আমেরিকার ২০২৫ সালের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক প্রতিবেদন বলছে, আইসিস এবং আল-কায়েদা বিকেন্দ্রীভূত ষড়যন্ত্রের মডেল গ্রহণ করে আফ্রিকা এবং এশিয়ায় তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। জানুন কীভাবে এটি ভারত, আমেরিকা এবং মিত্র দেশগুলির জন্য ক্রমশ ঝুঁকি বাড়াচ্ছে
US Terrorism Report 2025: আমেরিকা ২০২৫ সালের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে আইসিস (ISIS) এবং আল-কায়েদা (Al-Qaeda) সম্পর্কিত হুমকির নতুন ধরন চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি বিকেন্দ্রীভূত ষড়যন্ত্রমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে যার ফলে তারা এখন আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যে নতুন ঘাঁটি তৈরি করে বিশ্বব্যাপী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আফ্রিকা নতুন সন্ত্রাসবাদী কেন্দ্র
প্রতিবেদন অনুসারে, আফ্রিকা ২০২৫ সালে জঙ্গি কার্যকলাপের সবচেয়ে সক্রিয় কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আল-কায়েদা এবং আইসিসের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং সম্পদশালী সহযোগীরা এখন এখান থেকেই তাদের অভিযান পরিচালনা করছে। সোমালিয়ায় আল-শাবাব (Al-Shabaab) এবং পশ্চিম আফ্রিকায় আইসিসের সাথে যুক্ত গোষ্ঠী আমেরিকান সেনাবাহিনী এবং তাদের সহযোগীদের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আইসিস: মধ্য প্রাচ্য থেকে আফ্রিকা এবং এশিয়ায় বিস্তার
আইসিস ২০২৪ সালে সিরিয়া এবং ইরাকে নেতৃত্বের ক্ষতির পর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তার নেটওয়ার্ককে সক্রিয় করেছে। আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে আইসিস-খোরাসান (ISIS-K) এখন উচ্চ-প্রোফাইল বহিরাগত হামলার ক্ষমতা বিকাশ করছে, যেমনটি জানুয়ারিতে ইরানের করমন এবং মার্চে রাশিয়ার মস্কো হামলায় দেখা গেছে।
সোমালিয়ায় আইসিস বৈশ্বিক অপারেশনের কেন্দ্র হিসেবে রয়ে গেছে, যেখান থেকে তারা পশ্চিমা দেশগুলিতে হামলার ষড়যন্ত্র করছে। সাহেল এবং পশ্চিম আফ্রিকায় তার শাখাগুলি অস্ত্র এবং কৌশলের মাধ্যমে ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে।
আল-কায়েদা: নেতৃত্বের সংকট সত্ত্বেও ষড়যন্ত্র অব্যাহত
আল-কায়েদা এখনও আমেরিকা এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করছে। ২০২২ সালে আয়মান আল-জাওয়াহিরির মৃত্যুর পর থেকে সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তরাধিকারীর ঘোষণা দেয়নি, তবে ইরানে অবস্থানরত সাইফ আল-আদেল (Saif al-Adel)-কে সম্ভাব্য আমির হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আল-কায়েদা গাজায় ইজরায়েলি অভিযান এবং সিরিয়ায় আসাদ শাসনের পতনের সুযোগ নিয়ে তার প্রচার অভিযান জোরদার করছে। আল-শাবাবের মতো গোষ্ঠী এখন হুথি অস্ত্র সংগ্রহ করে সোমালিয়ায় হামলার পরিকল্পনা করছে।
এআই এবং ড্রোন প্রযুক্তিতে বাড়ছে ঝুঁকি
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে আইসিস এবং আল-কায়েদার মতো সংগঠনগুলি এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ড্রোন এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সন্ত্রাসবাদী ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের নিয়োগ, প্রচার এবং ষড়যন্ত্রের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে রয়ে গেছে।
ভারত এবং অন্যান্য দেশের জন্য কী ইঙ্গিত?
প্রতিবেদনে ভারতের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে আফ্রিকা, মধ্য প্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় আইসিস এবং আল-কায়েদার ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ভারতের মতো দেশগুলির জন্যও একটি বড় ঝুঁকি। বিশেষ করে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে আইসিস-খোরাসানের সক্রিয়তা ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলির জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে।


