সংক্ষিপ্ত

জলবায়ু ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রভাব। দ্রুত শুকিয়ে যাবে গঙ্গা-সুন্ধু-ব্রহ্মপুত্র। ধ্বংস হবে সুন্দরবনের বড় অংশ। সতর্ক করল রাষ্ট্র সংঘ।

 

শুকিয়ে যাবে গঙ্গা। শুধু গঙ্গা নয় , হিমলয়ের বরফ গলা জলে পুষ্ট সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্রর মত বিশাল বিশাল নদ-নদীগুলি। আশঙ্কার কথা শোনালেন রাষ্ট্র সংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে সতর্ক করলেন বিশ্ববাসীকে। বুধবার আন্তর্জাতিক হিমবাহ সংরক্ষণ দিবসের অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন। গঙ্গা সিন্ধু আর ব্রহ্মপুত্রর জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করল রাষ্ট্র সংঘ। হিমালয়ের বরফগলা জলে পুষ্ট নদীগুলির প্রবাহ ক্রমশই হ্রাস পাবে।

অ্যান্তোনিও গুরেতেস বলেন, হিমবাহগুলি বিশ্বর মানুষ-সহ যে কোনও জীবনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বহু শতাব্দী ধরেই এগুলি বিশ্বের ল্যান্ডমার্ক। হিমবাহের নদীগুলি বিশ্বের ১০ শতাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে। হিমবাহগুলিকে গোটা বিশ্বের মিষ্টি জলের টাওয়ার হিসেবেও চিহ্নিত করেন তিনি। বলেন আজ গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য এগুলি বিপন্ন। কিন্তু সম্প্রতি হিমবাহগুলি দ্রুত জলে যাচ্ছে। হারাতে বসেছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তিনি আরও বলেন মানুষের কাজকর্মই গ্রহের তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে তুলেছে।

অ্যান্টাটিকায় প্রতি বছর গড়ে ১৫০ বিলিয়ন টন বরফ গলে যাচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থা আরও সঙ্গীন। কারণ এখানে প্রতি বছর ২৭০ বিলিয়ন টন বরফ গলে যাচ্ছে। যা গোটা বিশ্বের জন্যই যথেষ্ট আশঙ্কাজনক।

এশিয়ার হিমালয় অঞ্চলের ১০টি নদী রয়েছে, যা ভারত ও আশপাশের দেশগুলির জন্য গুরুত্বূপূর্ণ। এই নদীগুলির জলের ওপর নির্ভর ১৩০ কোটিরও বেশি মানুষ নির্ভরশীল। কারণ এই নদীগুলি একমাত্র মিষ্টি জলের উৎস। আগামী কয়ের দশকের মধ্যে হিমবাহ ও বরফের শিটগুলি এত দ্রুত গলে যাবে যে সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের মত বড় নদ-নদীগুলির প্রবাহের ওপর তার প্রভাব পড়বে। গুতেরেস কথা প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন হিমালয়ে হিমবাহ গলে যাওয়ার ফল হাতেনাতে পেয়েছে পাকিস্তান।কারণ সেখানে গতবছরই ভয়ঙ্কর বন্যা হয়েছিল, যা গোটা দেশের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। তিনি আরও বলেছেন হিমালয়ের হিমবাহ যদি এই হারে গলে যায় তাহলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বিশ্বের বিশাল ব-দ্বীপ অর্থাৎ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অংশ।

রাষ্ট্র সংঘের ওয়াটার কনফারেন্সের অধীনেই একটি ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই হিমবাহ নিয়ে ভয়ঙ্কর আশঙ্কার কথা শোনালেন গুতেরেস। রাষ্ট্র সংঘরের সদর দফতরেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাজিকিস্তান ও নেদারল্যান্ড-সহ আয়োজন দেশগুলি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল। এই অনুষ্ঠানেই গুতেরেস, ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের কথ্য উদ্ধৃত করেছেন। বলেছেন সংস্থা আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ে। সংস্থা জানিয়েছিল , হিমবাহ গলে যাওয়ায় দ্রুত বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা। যা সমুদ্র পৃষ্ঠ বা তার থেকে নিচু এলাকার মানুষের জন্য বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করতে।।

গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তনের সবথেকে খারাপ প্রভাবগুলি এড়াতে বিশ্ব উন্নয়নকে ১.৫ ডিগ্রির কমিয়ে আসার জন্য বার্তা দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। বলেছেন এটির ওপরই সবথেকে বেশি জোর দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্বের সবদেশগুলিকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমানোর কথাও বলেছেন।

আরও পড়ুনঃ

'সব চোরেদের পদবী মোদী', মন্তব্যের জন্য রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করল গুজরাটের আদালত

কংগ্রেসের বিক্ষোভে 'সক্রিয়' সিবিআই, ৪ মাস হাতগুটিয়ে থাকার পরে ইন্টারপোলকে মেহুল চোকসির নামে নোটিশ

মোদীর সঙ্গে ফুচকা খেলেন রসিয়ে , ২৭ ঘণ্টার ভারত সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা