সংক্ষিপ্ত
তৃণমূলে যোগ দিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব। ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন শিলচরের এই প্রাক্তন সাংসদ তিনি।
জল্পনাটা গতকাল রাত থেকেই শুরু হয়েছিল। আর সোমবার দুপুরের দিকে সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ তথা মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব। ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেন শিলচরের এই প্রাক্তন সাংসদ তিনি। অভিষেক ও তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর গলায় দলের উত্তরীয় পরিয়ে দেন অভিষেক। সূত্রের খবর, অসমে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাঁকে।
গতকাল রাতেই কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন সুস্মিতা। সেই সংক্ষিপ্ত চিঠির মাধ্যমেই নিজের দলত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, "তিন দশক ধরে কংগ্রেসে কাজ করতে পারার সুযোগ আমি উপভোগ করেছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে সুযোগ দিয়ে সাহায্য করার জন্য এবং পথ দেখানোর জন্য। আমার পাশে থাকার জন্য সতীর্থ ও দলের নেতা-মন্ত্রীদের ধন্যবাদ।" এবার পুরোপুরিভাবে নিজেকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে নতুন অধ্যায় শুরু করতে চান বলে চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- 'BJP গোল করে না, গোল খায়, ত্রিপুরা ইস্যুতে দিলীপকে পাল্টা তোপ ফিরহাদের
তবে কয়েকদিন আগেও ছবিটা অন্যরকম ছিল। রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ট সুস্মিতা দেব গত সপ্তাহেও দলের সব কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন। সংসদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীদের বিক্ষোভ থেকে শুরু করে সম্প্রতি দিল্লিতে নাবালিকা ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে যখন রাহুল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সুস্মিতা। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের ছবিও বদলে ফেলেছিলেন তিনি। পরে তার অ্যাকাউন্টও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় টুইটার।
এরপর আচমকা গতকাল সনিয়া গান্ধীকে চিঠি পাঠানোর পরই শুরু হয় জল্পনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ ধরে নিয়েছিলেন যে তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। আর তারপরই সেই জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে আজ বেলার দিকে ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ বৈঠকের পরই যোগ দেন তৃণমূলে। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার পর অসমেও নিজেদের জমি শক্ত করতে চাইছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, সেক্ষেত্রে সুস্মিতাকে সেখানে মুখ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ঘাসফুল শিবির। তাই সেখানে সুস্মিতাকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা, গাড়িতে লাগানো হল আগুন, চরম উত্তেজনা এলাকায়
একদিকে যেখানে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট করতে ব্যস্ত কংগ্রেস। বাদল অধিবেশনেও ঘনঘন বৈঠক করেছেন বিরোধী দলনেতারা। সেখানে কয়েকটি বৈঠকে যোগ দিলেও বেশিরভাগ বৈঠকই এড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল। যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছিলন, সঠিক সময়ে জানানো হয়নি। বোঝাপড়ার অসুবিধাতেই যোগ দিতে পারেননি তারা। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে সুস্মিতা দেব তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে যে এবার কি তবে জাতীয় রাজনীতিতেও দল ভাঙানোর খেলায় মেতেছে ঘাসফুল শিবির।