ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শনিবার গাজা ও মিশরের মধ্যবর্তী রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত' বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।   হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি পণবন্দিদের মৃতদেহ হস্তান্তরের বিষয়টিকে সরাসরি যুক্ত করেছেন। 

অক্টোবরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইজরায়েলের সেনাবাহিনী ৪৭ বার তা লঙ্ঘন করেছে, যার ফলে ৩৮ জন নিহত ও ১৪৩ জন আহত হয়েছে বলে প্যালেস্টাইনের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে। আল জাজিরা এই খবর দিয়েছে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইজরায়েল আর প্যালেস্টাইনের মধ্যে এই সংঘাত শুরু হয়েছিল। যার ফলও মারাত্মক। গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানে কমপক্ষে ৬৮,১১৬ জন নিহত এবং ১৭০,২০০ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ৭ অক্টোবরের হামলায় ইজরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২০০ জনকে পণবন্দি করা হয়।

রাফাহ ক্রসিং বন্ধ

দুই দেশের এই যুদ্ধে হতাহত ও উত্তেজনার মধ্যে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শনিবার গাজা ও মিশরের মধ্যবর্তী রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত' বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি এই বন্ধের কারণ হিসেবে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি পণবন্দিদের মৃতদেহ হস্তান্তরের বিষয়টিকে সরাসরি যুক্ত করেছেন। রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং ছিল গাজা থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ যা সরাসরি ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণে ছিল না, যা এই অবরুদ্ধ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ও লজিস্টিক লাইফলাইন ছিল। এই রাফাই ক্রসিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গোটা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অঞ্চলের জটিল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে তুলে ধরে।

নেতানিয়াহুর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অনুসারে, 'প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নির্দেশ দিয়েছেন যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খোলা হবে না। হামাস মৃত পণবন্দিদের ফিরিয়ে দেওয়ার এবং সম্মত কাঠামো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদের অংশ কীভাবে পালন করে তার উপর ভিত্তি করে এটি খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।'

হামাস আরও দুজন পণবন্দির মৃতদেহ ইজরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছে। ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (IDF) নিশ্চিত করেছে যে কফিনগুলো রেড ক্রসের হেফাজতে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং গাজায় থাকা ইজরায়েল কর্মীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। আইডিএফ আরও যোগ করেছে যে চুক্তি অনুযায়ী হামাসকে বাকি সব পণবন্দিদের ফিরিয়ে দিতে হবে, যা যুদ্ধবিরতি মেনে চলার বিষয়ে চলমান উত্তেজনাকে স্পষ্ট করে।

এর আগে, কায়রোতে প্যালেস্টাইনের দূতাবাস ঘোষণা করেছিল যে মিশরীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের পর ২০ অক্টোবর, সোমবার রাফাহ ক্রসিং পুনরায় খোলা হবে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল মিশরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি নাগরিকদের গাজা উপত্যকায় ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া। দূতাবাস আরও জানায় যে জমায়েতের স্থান এবং যাত্রার সময় সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের জানানো হবে। এদিকে, হামাস নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি 'নস্যাৎ করার জন্য দুর্বল অজুহাত' ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। একই সময়ে, তেল আবিবে বিক্ষোভকারীরা গাজা থেকে সমস্ত দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার দাবিতে সমাবেশ করেছে।