সংক্ষিপ্ত
জানেন কি, ভারতের বাইরে চিন এবং আফগানিস্তান সহ আরও বহু দেশে অতি সমাদরে সম্পন্ন হয় সিদ্ধি বিনায়কের পুজো? জেনে নিন গণেশের ভিন্ন ভিন্ন বৈশ্বিক রূপ আর নামের কথা।
ধুমধাম করে গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi 2023) পালিত হচ্ছে সারা ভারতে। কিন্তু জানেন কি, ভারতের বাইরে চিন এবং আফগানিস্তান সহ আরও বহু দেশে অতি সমাদরে সম্পন্ন হয় সিদ্ধি বিনায়কের পুজো? জেনে নিন গণেশের ভিন্ন ভিন্ন বৈশ্বিক রূপ আর নামের কথা।
কম্বোডিয়া (Cambodia)
ইতিহাসবিদদের মতে, ভারতে গণেশ দেবতার আরাধনা বিপুল আকারে ছড়িয়ে পড়ার বহুকাল আগে থেকেই কম্বোডিয়ায় পূজিত হতেন সিদ্ধি বিনায়ক। হাতির মাথা এবং মানুষের দেহ নিয়ে গড়া গণেশের এই রূপ দাঁড়ানো অবস্থায় পূজিত হতেন। সপ্তম শতাব্দীর পর থেকে তাঁকে প্রধান দেবতা হিসেবে পুজো করা হত।
থাইল্যান্ড (Thailand)
থাইল্যান্ডে গণপতিকে ফ্রা ফিকানেট বা ফ্রা ফিকানেসুয়ান নামে। সৌভাগ্য এবং সাফল্যের দেবতা হিসেবে তাঁকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে পুজো করেন থাইল্যান্ডবাসী। সেই দেশেও তাঁর মূর্তি শুঁড়বিশিষ্ট হাতির মাথাযুক্ত মানব দেশের সদৃশ। ব্যবসায়ীরা ভালো লাভ করতে পারলে গণপতির পায়ে সোনা, মিষ্টি, ইত্যাদি নৈবেদ্য দিয়ে পুজো করেন।
চিন (China)
চিন দেশে ভগবান মঙ্গলমূর্তির একটি অতি প্রাচীন মূর্তি পাওয়া গেছে, যার গায়ে সময়কাল খোদাই করা রয়েছে, 531 CE (৫৩১ সাল)। তুং হুয়াং এবং কুং হসিয়েনের দুটি মন্দিরে শ্রী গণেশের দুটি পাথর-কাটা মূর্তি পাওয়া গেছে। যদিও, চিন দেশে অনেকে ভগবান গণেশকে নেতিবাচক চরিত্র হিসেবে বিবেচনা করেন। কিন্তু, সেই দেশের অনেক ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, কুখ্যাত জুয়াড়ি বা অর্থশালী ব্যক্তিরা দেবতা গণেশের পায়ে পুজো অর্পণ করে থাকেন।
জাপান (Japan)
চিন এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার পর অষ্টম শতাব্দীতে গণেশের পুজো জাপান দেশে পৌঁছে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়। সেই দেশে বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে গণেশের পুজো এবং তাঁকে ‘কাঙ্গিতেন’ নামে শ্রদ্ধা করা হয়। এই কাঙ্গিতেনের রূপ কিন্তু অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এখানে গণেশের দুটি শরীর একে অপরকে আলিঙ্গন করে থাকে। দুটি শরীরে দুটি হাতির মাথা থাকে। এখানে একটি শরীর পুরুষ এবং আরেকটি শরীর নারীর হয়ে থাকে। এরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে থাকে। এই মূর্তিটিকে ব্যাপক সৌভাগ্য বহনকারী বলে মনে করেন জাপানের মানুষ।
আফগানিস্তান (Afghanistan)
আফগানিস্তানের কাবুলের কাছে গার্ডেজে সিদ্ধি দেবতার একটি মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছিল যা খিংগাল নামের একজন রাজা উৎসর্গ করেছিলেন বলে জানা যায়। ৭-৮ শতাব্দীতে তুর্কিদের সময়কালে গার্ডেজের এই গণেশ মূর্তি ভারত আফগানিস্তানের মধ্যে সুসম্পর্ক বহন করত বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।
তিব্বত (Tibet)
তিব্বতের পৌরাণিক ইতিহাসেও ভগবান গণেশ অত্যন্ত সমাদৃত। কথিত আছে যে, বৌদ্ধ ধর্মের শাক্য পণ্ডিতের এক বংশধরকে ভগবান গণেশ সাহায্য করেছিলেন। তিনি নিজের শুঁড়ে তুলে ধরে শাক্য পণ্ডিতের ভাইকে হিমালয়ের চূড়ায় নামিয়ে দিয়েছিলেন এবং আশীর্বাদ করেছিলেন যে, ‘একদিন তিব্বতের সমস্ত প্রদেশ তোমার দ্বারা শাসিত হবে।’ বৌদ্ধ ধর্মীয়রা শ্রী গণেশকে খুবই সম্মান করে থাকেন।
আরও পড়ুন-
Ganesh Puja: ভগবান গণেশের সঙ্গে দেখা করতে আসেন দেবী গৌরী, এই 'গৌরী'-কে পশ্চিমবঙ্গে কোন রূপে পুজো করা হয়?
Ganesh Chaturthi: একটি নয়, একসঙ্গে দু'জন স্ত্রীয়ের পতিদেব হলেন ভগবান শ্রী গণেশ, এর নেপথ্যে পৌরাণিক কাহিনী জানেন কি?
Ganesh Puja: ভগবান গণেশের সঙ্গে লাল রঙের সম্পর্ক কী? জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
সংসারে সমৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য গণেশের মূর্তি রাখেন অনেকেই, কিন্তু সিদ্ধিদাতাকে ঠিক কীভাবে রাখলে তবেই ফিরবে সৌভাগ্য?