকে ফিরে আসেন সুস্থ-স্বাভাবিক সম্পর্কে। এর উদাহরণও রয়েছে। তবে এই ধরনের মানুষের সংখ্যা বড়ই কম। এমনই এক মানুষের সন্ধান মিলেছে অস্ট্রেলিয়ায়। এক গৃহবধূ জানিয়েছেন, কীভাবে তিনি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে পুরো ডুবে গিয়েছিলেন এবং ধোকা দিতে শুরু করেছিলেন স্বামী-কে। 

আরও পড়ুন- প্রেমিকের সঙ্গে দিঘায় গিয়ে রহস্যমৃত্যু গৃহবধূর, উদ্ধার চার বছরের ছেলে

নাইন হানি নামে এক পত্রিকা-কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে নাম-পরিচয় জানাতে অনিচ্ছুক ওই গৃহবধূ যে কাহিনি শুনিয়েছেন তাতে বাকরুদ্ধ হয়ে যেতে হয়। অস্ট্রেলিয় এই গৃহবধূ জানিয়েছেন, বিয়ের মাত্র চার মাস পরেই প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ফের সম্পর্কে জড়ান তিনি। এমনটা নয় যে তাঁর স্বামী তাঁকে বিবাহিত জীবনের কোনও সুখ থেকে বঞ্চিত রেখেছিলেন বা তৃপ্ত করতে পারছিলেন না। তবুও, প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডের একটা ফোনকল তাঁর মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। স্বামী জানতেন না এই সম্পর্কের কথা। দিনের পর দিন কাজে যাওয়া নাম করে বয়ফ্রেন্ডের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছেন তিনি। স্বামী-র ফোনেও সত্য কথা বলতে পারেননি ওই গৃহবধূ। সমানে দাবি করে যেতেন তিনি কর্মস্থলে ব্যস্ত রয়েছেন। পরে কথা বলবেন। 

আরও পড়ুন- বিয়ের আগে যৌন সম্পর্কে বিশ্বাসী নয় কত সংখ্যক মানুষ, সমীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

স্বামীকে রোজ রোজ মিথ্যা বলাটা তাঁকে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত করে তুলত। এক অদ্ভুত যন্ত্রণায় হৃদয় দুমড়ে-মুচড়ে যেত বলেও দাবি করেছেন ওই গৃহবধূ। এরপরও প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে যৌনখেলায় মেতে উঠতেন তিনি। প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড আবার ওই গৃহবধূর দাদা-র বন্ধু। গৃহবধূটি জানিয়েছেন, স্কুল জীবন থেকেই একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। ১০ বছর একটি সম্পর্কে থাকার পর বয়ফ্রেন্ড তাঁকে ত্যাগ করে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তিনি তখন বিভ্রান্ত। এমনই সময়ে দাদা-র এক বন্ধুর সঙ্গে তাঁর পরিচয়। যাকে বলে লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট। সম্পর্ক গড়ায় গভীরে। কিন্তু দাদা এই সম্পর্ক মেনে নেবে দেখে ওই গৃহবধূ সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর আর এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং তাঁকেই শেষমেশ বিয়ে করেন। 

দাদা-র বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ককে ভুলিয়ে নাকি দিয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু, বিবাহ জীবনের চারমাসে একটি ফোন তাঁকে ফের টেনে নিয়ে যায় পুরনো সম্পর্কের দিকে। গৃহবধূ জানিয়েছেন, দাদা-র  বন্ধুকে তিনি সোলমেট বলে মানতেন। ফলে সোলমেটের কাছ থেকে আসা ফোন তাঁর বিবাহিত জীবনের লক্ষণরেখাকেও চুরমার করে দিয়েছিল। 

গৃহবধূ ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, একদিন প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে যৌনসঙ্গমের পর তিনি শুয়েছিলেন। এমনই সময় দাদা-র ফোন পান তিনি। তাঁর দাদা নাকি জানতে পেরেছিলেন বোন স্বামী-কে ছেড়ে প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। গৃহবধূর বয়ানে, 'দাদা বারবার অনুরোধ করে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে স্বামীর কাছে ফিরে যেতে। ভুলে যেতে বলে পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ককে।'

দাদা-র উৎকন্ঠা শেষমেশ তাঁর মনের দরজা খুলে দেয়। বুঝতে পারেন কত বড় ভুল করছেন তিনি। মানসিক অবসাদের মধ্যেও পরকিয়া সম্পর্ক ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। প্রাক্তন প্রেমিককে জানিয়ে দেন, সব শেষ, আর কিছু হবে না। গৃহবধূর কথায়, এরপর বহু বছর কেটে গিয়েছে, তিনি বুঝতে পেরেছেন একজন বিবাহিত নারী একটা সংসার তৈরি করার পিছনে কতখানি ভূমিকা নেন। আর তাই তিনি স্বামীর বিশ্বাস ভাঙতে চান না। স্বামী-ও যদি তাঁর মতো এমন কাজ করে থাকেন তাহলে? গৃহবধূ-র কথায় স্বামী যাতে এমন কিছু না করেন তারজন্য বিশ্বাস রাখতে হবে। গৃহবধূর কথায়, এখন তিনি সুখে শান্তিতে-ই স্বামীর সঙ্গে ঘর সংসার করছেন। 

সেক্সুয়াল হেলথ অস্ট্রেলিয়া-র দেওয়া একটি পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে যে কীভাবে সে দেশে পরকিয়া সম্পর্ক বিস্তার লাভ করেছে। বলা হচ্ছে সে দেশের অন্তত ৬০শতাংশ পুরুষ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ৪৫ শতাংশ।