নেপালে সরকারি দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে 'জেন জেড' বিক্ষোভ। উত্তাল কাঠমাণ্ডু। একজন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্য়া শতাধিক। 

সোমবার নেপালে সরকারি দুর্নীতি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে, বিশেষ করে কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বের এবং ঝাপা জেলার দমকে বিক্ষোভ মাত্রা ছাড়িয়েছে। 'জেন জেড' বিক্ষোভে একজন বিক্ষোভকারী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে পুলিশের গুলিতে। এমনটাই জানিয়েছে দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে। দ্য হিমালয়ান টাইমসের মতে, নিউ বানেশ্বরে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া একজন বিক্ষোভকারীকে সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তির পরিচয় এখনও অজানা।

দমকে মাত্রা ছা়ড়ায় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা দমক চকে থেকে পৌর অফিসের দিকে মিছিল করে, যেখানে তারা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পুতুল দাহ করে এবং অফিসের গেট ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে, একজন বিক্ষোভকারীকে গুরুতরভাবে আহত করে, দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, যা এলাকায় উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।

বিক্ষোভকারীদের পুলিশের দিকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তেও দেখা গেছে, যারা রাস্তার এক কোণে পিছু হটে, জড়ো হয়ে এবং দাঙ্গা ঢাল ব্যবহার করে আসা প্রজেক্টাইল থেকে নিজেদের রক্ষা করে। নিউ বানেশ্বরে বিক্ষোভ কভার করার সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এবং আলোকচিত্রীও আহত হন।

তাদের মধ্যে নয়া পত্রিকার দিপেন্দ্র ধুঙ্গানা, নেপাল প্রেসের উমেশ কার্কি এবং কান্তিপুর টেলিভিশনের শ্যাম শ্রেষ্ঠ রয়েছেন, যারা সবাই রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হন এবং সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, দ্য হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে। উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার পরপরই নেপালি সেনাবাহিনীকেও নিউ বানেশ্বরে মোতায়েন করা হয়েছে।

শান্তিপূর্ণ মিছিল হিসেবে শুরু হওয়া বিক্ষোভটি তখনই তীব্র আকার ধারণ করে যখন বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টের কাছে নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করে। বিক্ষোভকারীরা গাছের ডালপালা এবং পানির বোতল ছুঁড়ে মারে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়, কিছু বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট চত্বরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে, এরপর পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেয়।

অশান্তির প্রতিক্রিয়ায়, কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস রাজধানীর বাनेশ্বর এলাকায় আরোপিত কারফিউ বাড়িয়েছে। নতুন কারফিউতে এখন বেশ কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন রাষ্ট্রপতির বাসভবন (শীতল নিবাস), লাইনচৌরে উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, মহারাজগঞ্জ, সিংহ দরবারের চারপাশ, বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সংলগ্ন এলাকা, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে।

জেলা প্রশাসক ছবিলাল রিজাল স্থানীয় প্রশাসন আইনের ধারা ৬ এর অধীনে কারফিউ জারির আদেশ দিয়েছেন এবং এটি দুপুর ১২:৩০ থেকে রাত ১০:০০ টা (স্থানীয় সময়) পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

এই অঞ্চলগুলিতে জনসাধারণের চলাচল, সমাবেশ, বিক্ষোভ বা ঘেরাও কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।