Pahalgam attack: পহেলগাঁও কাণ্ডের পর জয়শঙ্কর এবং শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কথা বললেন গুতেরেস। জঙ্গিদের নিন্দা করায় গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান জয়শঙ্কর, অন্যদিকে ভারতের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন শাহবাজ।
Pahalgam attack: পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কথা বললেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়া গুতেরেস।
মঙ্গলবার দুই দেশের দুই সরকারের দুই শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধির সঙ্গে গুতেরেসের কী কথা হয়েছে, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে তা জানায়নি রাষ্ট্রপুঞ্জ। তবে, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধানের সঙ্গে ঠিক কী কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল সকলের মনে। এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিশেষ মন্তব্য করলেন জয়শঙ্কর, শাহবাজ দুজনে।
পহেলগাঁও কাণ্ডে জঙ্গিদের নিন্দা করায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান জয়শঙ্কর। অন্যদিকে, ভারতের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন শাহবাজ। এই দাবিতে গুতেরেসের কাছে নয়াদিল্লির নামে নালিশ ঠুকেছেন শাহবাজ। সঙ্গে আর্জি করেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব মেনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।
জয়শঙ্কর সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের ফোন পেয়েছি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই জঙ্গি হামলার নেপথ্যে যে ষড়যন্ত্রকারীরা আছে, তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে ভারত।’ কারও নাম না করলেও মনে করা হচ্ছে যে ইসলামাবাদকেই নিশানা করেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
অন্যদিকে গুতেরেসের সঙ্গে কথা বলার পর পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ লেখেন, ‘আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের সঙ্গে কথা হল। আমি জানালাম যে, পাকিস্তান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগকে খারিজ করলাম।’

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর কূটনৈতিক ভাবে কোণঠাসা পাকিস্তান। তারা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। শাহবাজ বলেন, ‘আমি পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের কথা জানিয়েছি। জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে নিরাপত্তা পরিষগের প্রস্তাব মেনে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি রাষ্ট্রপুঞ্জকে। … পাকিস্তান শাস্তির পক্ষে। কিন্তু সে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হলে তার জবাব দেওয়া হবে।’ এই বলে তিনি ভারতের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ছিল সেই ভয়ঙ্কর দিন। যেদিন জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত হন ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন যে, জঙ্গিরা ধর্ম জেনে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করে জঙ্গিরা। এই পেহলগাঁও কাণ্ডে লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায়ি বলে অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে এখনও চলছে তদন্ত।সেনা সদস্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ দল তদন্ত করে চলেছে।
আবার জানা গিয়েছে, ২২ এপ্রিল হামলার ঠিক আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করেছিল জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছিল কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা। ২২ এপ্রিল দুপুরে ৫-৬ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়েছিল। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল। তাতে মৃত্যু হয় ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন স্থানীয়ের। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকে। পরে তারা সুস্থ আছেন বলে জানা যায়।

সেদিন কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা উপস্থিত ছিলেন কর্নাটকের একটি পরিবার। জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় মঞ্জুনাথ রাওয়ের। জঙ্গিদের একজন মঞ্জুনাথ রাওয়ের স্ত্রী পল্লবীকে বলে ‘তোকে মারব না। যা মোদীকে গিয়ে বল।’এই হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া মহিলা পর্যটক জানিয়েছিল যে, ‘বন্ধুকধারীরা তার হাতে বিয়ের চুড়া দেখে তার কাছে আসে, সন্দেহ করে যে তারা হিন্দু।’ আবার অন্য একজন বলেন, তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর দেখে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে আগে তারাও দাবি করেছিলেন যে, পুরুষদের প্যান্ট খুলতে বলা হয়েছিল এবং তারা হিন্দু কিনা সে বিশ্বাস নিশ্চিত করার জন্য পুরুষদের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপর এই বিষয় নিশ্চিত করল তদন্তকারী আধিকারিকরা। কারণ প্রায় ২০ জনের গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করেছিল বলে দাবি করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। সব মিলিয়ে এখনও চারিদির উত্তাল এই ঘটনা নিয়ে। এভাবে পর্যটকদের ওপর হামলা আতঙ্ক তৈরি করেছে সাধারণের মনে।


